eibbuy.com
ফ্রিল্যান্সিং করবেন যেভাবে

বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং একটি অতিপরিচিত শব্দ। ফ্রিল্যান্সিং করে ক্যারিয়ার গড়ার প্রবনতা দিন দিন বেড়েই চলছে। এমন অনেক ছাত্র আছেন যারা পড়াশুনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করে নিজের পড়াশুনার খরচ এমনকি পরিবারের ভারও বহন করেন। একটা সময় ছিল বাংলাদেশে শুধু ছাত্ররাই ফ্রিল্যান্সিং করত। কিন্তু এখন অনেক চাকুরীজীবি বা ব্যবসায়ী আছেন যারা ফ্রিল্যান্সিং করেন।

আজ আমরা আলোচনা করব ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে। ফ্রিল্যান্সিং কি? কিভাবে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করবেন? ফ্রিল্যান্সিং করতে কি কি লাগে? কিভাবে একজন ভালো ফ্রিল্যান্সার হবেন? এসকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।

ফ্রিল্যান্সিং কি?

ফ্রিল্যান্সিং এর বাংলা হল মুক্তপেশা। সাধারনত কোনো চাকরি করলে সেটা কোনো প্রতিষ্ঠানের অধীনে থেকে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী কাজ করতে হয়। আর বেতন থাকে নির্দিষ্ট। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং হল নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করা। যখন ইচ্ছা তখন কাজ করবেন। ফ্রিল্যান্সিং করলে কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কাজ না করে একসাথে অনেক প্রতিষ্ঠানে বা একাধিক ব্যক্তির কাজ করা যায়। ফ্রিল্যান্সিং এর আয় নির্ভর করে কাজের ধরন এবং কি পরিমান কাজ করেন তার উপর।

উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী ফ্রিল্যান্সার শব্দের প্রথম ব্যবহার হয় Walter Scott এর লেখা এক বইতে। এক সময় এক ধরনের যোদ্ধা ছিল যারা অর্থের বিনিময়ে যেকোনো দলের হয়ে যুদ্ধ করত। তাদেরকে ফ্রিল্যান্সার বলা হত।

এখন ফ্রিল্যান্সার শব্দের ব্যবহারে একটু পরিবর্তন আসছে। যারা অনলাইনে অন্য কারও কাজ অর্থের বিনিময়ে করে দেয় তাদেরকেই এখন মূলত ফ্রিল্যান্সার বলা হয়।

ফ্রিল্যান্সিং এর কয়েকটি সাইট আছে। সেখানে কাজ পাওয়া যায়। অর্থাৎ সেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কাজ করানোর জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। ফ্রিল্যান্সাররা তাদের নির্দিষ্ট কাজ করে দেয় এবং তার বিনিময়ে টাকা নেয়। ফ্রিল্যান্সাররা সাধারনত যেসব কাজ করে থাকেন সেগুলোর তালিকা তুলে ধরলাম।

১. কন্টেন্ট ক্রিয়েশন।

কন্টেন্ট ক্রিয়েশন বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন কাজগুলোর মধ্যে একটি। ভিডিও তৈরি, ব্লগ লিখা, অডিও পডকাস্ট তৈরি করা। বর্তমানে প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ ইউটিউব এ ভিডিও দেখেন। বিভিন্ন পডকাস্ট শুনেন। আবার অনেক মানুষ তাদের রুটি রুজি করে থাকেন ইউটিউব চ্যানেল এর মাধ্যমে। নিজের ইউটিউব চ্যানেল বা ওয়েবসাইটে নিজের কন্টেন্ট থেকে টাকা আয় করা ছাড়াও অন্যের সাইটে নিজের কন্টেন্ট এর মাধ্যমে আয় করা যায়। অন্য কারও চ্যানেলের জন্য ভিডিও তৈরি করতে পারেন। এতে চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিক পাবেন।

২. গ্রাফিকস ডিজাইনিং

ফ্রিল্যান্সিং জগতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে গ্রাফিকস ডিজাইনিং অন্যতম। কোনো এডভার্টাইজমেন্ট তৈরি, পোস্টার, শুভেচ্ছা বার্তা বা ভিডিও কন্টেন্ট তৈরিতে গ্রাফিকস ডিজাইনিং প্রয়োজন। অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং এর জগতে গ্রাফিকস ডিজাইনের অনেক চাহিদা।

৩. কপি রাইটিং

কোনো ভিডিও বা অডিও এর কথা লিখা, কাগজে লিখা বা কোনো পিডিএফ ফাইলে অস্পষ্ট লিখাকে স্পষ্ট করে লিখা এসবই কপি রাইটিং এর আওতাভুক্ত। অনেক বড় বড় ফ্রিল্যান্সারদের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে এই কপি রাইটিং এর মাধ্যমে। কপি রাইটিং সহজ কিন্তু ধৈর্যের কাজ।

৪. ট্রান্সলেটিং

কোনো ভিডিও বা অডিও কন্টেন্ট এর ভাষা অনুবাদ করে দেওয়াই হল ট্রান্সলেটিং। ট্রান্সলেটিং এর কাজ করতে হলে খুব ভাল ভাষা দক্ষতা থাকতে হয়।

৫. ওয়েব ডিজাইনিং

কোনো ওয়েবসাইট ডিজাইন করাই হল ওয়েব ডিজাইনিং। ওয়েব ডিজাইনিং এর পারিশ্রমিক ভাল পাওয়া যায়।

৬. ওয়েব ডেভেলপিং

ডিজাইন অনুযায়ী ওয়েবসাইট তৈরি করা বা ওয়েবসাইটের কোনো কিছু ডেভেলাপ করা ওয়েব ডেভেলপিং এর কাজ। এই কাজেও ভাল পরিমান পারিশ্রমিক পাওয়া যায়।

৭. ডিজিটাল মার্কেটিং

ফ্রিল্যান্সিং জগতে বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন একটি হল ডিজিটাল মার্কেটিং। অনলাইনে পন্য বেচাকেনার পরিমান দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। সেই সাথে বেড়েছে অনলাইনে পন্যের মার্কেটিং এর। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং জানা লোকদের চাহিদাও বাড়ছে।

৮. ডাটা এন্ট্রি

৯. অনলাইন সাংবাদিকতা

১০. সফটওয়্যার ডেভেলপিং

১১. ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট

সাধারনত বিভিন্ন অফিসে নানা ধরনের কাজের জন্য এসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দেওয়া হয়। অনলাইনেও এসিস্ট্যান্ট এর প্রয়োজন পড়ে। এই মনে করুন আপনার একটি ফেসবুক পেইজ, গ্রুপ আছে। যা আপনি ব্যবসার কাজে ব্যবহার করেন। এই পেইজ বা গ্রুপ নিয়ন্ত্রন আপনি নিজে না করে অন্যকে টাকা দিয়ে করাতে পারেন। 

এরকম শুধু ফেইসবুক পেইজ, গ্রুপ নয় আরও অনেক ধরনের কাজ আছে যা অন্য একজনকে দিয়ে নিয়মিত ভাবে করানো যায়। এবং যারা এভাবে অনলাইনে কাউকে এসিস্ট করে তাদেরকে ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট বলে। ফ্রিল্যান্সিং জগতে ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট এর চাহিদা অনেক। ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে আপনাকে নানা রকমের কাজ করা লাগতে পারে। যার যেরকমের চাহিদা সে হিসেবে ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দিতে পারে। কেউ ইমেইল রিডার হিসেবে, ভিডিও ইডিটর হিসেবে, প্রুফ রিডার হিসেবে, ইত্যাদি অনেক কাজের জন্যই ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

১২. ডাটা এনালাইসিস

১৪. ভিডিও এডিটিং

ফ্রিল্যান্সিং দুনিয়ায় ভিডিও এডিটিং এর বাজার অনেক বড়। এবং সামনে যে আরও বড় হবে তা খুব সহজেই অনুমান করা যায়। ইউটিউবের ভিজিটর যে অনুপাতে বেড়ে চলছে তার লেখচিত্র দেখে বুঝাই যাচ্ছে ভিডিও কন্টেন্ট এর বাজার ভবিষ্যতে কত বড় হবে। ভিডিও কন্টেন্ট এর পরিধি বৃদ্ধি পেলে ভিডিও এডিটিং এর পরিধিও বৃদ্ধি পাবে এটাই স্বাভাবিক। অনেকেই নিজের ভিডিও নিজে এডিট না করে কোনো ফ্রিল্যান্সারকে দিয়ে এডিট করায়। 

তাই আপনি যদি ভিডিও এডিটিং নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে অবশ্যই ভিডিও এডিটিং ভালো করে শিখে নিতে হবে। 

১৫. বিজনেস এনালাইসিস ইত্যাদি

এগুলো ছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং এর আরও অন্যান্য অনেক কাজ আছে। তারপরও মূলত এগুলোই ফ্রিল্যান্সারেদের প্রধান কাজ।

 

কোথায় পাবেন ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ?

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য অনেকগুলো সাইট আছে। এগুলোকে মার্কেটপ্লেস বলে। যেমন….

১. upwork.com

২. freelancer.com

৩. fiverr.com

৪. guru.com

এরকম আরও অনেক মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়। ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে ভাল আইডিয়া পেতে এসব সাইটগুলোতে ঘুরে আসতে পারেন। সেখানে কাজের জন্য আবেদন করে অন্য প্রার্থীদের সাথে প্রতিদ্বন্দিতা করে কাজ পাওয়া যায়। এসব ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলো ফ্রিল্যান্সারদের থেকে বা যারা কাজ দেয় তাদের থেকে কমিশন নিয়ে থাকে। এবং এভাবেই তারা আয় করে থাকে।

 

ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন যেভাবে?

ফ্রিল্যান্সিং আলাদা করে শিখার কিছু নেই। আপনি যদি উপরে উল্লেখিত কাজগুলোর মধ্যে একটি কাজ ভালোভাবে জানেন তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। অর্থাৎ কোনো কাজ জানলে সেই কাজ নিয়ে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। এবার আসি এই কাজ ভালোভাবে শিখবেন কোথায়।

কাজ শিখার আগে সবগুলো কাজ সম্পর্কে ভাল আইডিয়া নিয়ে নিতে হবে। এবার কোন কাজে আপনার আগ্রহ সবচেয়ে বেশি তা বুঝে নিবেন। তারপর সে কাজ শিখে নিবেন। কাজ শিখার জন্য বিভিন্ন উপায় আছে। অনলাইন বা অফলাইনে অনেক কোর্স পাওয়া যায়। করে নিতে পারেন। ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখে কাজ শিখতে পারেন। যদি কোর্স করেন তাহলে কোর্স করার আগে ইউটিউব দেখে হালকা পাতলা শিখে নিবেন।

ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য বাংলাদেশে অনেক ভালো ইউটিউব চ্যানেল আছে। যেমন…

১. Freelancer nasim

২. Freelancing Care

৩. SoftTech-IT

৪. Procoder BD

৫. GrowBig

৬. Ahosan Uddin Noman

৭. StartBit

৮. khalid farhan

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে আপনি এইসব ইউটিউব চ্যানেল ঘুরে আসতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন কিভাবে?

আপনি যে কাজ করতে চান তা ভালোভাবে শিখার পর ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে গিয়ে কাজের জন্য আবেদন করবেন। প্রথম প্রথম আপনি কাজ পাবেন না। প্রথম প্রথম কাজ পেতে হলে আপনাকে কম টাকা দেয় এমন কাজ বেছে নিতে হবে। আর নিজের প্রোফাইল সুন্দর করে সাজাবেন। আপনার কাজের ধরন সম্পর্কে আপনার প্রোফাইলে স্পষ্ট আইডিয়া দিয়ে রাখবেন। খুব সুন্দর করে পোর্টফোলিও তৈরি করবেন। এরপর কয়েকদিনের মধ্যে আপনি কাজ পেয়ে যাবেন। কাজগুলো সুন্দর করে করবেন। আপনার গ্রাহকরা কাজের ভিত্তিতে আপনাকে রেটিং করবে। আপনার কাজের রিভিউ দিবে। ভাল রিভিউ পেলে আপনি আরও বেশি কাজ পাবেন। আর খারাপ রিভিউ পেলে এই রিভিউ দেখে আর কেউ আপনাকে কাজ দিবে না।

প্রথম প্রথম কাজ পেতে একটু সময় লাগতে পারে। তাই ধৈর্য হারাবেন না। লেগে থাকবেন। কাজ পাবেন।

 

ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় করা যায়?

ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় করবেন সেটা আপনার কাজের ধরন, অভিজ্ঞতা, এবং কাজের মানের উপর নির্ভর করে। প্রথমে হয়ত আপনি মাসে ১ থেকে ৩ হাজার টাকা আয় করবেন। ধীরে ধীরে আপনার মাসিক আয় বাড়বে। একটি জড়িপ অনুযায়ী ২৩% ফ্রিল্যান্সার প্রতি বছরে ৬০ লাখ টাকা বা তার বেশি আয় করে। এই ২৩% এর বেশিরভাগই ভারতীয়। আরও ২৩% ফ্রিল্যান্সারের বাৎসরিক আয় ২.৫ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা। বাকি ৫৪% ২.৫ লাখ টাকার কম আয় করে। আপনি কি কাজ করবেন, কেমন ভাবে কাজ করবেন তার উপর নির্ভর করবে আপনি কত টাকা আয় করবেন।

 

ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা উঠাবেন কিভাবে?

ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা উঠানোর অনেক পদ্বতি আছে। এই যেমন ধরুন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে, পেওনিয়ার, ওয়্যার ট্রান্সফার এর মাধ্যমে। টাকা উঠানোর জন্য নির্দিষ্ট মার্কেটপ্লেসের জন্য নির্দিষ্ট উপায় আছে। ব্যাংকের মাধ্যমে অনেকে টাকা ট্রান্সফার করে। অনেকে আবার পেওনিয়ার ব্যবহার করে থাকেন। যার যেভাবে সুবিধা হয় সে সেভাবে টাকা তুলে।

ফ্রিল্যান্সিং করে এর টাকা পাওয়ার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হল পেপাল। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত পেপাল আসেনি। তাই ফ্রিল্যান্সারগন পেপাল ব্যবহার করতে পারছেন না। তবে আশা করা যায় খুব শীঘ্রই পেপাল বাংলাদেশে চলে আসবে। 

 

ফ্রিল্যান্সিং আর আউটসোর্সিং

রাস্তাঘাটে বিভিন্ন পোস্টারে এরকমটি লেখা থাকে যে, “এখানে আউটসোর্সিং এবং ফ্রিল্যান্সিং শেখানো হয়”।

আসলে ফ্রিল্যান্সিং আর আউটসোর্সিং ভিন্ন দুইটি বিষয়। ফ্রিল্যান্সিং হল নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কোথাও কাজ করা। অপরদিকে আউটসোর্সিং হল নিজের কোনো কাজ অন্য কোনো ফ্রিল্যান্সার দিয়ে করানো। সহজেই বুঝা যায় দুইটি ভিন্ন বিষয়। আর আগেই বলেছি ফ্রিল্যান্সিং আলাদা করে শিখার তেমন কিছু নয়। তাই বিজ্ঞাপনের ফাদে পা দিয়ে টাকা অপচয় করবেন না।

শেয়ার ব্যবসা কি? কিভাবে করে?

 আর একটা কথা, অনেককেই দেখা যায় একমাত্র পেশা হিসেবে ফ্রিল্যান্সিংকে বেছে নেন। এটা করা একদম ঠিক না। ফ্রিল্যান্সিং এর উপর ভরসা না করে অন্য কাজের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করাটাই উত্তম।

আজকের আলোচনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

ধন্যবাদ।

বিস্তারিত
ট্রেড লাইসেন্স কি? কেন, কিভাবে ট্রেড লাইসেন্স করবেন?

ব্যবসা করতে গেলে সর্ব প্রথম যে কাগজপত্রের নাম আসে সেটা হল ট্রেড লাইসেন্স। এক কথায় ব্যবসার জন্য অনুমোদন পত্র হল ট্রেড লাইসেন্স। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করাটা আইনের দৃষ্টিতে দন্ডনীয় অপরাধ।

ট্রেড লাইসেন্স কি? কেন ট্রেড লাইসেন্স করবেন? কিভাবে ট্রেড লাইসেন্স করবেন? ট্রেড লাইসেন্সের বিভিন্ন নিয়ম কানুন এবং ট্রেড লাইসেন্সের খুটিনাটি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজ আলোচনা করব।

শুধুমাত্র আইনি জটিলতা এড়ানোর জন্য ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে বিষয়টা এমন না। ব্যবসা করতে গেলে ট্রেড লাইসেন্স এর নানা রকমের দরকার পরে। যেমন আপনি যদি পার্টনারশিপে ব্যবসা করেন তাহলে চুক্তিপত্র করতে দরকার হবে ট্রেড লাইসেন্স। ব্যবসার জন্য ব্যাংক লোন নিতে গেলে দরকার হবে ট্রেড লাইসেন্স। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে দরকার হবে ট্রেড লাইসেন্স। ব্যবসার কোনো কাজে বিদেশ যাবেন? দরকার হবে ট্রেড লাইসেন্স। সহজ কথায় ব্যবসার প্রায় প্রতিটি পদক্ষেপে দরকার হবে ট্রেড লাইসেন্সের। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করতে গেলে আপনার নামে মামলা হয়ে জেল জরিমানা পর্যন্ত হতে পারে। বৈধ যেকোনো ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স দরকার হবে। তবে বাংলাদেশে অনেক ব্যবসায়ীরা ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করে আসছেন। এটা একদম উচিত নয়।

 

ট্রেড লাইসেন্স কিভাবে করবেন?

ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি কর্পোরশন অফিস বা পৌরসভা অফিসে গিয়ে আপনি ট্রেড লাইসেন্স করবেন। ট্রেড লাইসেন্স করতে ট্রেড লাইসেন্স ফি বাবদ ২০০ টাকা থেকে ২৬হাজার টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে। ট্রেড লাইসেন্স ফি কত টাকা হবে সেটা মূলত নির্ভর করে কোন এলাকায় আপনি কোন ধরনের ব্যবসা করতে চান তার উপর। বিভিন্ন ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স ফি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। গ্রাম অঞ্চলে ট্রেড লাইসেন্স করতে কম টাকা শহরাঞ্চলে বেশি টাকা লাগে।

ট্রেড লাইসেন্স করতে গেলে মূল ফি এর সাথে কিছু অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। সেগুলো হল ভ্যাট (১৫%), লাইসেন্স বই মূল্য এবং সাইনবোর্ড চার্জ। লাইসেন্স বইয়ের মুল্য সাধারনত ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা হয়ে থাকে। সাধারনত ট্রেড লাইসেন্স করতে সব মিলিয়ে ৪৫০০ থেকে ৮০০০ টাকার মত লাগে (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে)

ট্রেড লাইসেন্স করতে কি কি লাগে?

১. নির্দিষ্ট ফরম পূরন করে জমা দিতে হয়।

২. যে যায়গায় আপনার দোকান, অফিস, কারখানা বা কার্যালয় থাকবে সেই জায়গা যদি আপনার নিজের হয় তাহলে ঐ জায়গার হোল্ডিং ট্যাক্সের কাগজপত্র। দোকান হলে ইউটিলিটি বিল লাগবে। আর যদি ঐ জায়গা ভাড়ার হয় তাহলে ৩০০ টাকার একটি স্ট্যাম্পে মালিকের সাথে ভাড়ার চুক্তিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি লাগবে।

৩. আবেদনকারীর ৩-৪ কপি ছবি। ছবি অবশ্যই পাসপোর্ট সাইজের হতে হবে।

৪. ব্যবসায় যদি কোনো অংশীদার বা পার্টনার থাকে তাহলে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অংশীদারত্বের চুক্তিনামা জমা দিতে হবে।

৫. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য উপরের সবকিছুর সাথে অতিরিক্ত যেসব জিনিসের দরকার হবে-

- পরিবেশ সংক্রান্ত অনাপত্তি পত্র।

- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থান চিহ্নিত ম্যাপ।

- ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

- ফায়ার সার্ভিসের অনাপত্তি পত্র।

- ডি সি সির নিয়ম কানুন মেনে চলা সংক্রান্ত অঙ্গিকারনামা। সেটি ১৫০ টাকার নির্দিষ্ট নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হবে।

৬. ফ্যাক্টরির জন্য অতিরিক্ত যা লাগবে-

- পরিবেশ সংক্রান্ত অনাপত্তি পত্র।

- ফ্যাক্টরির অবস্থান চিহ্নিত ম্যাপ।

- আশেপাশের জমি বা ভবন মালিকের অনাপত্তিপত্র।

­- ফায়ার সারভিসের অনাপত্তি পত্র।

৭. ক্লিনিক বা হাসপাতাল হলে স্বাস্থ অধিদপ্তরের অনুমতিপত্র।

 

সাধারনত ট্রেড লাইসেন্স করতে এইসব জিনিসের দরকার হবে। আরও কিছুর দরকার লাগতে পারে তবে সেটা ব্যবসার ধরনের উপর নির্ভরশীল।

পুরুষ মহিলা যে কেউ ট্রেড লাইসেন্স এর আবেদন করতে পারবে। তবে তার বয়স ১৮ বছর বা তারও অধিক হতে হবে। আর এক ব্যক্তি একাধিক ট্রেড লাইসেন্স করতে পারবে। এক ব্যক্তি একাধিক ঠিকানা ব্যবহার করে ট্রেড লাইসেন্স করতে পারবে। এই ট্রেড লাইসেন্স হস্তান্তর যোগ্য নয়। একটি ট্রেড লাইসেন্স একাধিক ব্যক্তি ব্যবহার করতে পারবে না।

এবার আসি ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ নিয়ে। একটি ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ ১ বছর হয়। ১ বছর পর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে কিছু টাকা নবায়ন ফি হিসেবে দিতে হয়। পুরোনো ট্রেড লাইসেন্স ব্যাংক লোন নিতে দরকার পরতে পারে। তাই প্রতি বছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করা উচিত।

এলসি কি? কেন, কিভাবে করবেন?

 

ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া টি আই এন (TIN) সার্টিফিকেট, ভ্যাট সার্টিফিকেট লাগবে। এগুলোর সম্পর্কেও এই ওয়েবসাইটে বিস্তারিত আলোচনা করা আছে। পড়ে আসতে পাড়েন।

শেয়ার ব্যবসা কি? কিভাবে করবেন?

আজকের আলোচনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।

ধন্যবাদ।

বিস্তারিত
অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া

অনলাইনে কি কি ব্যবসা করা যায়? কিভাবে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করব? অনলাইনে ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা পুঁজি দরকার হবে? অনেকেই এই প্রশ্নগুলো করে থাকেন। আবার অনেকেই অনলাইনে ব্যবসার জন্য ভাল আইডিয়া খুজে থাকেন।

আজ আমরা অনলাইনে করার জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করব। এর মধ্যে কয়েকটি বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। আর কয়েকটি অতটা জনপ্রিয় না হলেও বেশ সম্ভাবনাময়। পুরো আর্টিকেলটি মনযোগ দিয়ে পড়ার অনুরোধ রইল। নিচে অনলাইন ব্যবসার আইডিয়াগুলো তুলে ধরলাম।

 

১.অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অনলাইনে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটি জনপ্রিয় ব্যবসা। অন্য কোনো কোম্পানির পন্য আপনি নিজে মার্কেটিং করে বিক্রি করাবেন। এবং ঐ পন্য বিক্রি করে যে লাভ হবে সেই লাভের একটি অংশ কোম্পানি আপনাকে দিবে। এটাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এবার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর নিয়ম কানুন গুলো বলি।

এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পন্য অনলাইনে বিক্রি করে। অনলাইনে কাস্টমার পাওয়াটা বেশ কঠিন একটা বিষয়। যারা অনলাইনে পন্য বিক্রি করে তারা কাস্টমার পাওয়ার জন্য একটা পদ্ধতি অবলম্বন করে। সেটা হল অ্যাফিলিয়েট পার্টনার নিয়োগ দেওয়া। অ্যাফিলিয়েট পার্টনারদেরকে একটি লিংক দেওয়া হয়। এটাকে রেফারেল লিংক বলে। তারা ঐ পন্যের প্রচার করবে। কাস্টমারদেরকে এই লিংক দিয়ে পন্য কিনতে বলবে। যখন কাস্টমার ঐ লিঙ্ক থেকে পন্য কিনবে তখন কোম্পানি অ্যাফিলিয়েট পার্টনারকে লভ্যাংশ প্রদান করবে।

এখন কথা হল কোথায় আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুযোগ পাবেন।

অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান প্রায় সময় অ্যাফিলিয়েট পার্টনার নিয়োগ দেয়। বিশেষ করে অনলাইন শপগুলো এ ধরনের নিয়োগ দিয়ে থাকে। উন্নত রাষ্ট্রে আমাজনেও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুযোগ আছে। আশা করা যায় বাংলাদেশেও আমাজন ব্যবসা শুরু করলে এ সুবিধা পাওয়া যাবে।

তাছাড়া বিভিন্ন অনলাইন শপগুলোর ফেসবুক বা লিঙ্কড ইন ফলো করবেন। এতে আপনি সহজেই এ ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পেয়ে যাবেন।

 

২. ইউটিউব চ্যানেল

আপনি যদি সৃজনশীল হন তাহলে আপনার জন্য দারুন একটি আইডিয়া হল ইউটিউব চ্যানেল খোলা। এটি অনলাইন ব্যবসার জন্য ভাল একটি আইডিয়া। অনলাইনে ভিডিও দেখার পরিমানটা দিন দিন বেড়েই চলছে। মানুষ এখন তাদের যেকোনো সমস্যা নিয়ে ইউটিউবে সার্চ করে। ক্লাস করতে ব্যবহার করে ইউটিউব। এমনকি ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম জানতেও ইউটিউবে সার্চ করে। কেউ প্রয়োজনে কেউ অপ্রয়োজনে প্রায় প্রতিদিন ইউটিউব ব্যবহার করে থাকেন। কেউ ইউটিউবে ক্লাস করেন বা কোনো টিউটোরিয়াল দেখেন, কেউ ওয়াজ দেখেন, কেউ খবর দেখেন, কেউ নাটক সিনেমা দেখেন, কেউ কার্টুন আবার কেউ খেলা দেখেন। ইউটিউব কন্টেন্ট এর যেনো শেষ নেই। আপনি যেই বিষয়ে পারদর্শী সেই বিষয়ের উপরে ইউটিউব চ্যানেল খুলুন। ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেটা মনিটাইজ করে আয় করা শুরু করে দিতে পারেন। ইউটিউব চ্যানেল খোলা নিয়ে আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিস্তারিত লেখা আছে। পড়ার অনুরোধ রইল।

 

৩. ব্লগিং

অনলাইনে আয়ের জন্য ভাল একটি উপায় হল ব্লগিং। বিশেষ করে ছাত্রদের জন্য দারুন একটি আইডিয়া ব্লগিং। ইউটিউব চ্যানেলের মত আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সেই বিষয়ে ব্লগিং করবেন। বিশ্বের জনপ্রিয় অনলাইন ব্যবসাগুলোর মধ্যে ব্লগিং একটি। ব্লগিং করার জন্য বিষয় নির্বাচন গুরুত্বপুর্ন একটি বিষয়। ভাল বিষয় নির্বাচন না করার কারনে অনেকেই ব্লগিং শুরু করার এক বছরের মধ্যেই ব্লগিং ছেড়ে দেন। বর্তমানে ব্লগিং এর জন্য জনপ্রিয় বিষয়গুলো হল স্বাস্থ, শিক্ষা, টেকনোলোজি, ব্যবসা, ট্যুর গাইড, গল্প ইত্যাদি। বিষয় নির্বাচন করে আপনার ওয়েবসাইটের নাম নির্ধারন করবেন। এই নাম হতে হবে ইউনিক। নাম বাছাই করবেন ভাবনা চিন্তা করে। বিষয়ের সাথে নামের মিল রাখবেন। নামে কোনো সংখ্যা ব্যবহার করবেন না। এমন একটি নাম নির্বাচন করবেন যেটা শুনতে সহজ সরল কিন্তু অর্থবোধক।

ব্লগিং নিয়ে আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিস্তারিত দেওয়া আছে। চাইলে পড়ে আসতে পারেন। 

এই অনলাইন ব্যবসাটি করতে খুব কম টাকা পুজি লাগবে। ১৫০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। এবং মাসে ৫০০০ টাকা থেকে ৩০০০০ হাজার টাকা অনায়াসেই আয় করতে পারবেন। এই ব্যবসা থেকে আরও বেশি টাকা আয় করা যায় তবে সেটার জন্য আপনাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে।

 

৪.অনলাইন কোর্স তৈরি

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে অনেক আগে থেকে অনলাইন কোর্সের ব্যবসাটি জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বর্তমানে বাংলাদেশে জনপ্রিয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অনলাইন কোর্স ব্যবসাটি করে যাচ্ছে। যেমন টেন মিনিট স্কুল। তারা বিভিন্ন বিষয়ের উপর কোর্স তৈরি করে বিক্রি করছে।

বিভিন্ন বিষয়ে অনলাইন কোর্স তৈরি করে ব্যবসা করা যায়। বাংলাদেশে ইংরেজি ভাষা কোর্স, গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কোর্স, ব্যবসা প্রশিক্ষন বা কোনো পরিক্ষার প্রস্তুতির কোর্স হল জনপ্রিয়। আপনি এসব বিষয়ের উপর কোর্স তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন।

তবে এর জন্য আপনাকে ইউটিউবে এবং ফেসবুকে ঐ বিষয়ের উপর ভিডিও তৈরি করে নিয়মিত আপলোড দিতে হবে। এতে আপনার মার্কেটিং হবে। আবার ঐ ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক পেইজ যদি মনিটাইজ করা থাকে সেখানকার ভিউ থেকেও আয় করতে পারবেন।

এসব অনলাইন কোর্সের কাস্টমার পেতে আপনি ফেসবুক ইউটিউব সহ অন্যান্য সোশ্যাল সাইটে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারেন।

 

৫. অনলাইনে পন্য বিক্রি

মানুষ ধীরে ধীরে অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়ছে। কেনাকাটার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রচলনটা অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। অনলাইনে ব্যবসা শুরু করে এখন সফল ব্যবসায়ী এই রকম মানুষের সংখ্যাটা কম নয়। নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য থেকে শুরু করে বারান্দার জন্য গাছ সবকিছুর ব্যবসা এখন অনলাইনে জমজমাট। আপনি কেন বসে থাকবেন। আপনার বা কাছের পরিচিত কারও যদি অফলাইনে ব্যবসা থাকে তাহলে খুব সহজেই অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। অফলাইন ব্যবসা যদি নিজের না হয় তাহলে যার অফলাইন ব্যবসা তার সাথে চুক্তি করে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আর যদি আপনার অফলাইন ব্যবসা না থাকে তাহলেও অনলাইনে ব্যবসা করতে পারবেন তবে সেটা একটু চ্যালেঞ্জিং হবে।

যদি আপনার অফলাইনে ব্যবসা থাকে তাহলে অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে কোনো পুজি লাগবে না। কিন্তু শুধু অনলাইনে ব্যবসা শুরু করতে চাইলে কিছু টাকা পুজি লাগবে।

 

৬. ফ্রিল্যান্সিং

ফ্রিল্যান্সিংকে অনলাইন ব্যবসা বলা যাবে না। কারন ফ্রিল্যান্সিং কোনো ব্যবসা নয়। যারা ফ্রিল্যান্সিং করে তাদেরকে ফ্রিল্যান্সার বলে। সাধারনত আমারা যেমন দিনমজুর দেখি তারা সারাদিন কাজ করে এবং এর বিনিময়ে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা পায়। আবার অনেকে চুক্তিভিত্তিক কাজ করে। ফ্রিল্যান্সাররা এমনই। নির্দিষ্ট কাজের বদলে টাকা পায়। ফ্রিল্যান্সাররা কাজ হিসেবে কন্টেন্ট রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডেভেলপিং, ডাটা এন্ট্রি ইত্যাদি করে থাকে। দিনমজুররা যেমন যেদিন ইচ্ছে সেদিন কাজ করতে পারে ফ্রিল্যান্সাররা ঠিক এমনই। আপনি চাইলে কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে দিতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন।

 

 অনলাইনে ব্যবসা করব কেন?

বর্তমান পৃথিবীতে শুধু ব্যবসা নয় ছাত্রদের ক্লাস, পরিক্ষা থেকে শুরু করে মেডিকেল ট্রিটমেন্ট সবই অনলাইন নির্ভর। আপনার নিজের কথাই ধরুন। অনলাইনে কোন ব্যবসা কিভাবে করা যায় সেটা জানার জন্য এই আর্টিকেলটি পড়ছেন। আসলে দুনিয়াটা এখন ইন্টারনেট নির্ভর।

যেকোনো পন্য বা সেবা নেওয়ার জন্য মানুষ এখন অন্য কোনো মানুষকে জিজ্ঞাসা করার আগে গুগলকে জিজ্ঞাসা করে। কোনো পন্যের দাম জানার জন্য মার্কেটে যায় না। কেউ অনলাইনে দাম যাচাই করে মার্কেটে গিয়ে কিনে আবার কেউ অনলাইনেই অর্ডার করে। ধীরে ধীরে অনলাইনে কেনা কাটা করার অভ্যাস তৈরি হবে। অনলাইন ব্যবসার দিক দিয়ে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্ব থেকে একটু পিছিয়ে আছে। উন্নত বিশ্ব যেখানে কাষ্টমারদের প্রোডাক্ট ডেলিভারি দেওয়ার জন্য রোবট ড্রোন ব্যবহার করছে সেখানে বাংলাদেশের অনলাইন মার্কেটগুলো মানুষের আস্থাটাও এখনও অর্জন করতে পারেনি। তবে আস্থা অর্জনের বিষয়টি ঠিক করতে বেশিদিন সময় লাগবে না। এখন বিশ্বের বড় বড় অনলাইন জায়ান্টরা বাংলাদেশের মার্কেটে প্রবেশ করছে। তাই বাংলাদেশে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করাটাকে খুব সম্ভাবনাময় হিসেবে দেখছি।

মনে করুন আপনার একটি পোষাক বিক্রির দোকান আছে। আপনি যদি ফেসবুকে একটি পেজ খুলে সেখানে নিয়মিত আপনার প্রোডাক্ট এর আপডেট শেয়ার করেন তাহলে আপনি অতিরিক্ত অনেক কাস্টমার পাবেন। আবার আপনার কাস্টমারদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে দিতে পারবেন? কাস্টমারদের চাহিদা জানতে পারবেন। এতে আপনার ব্যবসা আরও বড় হবে। তাই অনলাইনে ব্যবসা করা উচিত।

 

আজকের আলোচনা নিয়ে যদি কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।

ধন্যবাদ।

 

বিস্তারিত
শেয়ার ব্যবসা কি? কিভাবে করবেন?

আমরা শেয়ার ব্যবসার কথা প্রায়ই শুনে থাকি। কিন্তু শেয়ার ব্যবসা জিনিসটা কি? কেন আপনার শেয়ার ব্যবসা করা উচিত? কিভাবে শেয়ার ব্যবসা করবেন? শুরুটা করবেন কিভাবে? কিভাবে শেয়ার ব্যবসায় সফল ভাবে টিকে থাকবেন? বর্তমানে শেয়ার বাজারের অবস্থা কিরকম? আজ আমরা এইসব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা করব। পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার অনুরোধ রইল।

 

শেয়ার ব্যবসা কি?

কোনো কোম্পানি মূলধন বৃদ্ধির জন্য তাদের কোম্পানির একটা অংশকে ছোট ছোট ভাগ করে জনসাধারনের কাছে বিক্রি করে। এই ছোট ছোট ভাগগুলোকে শেয়ার বলে। এই শেয়ার নিয়ে যেসব ব্যবসা হয় তাকেই শেয়ার ব্যবসা বলে।

 

একটু সহজ ভাষায় বলিধরুন আপনার একটি প্রতিষ্ঠান আছে যেটি বিভিন্ন ধরনের চকলেট, চিপস, বিস্কুট তৈরি করে। এখন আপনার প্রতিষ্ঠানের মুল্য ৫০ লাখ টাকা। আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানটি আরও বড় করতে চান। আরও টাকা দরকার। এই বেশি টাকা পেতে আরও বিনিয়োগকারীর দরকার হবে যারা আপনার প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করবে। তাদের বিনিয়োগ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিকানা্র একটা অংশ তাদেরকে দিতে হবে। অর্থাৎ আপনার প্রতিষ্ঠানের শেয়ার তারা কিনে নিল। প্রতি বছর আপনার যে লাভ হবে তারা সে লাভের অংশ পাবে।

 শেয়ার ব্যবসাটাও এরকমই। তবে কিছু ব্যতিক্রমী নিয়ম নিতি আছে।

বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পূজি বাড়ানোর জন্য শেয়ার বাজারে আসে। তারা তাদের কোম্পানির একটা অংশ নিজ মালিকানায় রেখে বাকিটা ছোট ছোট ভাগ করে শেয়ার বাজারে ছেড়ে দেয়। উদাহরনস্বরুপ মনে করুন আপনার সেই চকলেট, চিপসের কোম্পানির ৫০% নিজেদের মালিকানায় রেখে বাকিটা শেয়ার বাজারে ছাড়লেন। অর্থাৎ ২৫ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার আপনি বিক্রি করবেন। এই ২৫ লাখ টাকাকে ১০০ টাকা করে ভাগ করে ২৫০০০ টি ভাগ করবেন। অর্থাৎ ২৫০০০টি শেয়ার এবং প্রত্যেকটি শেয়ারের মুল্য ১০০ টাকা করে। এবার সাধারন মানুষ আপনার কোম্পানির শেয়ার কিনবে কেউ একটি কেউ ১০টি। যারা কোনো কোম্পানির শেয়ার কিনে তাদেরকে ঐ কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার বলে।

কিন্তু সাধারন মানুষ আপনার কোম্পানির শেয়ার কিনে লাভ করবে কিভাবে?

কোম্পানিগুলো তাদের লভ্যাংশের একটা অংশ তাদের শেয়ার হোল্ডারদেরকে দেয়। তাছাড়া আরও উপায় আছে। নিজের শেয়ার আরেকজনের কাছে ক্রয় মুল্য থেকে বেশিদামে বিক্রি করে দেওয়া। ধরুন আপনার আপনি একটি শেয়ার কিনেছেন তার মূল্য ১০০ টাকা। দুই মাস পর ঐ শেয়ারটি আপনি ১২০ টাকায় বিক্রি করলেন। এভাবে লাভ করা যায়। আরও বেশ কয়েকটি উপায়ে শেয়ার বাজারে লাভবান হওয়া যায়। সেগুলো নিয়েও আলোচনা করব।

শেয়ার বাজারে শেয়ারের দাম কখনো কমে আবার কখনও বাড়ে। আপনি যে শেয়ার ১০০টাকা দিয়ে কিনেছেন সেটা কয়েকদিন পর ১২০টাকাও হতে পারে আবার ৭০ টাকাও হতে পারে। দাম কমে যাওয়ার পর যদি আপনি শেয়ার বিক্রি করেন তাহলে আপনার লোকসান হবে। একইভাবে দাম বাড়ার পর যদি আপনি শেয়ার বিক্রি করেন তাহলে আপনার লাভ হবে। তবে এইসব দাম বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে। কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, তাদের বাজার দখল, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, অন্যান্য বিজনেস এডভান্টেজ ইত্যাদি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে শেয়ারের দাম বাড়ে কমে।

কেন আপনার শেয়ার ব্যবসা করা উচিত?

শেয়ার ব্যবসা খুব ঝুকিপূর্ন একটি ব্যবসা কিন্তু তারপরেও আপনার এ ব্যবসাটি করা উচিত। এ ব্যবসাটি আপনি পার্টটাইম ব্যবসা হিসেবে করতে পারেন। অনেককেই বলতে শুনবেন যে শেয়ার ব্যবসা নাকি জুয়ার মতো। তাদের কথায় কান দিবেন না। এই ব্যবসায় নাকি যাদের লাভ হয় তাদের সবসময় লাভই হয়, আর যাদের ভাগ্য খারাপ তারা নাকি কখনও শেয়ার ব্যবসায় লাভবান হতে পারে না। এসব কথা যারা অলস অথবা শেয়ার ব্যবসা বুঝেনা তারাই বলে। শেয়ার ব্যবসা করতে হলে আপনাকে ভাল করে পড়াশুনা করতে হবে। ধৈর্যের সাথে শেয়ার ব্যবসা করতে হবে। এ ব্যবসায় যত লেগে থাকা হবে অভিজ্ঞতা তত বাড়বে। আর অভিজ্ঞতা বাড়লে সম্ভাবনা বাড়বে।

আবার আপনি একমাত্র পেশা হিসেবে এই শেয়ার ব্যবসা করতে যাবেন না। আপনার পুজির পুরোটা শেয়ার ব্যবসায় বিনিয়োগ করবেন না। এতে বিপদে পড়বেন। এরকম অনেক লোক আছেন যারা জমি সম্পত্তি বিক্রি করে শেয়ার ব্যবসা শুরু করেন। পড়ে রাস্তায় বসেছেন।

শেয়ার ব্যবসা শুরু করার সবচেয়ে উত্তম সময় হল ছাত্রজীবন। অনার্স প্রথম বা ২য় বর্ষ থেকেই এই ব্যবসায় ধীরে ধীরে জড়ানো উচিত।

শেয়ার ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে?

১৮ বছরের অধিক যে কেউ শেয়ার ব্যবসা করতে পারে। শেয়ার ব্যবসা শুরু করতে আপনার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা লাগবে। তারপর ঐ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিপরিতে একটি বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। একটি বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা লাগবে। বিও অ্যাকাউন্ট খোলার পর ব্রোকার হাউজের মাধ্যমে আপনি শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন। শেয়ার বাজারে ব্রোকার হাউজ ব্যাংকের মত কাজ করে। সাধারনত ব্যাংক জনগনকে নানা রকম সেবা যেমন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, টাকা সঞ্চয়, টাকা আদান প্রদান ইত্যাদি সেবা দিয়ে থাকে ঠিক তেমনি ভাবে শেয়ার ব্যবসায়ীদের বিও অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া, শেয়ার কেনা বেচার জন্য টাকা জমা নেওয়া ইত্যাদি সেবা প্রদান করে থাকে ব্রোকার হাউজ। ব্যাংক যেমন মানুষকে লোন দেয় তেমনি ভাবে ব্রোকার হাউজও বিনিয়োগকারীদের ঋন দিয়ে থাকে। যেটাকে মার্জিন লোন বলে।

শেয়ার ব্যবসা শুরু করার পর আপনি দুই ধরনের শেয়ার পাবেন। একটি হল প্রাইমারি শেয়ার আর আরেকটি সেকেন্ডারি শেয়ার। কোনো কোম্পানি যখন নতুন শেয়ার বাজারে আসে তখন তারা প্রথম যে শেয়ার বিক্রি করে সেগুলো প্রাইমারি শেয়ার। আর কোনো শেয়ার একবার বিক্রি হয়ে গেলে সেটা সেকেন্ডারি শেয়ার হয়ে যায়।

প্রাইমারি সেকেন্ডারি ছাড়াও শেয়ারের আরোও প্রকারভেদ আছে। যেমন…

A ক্যাটাগরির শেয়ার। যেসব কোম্পানি প্রতি বছর সাধারন সভায় ১০% বা তারও বেশি লভ্যাংশ ঘোষনা করে তাদের শেয়ারকে A ক্যাটাগরির শেয়ার বলে। এই ক্যাটাগরির শেয়ারের চাহিদা বেশি থাকে ফলে এর দামও উর্ধমূখী থাকে।

B ক্যাটাগরির শেয়ার। যেসব কোম্পানি প্রতি বছর সাধারন সভায় ১০% এর কম লভ্যাংশ ঘোষনা করে তাদের শেয়ারকে B ক্যাটাগরির শেয়ার বলে। এই ধরনের শেয়ারের দামও বেশি থাকে তবে A ক্যাটাগরি থেকে কম।

G ক্যাটাগরির শেয়ার। যেসব কোম্পানি উৎপাদনে আসার আগেই শেয়ার বাজারে যুক্ত হয় তাদের শেয়ারকে ক্যাটাগরির শেয়ার বলে।

N ক্যাটাগরির শেয়ার। যেসব কোম্পানি শেয়ার বাজারে নতুন প্রবেশ করে তাদের শেয়ার হল N ক্যাটাগরির শেয়ার। এরা শেয়ার বাজারে নতুন থাকে বিধায় এদের বার্ষিক লভ্যাংশ থাকে না।

Z ক্যাটাগরির শেয়ার। যেসব কোম্পানি প্রতি বছর বার্ষিক সাধারন সভায় বসে না, কোনো লভ্যাংশ ঘোষনা করে না এবং ন্যুনতম ৬ মাস ব্যবসায়িক উৎপাদনকার্য বন্ধ তাদের শেয়ারকে Z ক্যাটাগরির শেয়ার বলে।

ফ্রিল্যান্সিংকরবেন যেভাবে...

শেয়ার ব্যবসায় ভাল ভাবে টিকে থাকতে হলে আপনা্র শেয়ার বাজার সম্পর্কে ভাল ধারনা থাকা লাগবে। তাই আপনাকে এসব নিয়ে ভাল করে পড়াশুনা করে নিতে হবে। ব্যবসা শুরু করার পর চোক কান খোলা রেখে পদক্ষেপ নিবেন।

একটা গভেষনা অনুযায়ী শেয়ার বাজারে ৫০% ব্যবসায়ী বাজার সম্পর্কে তেমন ধারনা রাখেনা। ৪০% কিছু কিছু জানে। আর বাকি ১০% ভাল করে খোজ খবর রাখে এবং তারাই শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রন করে।

ট্রেড লাইসেন্স কি, কেন, কিভাবে করবেন?

আজ আমরা শেয়ার ব্যবসা নিয়ে একটি প্রাথমিক ধারনা শেয়ার করলাম। শেয়ার ব্যবসার আরোও খুটিনাটি নিয়ে সামনে আলোচনা করা হবে।

আজকের আলোচনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।

এলসি কি? কেন, কিভাবে করবেন?

ধন্যবাদ

 

বিস্তারিত
এলসি কি? কিভাবে এলসি করবেন?

আমদানি রপ্তানি ব্যবসার ক্ষেত্রে আলোচিত একটি শব্দ হল এলসি (LC) । কোনো পন্য আমদানি করতে গেলে এলসি করতে হয়। আজকের আলোচনায় থাকবে এলসি কি? কেন এলসি করবেন? কিভাবে এলসি করবেন? কত টাকা লাগবে এলসি করতে?

এলসি কি?

এলসি (LC) হচ্ছে লেটার অব ক্রেডিট। লেটার অব ক্রেডিটকে সংক্ষিপ্তে এলসি (LC) বলে। বাংলায় একে প্রত্যয়নপত্র বলে। একটু বুঝিয়ে বলি…

ধরুন আপনি চায়নাতে কিছু পন্য রপ্তানি করবেন। কাস্টমারের সাথে কথা বলে আপনি পন্য পাঠালেন। আপনাদের মধ্যে চুক্তি ছিল সে পন্য পেয়ে টাকা পরিশোধ করবে। কিন্তু পন্য নেওয়ার পর সে আর যোগাযোগ করছেনা। আবার এমনও হতে পারে যে, সে আগে টাকা পাঠিয়ে দিল, আপনি টাকা পেয়ে তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। আরেকটি উদাহরন দেই, ধরুন আপনি ইন্ডিয়া থেকে কিছু গার্মেন্টস আইটেমের অর্ডার পেয়েছেন। অর্ডার অনুযায়ী পন্য তৈরি করলেন। তারপর ডেলিভারির আগ মুহুর্তে অর্ডার বাতিল করে দেয়। এতে কিন্তু আপনার অনেক লোকসান হবে।

এই সমস্যার সমাধান হল এলসি। সেলার এবং কাস্টমারের মাঝে থাকবে কোনো ব্যাংক। তারা উভয়পক্ষকে নিশ্চয়তা দিবে। আমদানিকারক যদি পন্য না পায় তাহলে রপ্তানিকারক টাকা পাবেনা। এবার প্রশ্ন হল এলসি করা কার কাজ? আমদানিকারক নাকি রপ্তানিকারক এলসি করবে? উত্তর হল আমদানিকারক। আমদানি কারক প্রথমে ব্যাংকে এলসির জন্য আবেদন করবে। তারপর আমদানিকারকের পক্ষে ব্যাংক এলসি ইস্যু করবে। এলসি ইস্যু করার সময় ইস্যুকারি ব্যাংক আমদানিকারক থেকে পন্যের মুল্য বা মুল্যের একটি অংশ রেখে দিবে। বাকি অংশ পন্য খালাসের সময় আমদানিকারক পরিশোধ করবে।

পন্য ঠিকমত আসলে তারপর রপ্তানিকারক তার পন্যের পুরো মূল্য পাবে।

 

এবার আসি এলসি কিভাবে করবেন?

প্রথমে জানতে হবে এলসি করতে কি কি লাগে?

১. ট্রেড লাইসেন্স

২. আই আর সি (IRC= Import Registration Certificate)। আই আর সি কিভাবে করবেন সেটা সম্পর্কে আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিস্তারিত আলোচনা  আছে। পড়ে আসতে পারেন।

৩. অডিট রিপোর্ট

৪. পি আই বা প্রোফর্মা ইনভয়েস

৫. ভ্যাট সার্টিফিকেট

৬. টিন সার্টিফিকেট (TIN)

৭. এনআইডি

৮. ইন্সুরেন্স কাভার নোট ইন্সুরেন্স প্রিমিয়াম পরিশোধের কাগজপত্র

৯. স্থানীয় বানিজ্য চেম্বার বা সংশ্লিষ্ট কোনো অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যপদের প্রমানপত্র। চেম্বার বা অ্যাসোসিয়েশন অবশ্যই স্বীকৃত হতে হবে।

 

আপনি যে ব্যাংকে এলসি করবেন সেখানে এইসব কাগজপত্র দেখাবেন। সেখানে আরও কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করা লাগতে পারে। আর যে ব্যাংকে এলসি করবেন সেখানে আপনার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা লাগবে। সকল কাগজ পত্র জমা দেওয়ার পর ব্যাংক এগুলো যাচাই করবে। এর জন্য কিছু দিন সময় লাগবে। তারপর এলসি ইস্যু করা হয়ে গেলে এলসির মূল কপি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ রপ্তানিকারককে পাঠিয়ে দিবে। আপনাকে একটি কপি দিবে।

আপনি যদি পন্য আমদানি করেন তাহলে কি এলসি করার সময় পন্যের পুরো মূল্য পরিশোধ করতে হবে?

বেশিরভাগ সময়ই এলসি করার সময় পন্যের পুরো মুল্য পরিশোধ করতে হয়। তবে ব্যবসা করতে করতে যখন ব্যাংকের সাথে ভাল সম্পর্ক হবে তখন আপনি পন্যের মূল্যের ২০% বা ৩০% টাকা দিয়েও এলসি করতে পারবেন। বাকিটা পন্য খালাসের সময় পরিশোধ করবেন।

এলসির বিভিন্ন প্রকারভেদ…

১. Revocable LC

এই ধইরনের এলসিতে উল্লেখ্য শর্তাবলি পরিবর্তন করা যায়। তবে এটার প্রচলন খুব কম।

২. Irrevocable LC

এই ধরনের এলসিতে উল্লেখ্য শর্তাবলি পরিবর্তন করা যায় না।
৩. Confirmed LC

এই ধরনের এলসিতে কয়েকটি ব্যাংকের অনুমোদন থাকে।
৪. Unconfirmed LC

এই ধরনের এলসিতে একটিমাত্র ব্যাংকের অনুমোদন থাকে।
৫. Transferrable LC

এই ধরনের এলসি হস্তান্তরযগ্য।

৬. Non-transferrable LC

এটা হস্তান্তরযোগ্য নয়।
৭. At Sight LC                                   

৮. Deferred LC

৯. Back to Back LC                                        

১০. Red Clause LC                                                                                  

১১. Green Clause LC

এগুলো এলসির বিভিন্ন ধরন। আমদানি রপ্তানি ব্যবসা করতে এসকল ধরনের এলসি সম্পর্কে আপনার ধারনা থাকা লাগবে।

আজকের আলোচনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।

ধন্যবাদ।

 

বিস্তারিত
গরুর খামারের ব্যবসা শুরু করবেন যেভাবে

বাংলাদেশে একটি সম্ভাবনাময় ব্যবসা হল গরুর খামারের ব্যবসা। সাধারনত ভৌগলিক অবস্থান, আবহাওয়া, এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের উপর নির্ভর করে বিভিন্নভাবে পশুপালন করা যায়। আমদের দেশ পশুপালনে অনেকটা পিছিয়ে আছে। এর মূল কারন প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং পুঁজির অভাব। বর্তমানে আমাদের দেশে যে পরিমান গরুর চাহিদা তার বেশিরভাগই গ্রামে কৃষকদের পালন করা গরু দিয়েই পূরন করা হয়। দুধ এবং মাংসের চাহিদা পুরনের জন্য গরুর চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত যোগান নেই। এরজন্য আমাদেরকে আমদানি নির্ভর হতে হয়। কিন্তু যে হারে দেশে গরুর খামারের সংখ্যা বেড়ে চলছে তা চোখে পড়ার মত। বিশেষ করে তরুন উদ্যোক্তাগন গরুর খামারের দিকে বেশি ঝুঁকছে। একটা পরিসংখান অনুযায়ী দেশে যেসব গরুর খামার গড়ে উঠছে তার উদ্যোক্তাগনের মধ্যে ৭০% তরুন উদ্যোক্তা।

আজ আমরা গরুর খামার কিভাবে দিবেন, কি ধরনের গরুর খামার দিবেন, গরুর কয়েকটি জাত এবং এদের বৈশিষ্ট, কত টাকা পুজি লাগবে, গরুর খামারের গরু দিয়ে আর কি কি ব্যবসা করা যায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আপনার যদি গরুর খামারের ব্যবসা করার ইচ্ছা থাকে পুরো আর্টিকেল টি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।

 

কেন গরুর খামার দিবেন?

গরুর খামার দেওয়ার সবচেয়ে বড় কারন হল এটি একটি লাভজনক ব্যবসা তবে যদি আপনি ঠিকমত করতে পারেন। গরুর খামার দিয়ে দুধ, মাংস, বায়োগ্যাস, গোবর, এবং গরু নিয়ে ব্যবসা করা যায়। অর্থাৎ গরুর খামার নিয়ে নানা রকম ব্যবসা করা যায়। যদি আপনি একমাত্র ব্যবসা বা পেশা হিসেবে গরুর খামারের ব্যবসা শুরু করেন তবে সেটা অনেক বেশি ঝুঁকিপুর্ন হবে। গরুর খামারের ব্যবসা শুরু করে লোকসান করে রাস্তায় বসেছেন এমন ব্যবসায়ীদের সংখাও কম না। তাই গরুর খামারের ব্যবসা শুরু করবেন, ভেবে চিন্তে করবেন। তবে কিভাবে লোকসান হয়, লোকসান এড়ানো যায় কিভাবে সেটাও আমরা আলোচনা করব।

 

কিভাবে গরুর খামারের ব্যবসা শুরু করবেন?

গরুর খামারের ব্যবসা শুরু করার আগে পরিকল্পনা সাজিয়ে নিবেন। তবে এই পরিকল্পনা সাজানোর জন্য আপনাকে বেশ কয়েকটি খামার পরিদর্শন করতে হবে। ছোট খামার বড় খামার পরিদর্শন করবেন। খামারিদের সাথে কথা বলবেন। তাদের অভিজ্ঞতা জেনে নিবেন। একজন দুজন নয় ন্যুনতম ১০জন খামারির সাথে কথা বলে ধারনা নিবেন। তবে যে যাই পরামর্শ দেয় না কেনো, প্রথমে বেশি টাকা বিনিয়োগ করতে যাবেন না।

পরিকল্পনার শুরুতে ঠিক করে নিবেন কি ধরনের গরু দিয়ে খামার শুরু করবেন? দুধ উৎপাদনের গরু নাকি মাংস উৎপাদনের গরু দিয়ে। কিছু জাতের গরু আছে যেগুলো খুব দ্রুত বাড়ে কিন্তু বেশি পরিমান দুধ দেয়না। আপনি যদি দুধ উৎপাদনের গরু দিয়ে অর্থাৎ ডেইরি ফার্ম দিতে চান তাহলে যেসব গরু দিয়ে খামার শুরু করতে পারেন সেগুলো হল…

·        হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান। এজাতের গাভী প্রতিদিন ৩০ লিটারের উপরে দুধ দিতে পারে। গায়ের রঙ সাদা কালো মিশানো। লেজের গোড়ার চুল সাদা রঙের হয়। এসব গাভীর ওজন ৪০০-৬০০ কেজি হয়ে থাকে। আর বাছুর জন্মের সময় ৩০ থেকে ৪৫ কেজি ওজন নিয়ে জন্মায়। ৩০ লিটার দুধ পেতে দিনে ৩ বার দুধ দোয়াতে হয়।

·        ব্রাউন সুইচ। এ জাতের গাভী দৈনিক প্রায় ২৫ লিটার দুধ দেয়। এদের গায়ের রঙ সাধারনত কালো হয়। কালো ছাড়াও কিছু গরু লালচে কালো রঙের হয়। এই জাতের গাভীর ওজন ৬০০ কেজি থেকে ৭০০ কেজি হয়ে থাকে। আর ষাঁড়ের ওজন ৬০০ কেজি থেকে ১০৫০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

·        জার্সি। এ জাতের গাভী দৈনিক ২০ থেকে ২৫ লিটার দুধ দিয়ে থাকে। এর জন্য দিনে তিনবার দুধ দোয়াতে হয়। এ জাতের গাভীর ওজন ৪০০ কেজি থেকে ৫০০ কেজি এবং ষাঁড়ের ওজন ৮০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

·        লাল সিন্ধি। দুধ উৎপাদনের জন্য এই জাতের গরুর কদর অনেক বেশি। এ জাতের গরুর উৎপত্তিস্থল পাকিস্থানের সিন্ধুদের পশ্চিম পাড়ে। গায়ের রঙ লাল এবং উৎপত্তিস্থল থেকেই এই গরুর নামকরন করা হয়েছে লাল সিন্ধি। এ জাতের গরু দিনে গড়ে ১০ লিটার দুধ দেয়। আর আরও বড় বৈশিষ্ট হল এরা বছরে ৩৫০ দিন পর্যন্ত দুধ দিতে পারে।

·        আয়ারশায়ার। এ জাতের গরু দিনে ১৬ থেকে ১৭ লিটার দুধ দেয়। এ জাতের গরুর রঙ সাধারনত লালের উপর সাদা ছোপ ও সাদার উপর লালের ছোপ। গাভীর ওজন ৪৫০ কেজি থেকে ৬০০ কেজি এবং ষাঁড়ের ওজন ৬৫০ কেজি থেকে ১০০০ কেজি হয়ে থাকে।

·        শাহলিওয়াল। এ জাতের গরু দিনে গড়ে ১৫ লিটার দুধ দেয়। এ জাতের গাভির ওজন ৩৫০ কেজি থেকে ৫০০ কেজি পর্যন্ত হয় এবং ষাঁড়ের ওজন ৮০০ কেজি থেকে ৯০০ কেজি হয়ে থাকে। এ গরুর রঙ লাল রঙের হয়।

উপরে উল্লেখিত জাতের গরুগুলো সাধারনত দুধ উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। শুধু দুধ উৎপাদনের জন্যই নয় মাংস উৎপাদনের জন্যও এসব গরু পালন করা হয়। খামারে উৎপাদিত দুধ বিক্রির কয়েকটি মাধ্যম রয়েছে। সরাসরি গ্রাহকের বাসায় গিয়ে দুধ দিয়ে আসা যায়। দোকানে বিক্রি করা যায়। আবার বাসায় বাসায় গিয়ে দুধ দিয়ে আসে এমন অনেক ব্যবসায়ী আছে তাদের কাছেও দুধ বিক্রি করতে পারবেন। আবার কোনো বড় প্রতিষ্ঠানে দুধ সাপ্লাই দিতে পারেন। আবার এসব দুধ নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে প্যাকেটিং করে বিক্রি করতে পারবেন। দুধ থেকে ঘি, মাখন, পনির উৎপাদন করে বিক্রি করতে পারেন।

এবার মাংস উৎপাদনের জন্য কয়েকটি গরুর তালিকা তুলে ধরছি…

·        অ্যাঙ্গাস। এ জাতের গরুর উৎপত্তিস্থল স্কটল্যান্ড, অ্যাবারডিন, কিংকারডিন এর উত্তর-পুর্বাঞ্চলে। এই জাতের ষাড়ের ওজন ৭০০ কেজি থেকে ৮৫০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর গাভীর ওজন ৪৫০ কেজি থেকে ৫৫০ কেজি হয়ে থাকে।

·        আয়ারশায়ার। এই গরুর সংক্ষিপ্ত বর্ননা আগেই আলোচনা করা হয়েছে।

·        ব্রাউন সুইচ। এই জাতের গরুর সম্পর্কেও উপরে আলোচনা করা হয়েছে।

·        লাল সিন্ধি। এর সম্পর্কেও আগে আলোচনা করা হয়েছে।

·        শাহিওয়াল। এর সম্পর্কেও আগে আলোচনা করা হয়েছে। মাংস উৎপাদনের জন্য শাহিওয়াল জাতের গরু বাংলাদেশের খামার ব্যবসায়ীদের কাছে অধিক পছন্দনীয়। মাংস উৎপাদনের উদ্দেশ্যে গরু পালন করলে আমরা এই শাহিওয়াল গরু পালন করার পরামর্শ দিব।

·        হরিয়ানা। এ জাতের গরুর উৎপত্তিস্থল ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের রোটাস, কার্নাল হিসার এবং গুরুগাঁও জিলা। এই জাতের গরু শারিরিক ভাবে অনেক শক্তিশালী, আকারে লম্বা এবং উচু। এদের গায়ের রঙ সাদা বা হালকা ধুসর বর্নের। এ জাতের একটি ষাড়ের ওজন ৫০০ কেজি থেকে ৭০০ কেজি হয়ে থাকে। এবং গাভীর ওজন ৪০০ কেজি থেকে ৫৫০ কেজি হয়ে থাকে। এরা দিনে ৫ লিটার দুধ দেয়।

উপরে উল্লেখিত গরুগুলো সাধারনত মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়ে থাকে। এসব গরু নিয়ে পড়াশুনা করে নিবেন। কোন গরু নিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন এবং সে গরু কিভাবে পালন করবেন তা ভালো করে জেনে নিবেন। আপনার পুঁজি দিয়ে সে গরু কিনে ভরনপোষন করতে পারবেন কিনা তা আগেই দেখে নিবেন। আমাদের পরামর্শ থাকবে প্রথমে দুধের গরু দিয়ে ব্যবসা শুরু করা উচিত। কারন মাংস উৎপাদনের গরু দিয়ে আপনার ব্যবসা শুরু করলে লাভের মুখ দেখতে অনেক দিন পর্যন্ত সময় লাগবে। আর এর জন্য আপনাকে অনেক বেশি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। তাই আপনাকে প্রথমে গরুর দুধের ব্যবসা করতে হবে। এসব গাভী থেকে বাছুর জন্ম নিবে। সেগুলো কিছু থাকবে ষাড়। এগুলোই আপনি বড় করে বিক্রি করতে পারবেন। নতুন করে আপনাকে ষাড় কিনতে হবেনা।

এভাবে পরিকল্পনা ঠিক করার পর স্থান নির্বাচন করবেন। এমন স্থান নির্বাচন করবেন যেটা শহর থেকে বেশি দূরে নয় এবং কম ব্যায়বহুল। একটা প্লেস নির্বাচন করে সেটা প্রথমে তিন বছরের জন্য লিজ নিয়ে নিবেন। তিন বছরের জন্য লিজ নেওয়া স্থানে অস্থায়ীভাবে গরুর জন্য ঘর বানাবেন। গরু দেখাশোনা করার জন্য লোক ঠিক করে তারপর গরু কিনবেন। গরু কিনলে কোনো খামার থেকে গরু কিনার চেষ্টা করবেন। বাজার থেকে গরু কিনার চেয়ে খামার থেকে গরু কিনাই ভালো হবে। আর খামার থেকে গরু কিনলে ঐ গরুর দিকে কয়েকদিন নজর রাখবেন। তারপর অভিজ্ঞ কারও মাধ্যমে গরু কিনবেন।

এভাবে আপনি গরুর ব্যবসা শুরু করবেন।

 

গরুর খামারের ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা পুঁজি লাগবে?

গরুর খামারের ব্যবসা শুরু করতে ঠিক কত টাকা পুঁজি লাগবে তা নির্ভর করবে আপনি কি পরিসরে ব্যবসা শুরু করতে চান তার উপর। একটি মোটামুটি মানের শাহিওয়াল জাতের ষাড় ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। আবার একটি ভালো মানের হলস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর দাম আড়াই লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা হয়ে থাকে। গরুর দাম এবং অন্যান্য খরচ সব মিলিয়ে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা দিয়ে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

তবে আপনি চাইলে আরও কম টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। আগেই বলেছি পুঁজির বিষয়টা আপনার পরিকল্পনার উপর নির্ভর করবে।


গরুর খামারের গরু দিয়ে আর কি কি ব্যবসা করা যায়?

আপনি চাইলে গরুর খামারের গরু এবং দুধ ছাড়াও আরও ব্যবসা করতে পারবেন। এই যেমন ধরুন ঘি, মাখন, পনির এগুলো তৈরি করে বিক্রি করতে পারবেন। এইসব পন্যের কাস্টমার প্রথমে আপনি পাবেন না। ধীরে ধীরে কাস্টমার পাবেন। এগুলো ছাড়াও গরুর গোবর বিক্রি করতে পারবেন। অনেকে গরুর গোবর থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করে বিক্রি করে। আপনিও এগুলো বিক্রি করতে পারেন। গরু থেকে যে বাছুর জন্ম হবে সেগুলোও বিক্রি করে দিতে পারেন। তবে পরামর্শ থাকবে বাছুর বিক্রি না করে সেগুলো বড় করে বিক্রি করবেন। এতে দাম বেশি পাবেন।

গরু বিক্রি করবেন কিভাবে?

বাংলাদেশের জন্য গরু বিক্রির সবচেয়ে ভাল সময় হল কুরবানির ঈদ। এ ঈদকে কেন্দ্র করে যে হাট বসে সেখানে আপনি গরু সাপ্লাই দিতে পারেন। সেখানে ভালো বেচাকিনি হয়। আর আরও ভালো উপায় হল সরাসরি খামার থেকে গরু বিক্রি করা। এখন অনেকেই গরুর হাট থেকে গরু না কিনে সরাসরি খামার থেকে গরু কিনে। তবে সরাসরি খামারে কাস্টমার পেতে ভালো ভাবে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে হবে। আপনার এলাকায় বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে আপনার খামারের বিজ্ঞাপন প্রচার করবেন। অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও বিজ্ঞাপন প্রচার করবেন। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে আপনার এলাকার আশেপাশের অঞ্চলের জন্য পোস্ট বুস্ট করবেন। ইউটিউবেও গরু নিয়ে ভিডিও আপলোড দিবেন। এর ফলে কাস্টমার পাবেন।

গরুর খামার ব্যবসায় লোকসান হয় কিভাবে?

এই ব্যবসায় লোকসান হওয়ার সবচেয়ে বড় কারন গরুর রোগব্যাধি। কখনও এমন দেখা যায় গরুর সংক্রমন রোগ হয়ে খামারের সব গরু মারা যায়। এসব এড়াতে গরুর সব টিকা দিয়ে রাখবেন। গরুর স্বাস্থের দিকে বেশি নজর রাখবেন। নিয়মিত গরু চিকিৎসক দিয়ে চেক আপ করিয়ে নিবেন। আর বাহিরের কোনো মানুষ যেনো খামারে যততত্র প্রবেশ না করতে পারে। খামারের অন্যান্য কর্মচারি খামারে প্রবেশ করে ভালো করে হাত মুখ ধুয়ে নিবে। 


আজকের আলোচনা নিয়ে কোনো মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।

ধন্যবাদ।

বিস্তারিত
ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া

ব্যবসায়িক জীবনের শুরুটা হয়েছে ফুটপাতের ব্যবসা দিয়ে এমন সফল ব্যবসায়ীদের সংখ্যা কম নয়। তাই অন্যান্য ব্যবসার জন্য যদি পর্যাপ্ত পুঁজির জোগান না থাকে তাহলে ফুটপাতে খুব সহজেই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আমাদের দেশে ফুটপাতের ব্যবসাকে সবাই একটু নিচু চোখে দেখে। ব্যবসা শুরু করতে গেলে কে কি মনে করে এটা ভেবে বসে না থেকে কাজ শুরু করে দেন। একসময় আপনার সফলতা দেখে নিন্দুকদের চোখ কপালে উঠবে। তাই আবার বলছি, যে অবস্থায়ই থাকেন না কেন, কাজ শুরু করে দেন।

আজ আমরা ফুটপাতে করা যায় এরকম বেশ কয়েকটি ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করব। ফুটপাত ব্যবসার আইডিয়ার পাশাপাশি এ ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা পুঁজি লাগে, আর কি কি প্রয়োজন হবে এবং কিভাবে ফুটপাত থেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হবেন এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

আলোচনা শুরুর আগে একটা কথা বলে নিচ্ছি, বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি স্থানে ফুটপাতে ব্যবসার প্রতি কড়াকড়ি নিষেধাজ্ঞা আছে। এসব স্থানে ফুটপাত দোকান দিবেন না। এতে ঝামেলায় পড়বেন। আর যেখানেই দোকান দেন একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন যে, আপনার দোকান এবং দোকানে আসা কাস্টমারদের জন্য যেন রাস্তার পথচারীদের কোন সমস্যা না হয়। এই পথচারীরাই আপনার কাস্টমার। তাই তাদের সুবিধা অসুবিধার কথা ভাববেন।

যাই হোক এবার মূল আলোচনায় আসি।

ফুটপাতে কেন ব্যবসা করবেন?

ফুটপাতে ব্যবসা করার মুল কারন হল পর্যাপ্ত পুঁজির অভাব। অনেকেরই বড় কোনো দোকান নিয়ে ব্যবসা করার সামর্থ্য থাকে না। তাই বলে কি বসে থাকা যায়? ফুটপাতে ব্যবসা করতে তেমন একটা পুঁজি লাগেনা। যা লাগে তা হল দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক চাদা। আর কিছু পন্য কিনতে যা খরচ। সব মিলিয়ে এই। তাছাড়া এখানে ঝুঁকি তুলনামূলক কম। তাছাড়া কখনো এমনও হয় যে, বড় মার্কেট থেকে ফুটপাতে বেচা কেনা বেশি। এই কারনে অনেক ব্যবসায়ী আছেন যারা ফুটপাতে ব্যবসা করেন কিন্তু ঢাকা শহরে পাঁচ তলা বাড়ি আছে। তাই বলছি ফুটপাতে ব্যবসা করাটা নিচু চোখে দেখার কিছু নয়। আর ফুটপাতে ব্যবসা করাটাও অনেক সহজ। দরকার ভাল আইডিয়া। নিচে কয়েকটি ফুটপাতের লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া তুলে ধরলাম।

 

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসার কয়েকটি আইডিয়া

১. ফুটপাতে চা কফির ব্যবসা

অনেকেই হয়ত এই আইডিয়াটিকে এড়াতে চাইবেন। এটা কেমন শোনায়! শেষে কিনা রাস্তায় চা বিক্রি করব? এ ধরনের কথা মনে আসতেই পারে। আজকের ব্যবসার আইডিয়াটি সাধারন চা কফি বিক্রির দোকান নিয়ে নয়।একটু ভিন্ন রকম। ইদানিং অনেকেই খেয়াল করবেন, শহরের বিভিন্ন মোড়ে ভিন্ন ধরনের কয়েকটি চায়ের দোকান দেখা যায়। এসব দোকানের উদ্যোক্তারা থাকে তরুন। এরা নরামাল চা বিক্রির পাশাপাশি বিশেষ চা বিক্রি করে। যেমন ধরুন, ইরানি চা, তান্দুরি চা, সরের চা, মাল্টা চা, তার্কিশ চা ইত্যাদি। এগুলোর বেশ চাহিদা থাকে। বিশেষ করে তরুনদের পছন্দের চা এগুলো। ঢাকার কোনো কোনো স্থানে দিনে এরা ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার চা কফি বিক্রি করে থাকে। এই চা কফির কাস্টমারদের জন্য বসার সিট দেওয়া লাগেনা। কাস্টমাররা দাঁড়িয়েই চা খায়। তাই এর জন্য আপনার বেশি জায়গার প্রয়োজন হবে না।

এবার আসি কিভাবে শুরু করবেন এই ব্যবসা? প্রথমে আপনাকে বিভিন্ন ধরনের চা বানানো রপ্ত করতে হবে। বেশ কয়েকদিন নিজে প্র্যাকটিস করতে হবে। কারন কাঁচা হাতের চা সবসময় মজা হয়না। যখন থেকে আপনি পারফেক্ট চা বানাতে পারবেন তখনই কাজে নামবেন। প্রথমে স্থান নির্বাচন করুন। এই ব্যবসা কতটুকু সফল হবে সেটা বেশিরভাগ নির্ভর করবে স্থানের উপর। তাই  স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবেন। মেইন রোডের পাশে এবং কোনো মোড়ের কাছেই এই দোকান দেওয়ার চেষ্টা করবেন। অথবা কোনো মার্কেটের আশেপাশে। এবার সেই স্থান নেওয়ার জন্য কার সাথে কথা বলতে হবে সেটা ওখানকার অন্য দোকানদার থেকে জেনে নিবেন। তারপর কথা বলে নিবেন। এবার একটি ভ্রাম্যমান দোকান বানাবেন। ভ্যান গাড়ি আকারের একটি গাড়ি বানাবেন। এটাই আপনার দোকান। এটার মধ্যে চুলা, সিলিন্ডার বসবে। অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থাকবে। এবং এটা কিনতে আপনার প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকার মতো লাগবে। দোকান ঠিক করার পর অন্যান্য জিনিসপত্র কিনে ফেলবেন।

আপনি ভাল মানের চাপাতা আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকেই কিনতে পারেন। এখানে বিভিন্ন ধরনের চা পাতা পাইকারি বা খুচরা পাওয়া যায়। আবার চাইলে আপনি নিজেও আপনার পন্য এখানে বিক্রি করতে পারেন।

দোকান ঠিক করার পর ব্যবসায় নেমে পড়ুন। সাধারনত ফুটপাতে ব্যবসা করতে ট্রেড লাইসেন্স বা অন্যান্য বৈধ কাগজপত্র লাগেনা। তাই এগুলো নিয়ে কোনো ঝামেলা করা লাগবে না।


২. ফুটপাতে গার্মেন্টস আইটেমের ব্যবসা

বাংলাদেশের ফুটপাতে যত ধরনের ব্যবসা আছে তার মধ্যে গার্মেন্টস আইটেমের জনপ্রিয়তাই বেশি। কারন ফুটপাতে গার্মেন্টস আইটেমের ব্যবসা খুব লাভজনক একটি ব্যবসার আইডিয়া। ফুটপাতে সকল প্রকার গার্মেন্টস আইটেম অনেক কম দামেই পাওয়া যায়। যে টি শার্টের দাম বড় মার্কেটে ১ থেকে দেড় হাজার টাকা সেটা ফুটপাতে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায়। যার কারনে মধ্যবিত্ত বা নিম্মবিত্ত পরিবারের গার্মেন্টস আইটেমগুলো ফুটপাত থেকেই কেনা হয়।

ফুটপাতে যেসব গার্মেন্টস আইটেম জনপ্রিয় সেগুলো হল টি শার্ট, পলো শার্ট, শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, ট্রাউজার, মেয়েদের ওড়না, পাজামা, প্লাজু, আন্ডারওয়ার ইত্যাদি। এগুলো প্রথমে আপনি পাইকারি কিনে বিক্রি করবেন। ধীরে ধীরে হোলসেল কিনে খুচরার পাশাপাশি পাইকারি বিক্রির চেষ্টা করবেন।

এই ব্যবসার জন্যও ভাল স্থান নির্বাচন করবেন। আগের মতো করে স্থান ঠিক করবেন। বিশ্বস্ত পাইকারি সেলার খুজে বের করবেন। আর যদি বিশ্বস্ত পাইকারি সেলার খুজে পেতে সমস্যা হয় তাহলে আমাদের এই ওয়েবসাইট ঘুরে আসতে পারেন। এখানে আপনি দেশের নানা প্রান্তের পাইকারি বা হোলসেলার খুজে পাবেন। এবং যাদের প্রোফাইলে সবুজ ভেরিফাইড সাইন আছে তারাই বিশ্বস্ত বিক্রেতা। বিশ্বস্ত বিক্রেতাদের থেকে পন্য কিনলে সে পন্য ভাল পাবেন।

প্রথম আপনি ১০০ টি শার্ট কিনে সেগুলো বিক্রি করবেন। এটার মাধ্যমে মার্কেট যাচাই করবেন। তারপর অন্যান্য পন্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন আবার চাইলে টি শার্টের ব্যবসাও ধরে রাখতে পারেন।

গার্মেন্টস আইটেমের ব্যবসায় আপনার যত বেশি অভিজ্ঞতা হবে তত বেশি আয় হবে। প্রথম লোকসান খেতেই পারেন। অনেকেরই এমন হয় যে প্রচুর পন্য কিনেছে কিন্তু সেগুলো আর বিক্রি করতে পারছেনা। শেষে অনেক লোকসান দিয়ে সেগুলো বিক্রি করতে হয়। এরকমটা হওয়ার কারন হচ্ছে কাস্টমারদের চাহিদা বুঝতে না পারা। তাই বলেছি এই ব্যবসায় যত বেশি অভিজ্ঞতা হবে ব্যবসা তত বেশি লাভজনক হবে। তবে এর জন্য লেগে থাকতে হবে। এই ব্যবসায় প্রথমে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পুঁজি হলেই চলবে। ধীরে ধীরে পুঁজি বাড়াবেন।

এবার আসি কোথা থেকে পাইকারি গার্মেন্টস আইটেম কিনবেন?

টি শার্ট, শার্ট, প্যান্ট আপনি ঢাকা গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া মার্কেটে পেয়ে যাবেন। থ্রি পিস বা মহিলাদের আইটেমগুলো ইসলামপুর বা গাউছিয়া মার্কেট থেকে কিনতে পারেন। অথবা আমাদের এই ওয়েবসাইটেও পাবেন।

 

৩. ফুটপাতে ফাস্টফুডের ব্যবসা

এই ব্যবসার আইডিয়াটি ফুটপাতের জন্য দারুন একটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। বর্তমান প্রজন্মের কাছে ফাস্টফুড খুবই পছন্দনীয় একটি খাবার। ফুটপাতে ফাস্টফুড খুব ভালো চলবে। যেসব ফাস্টফুড আইটেম ফুটপাতে ভাল চলবে সেগুলো হল বার্গার, পিৎজা, ভেজিটেবল রোল, চিকেন রোল, শর্মা, চিকেন বল, স্যান্ডউইচ, সাব স্যান্ডউইচ ইত্যাদি। ফুটপাতে ফাস্টফুডের এই ব্যবসাটি খুব লাভজনক একটি ব্যবসা। আপনি যদি এই ব্যবসা করেন তাহলে অন্য দশজনের মতো না করে একটু ভিন্ন ভাবে শুরু করবেন।

কিভাবে আনবেন এই ভিন্নতা? সবার আগে মানের দিকে খেয়াল রাখবেন। বেশি লাভের আশায় খারাপ মানের খাবার বিক্রি করবেন না। তারপর পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায়া রাখবেন। দোকান রাখবেন আকর্ষনীয় সাজে। রাস্তায় কেউ যখন হেটে যাবে তাদের চোখে যেন আপনার দোকানটি আটকায়। ভাল লাইটিং এর ব্যবস্থা করবেন। নিজস্ব প্যাকেটিং ব্যবস্থা রাখবেন। চেষ্টা করবেন খাবারগুলো নিজে বানিয়ে নিতে। নিজে না বানাতে পারলে শিখে নিবেন।

এসব করতে গিয়ে খরচটা একটু বেড়ে যাবে। তাই প্রথম মনে হবে যেন লোকসান হচ্ছে। কিন্তু বিশ্বাস করেন, কিছুদিন যেতে না যেতেই আপনার কাস্টমার বেড়ে যাবে। কাস্টমার প্রতি লাভ কম হলেও বেশি কাস্টমারের জন্য আপনার ভাল লাভ আসতে থাকবে। এবং এ থেকে আপনি আরোও বড় আকারে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। অপরদিকে আপনি যদি মানের দিকে খেয়াল না রাখেন, অন্যান্যদের মতোই ব্যবসা করেন তাহলে এই ব্যবসা নিয়ে বেশিদূর এগোতে পারবেন না।

আর এইভাবে ব্যবসা শুরু করতে ২০,০০০ টাকা থেকে ৩০০০০ টাকা পুঁজি হলেই চলবে।

 

৪. ফুটপাতে ফুটওয়ারের ব্যবসা 

ফুটওয়ার বলতে জুতাকে বুঝায়। ফুটপাতে জুতার ব্যবসাও জমজমাট থাকে। আসলে ফুটপাতে অন্যান্য গার্মেন্টস আইটেম বা ফুটওয়ারের ব্যবসা সবচেয়ে বেশি জমজমাট থাকে রমজান মাসে। কারন রমজানের পর আসে ঈদ। অন্যান্য উৎসবের আগেও এসব ব্যবসা খুব ভাল চলে। বড় দোকান বা শোরুম গুলোতে জুতার দাম বেশি থাকে তাই সাধারন মানুষরা তাদের কেনাকাটা এই ফুটপাতেই করে। ফুটপাতে গার্মেন্টস আইটেমের মতো করেই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। পুঁজিও একই রকম লাগবে। দোকানে ভালভাবে লাইটিং করবেন। এতে কাস্টমারের দৃষ্টি আকর্ষন হবে।

আপনি গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া মার্কেটে জুতার পাইকারি বাজার পাবেন। আবার আপনি চকবাজারেও পাবেন।

আমাদের এই ওয়েবসাইটেও বিভিন্ন ধরনের জুতার পাইকারি সেলার পেয়ে যাবেন।

৫.ফুটপাতে মোবাইল এক্সেসরিজ এবং ইলেকট্রনিক পন্যের ব্যবসা

মোবাইল এক্সেসরিজ বলতে মোবাইলের ব্যাক কাভার, প্রোটেকশন গ্লাস, ক্যামেরা প্রোটেকশন গ্লাস, ব্যাটারি, মোবাইল স্ট্যান্ড, ট্রাইপড, এয়ারফফোন, হেডফোন ইত্যাদি আইটেমগুলিই ফুটপাতে বেচাকিনি করা হয়। আর অন্যান্য ইলেকট্রনিক পন্য বলতে লাইট, রাউটার, সাউন্ড বক্স ইত্যাদি। মোবাইলের প্রোটেকশন গ্লাস প্রায় সময়ই পাল্টাতে হয়। সেই সাথে ব্যাক কাভারও আনেকে নিয়মিত পরিবর্তন করে থাকেন। ফুটপাতে মোবাইল এক্সেসরিজের ব্যবসা করতে গেলে এয়ারফোনের কাস্টমার সবচেয়ে বেশি পাবেন। এমন অনেক কাস্টমার আছে, যাদের একটি এয়ারফোন ২ সপ্তাহের বেশি টিকেনা। অর্থাৎ ফুটপাতে এই ব্যবসায় আপনি ভাল পরিমান কাস্টমার পাবেন।

ফুটপাতে এই ব্যবসাটি মোটামুটি জমজমাট। গুলিস্তানে মোবাইল এক্সেসরিজের পাইকারি বাজার রয়েছে। সেখান থেকে কিনে এনে আপনি ব্যবসা করতে পারেন।

এই ধরনের ব্যবসা শুরু করতে সাধারনত ২০ হাজার টাকা পুঁজি হলেই হবে। অনেক ব্যবসায়ী আছেন যারা নিজেরা সরাসরি ডোর টু ডোর সার্ভিসের মাধ্যমে অন্য দেশ থেকে পন্য নিয়ে আসেন। তবে আপনি প্রথমেই এমনটা করতে যাবেন না।

 

আজ আমরা যে কয়টি ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করেছি সেগুলো সবগুলোই বাস্তবমুখী এবং লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। আপনি খুব সহজেই এইসব ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। ফুটপাতে করা যায় এরকম আরও কয়েকটি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আমরা আরও আলোচনা করব।

আপনি যদি ব্যবসা শুরু করেন তাহলে আপনার পন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটে সাপ্লাই দিতে পারেন। এখানে পন্যের বিজ্ঞাপন দেওয়া, সেলার একাউন্ট খোলা একদম ফ্রী। পন্য বিক্রি করলে আমাদের কোনো কমিশন দিতে হবেনা। আর কোনো ধরনের বাৎসরিক চার্জ নেই।

পাশাপাশি আপনি অন্যান্য অনলাইন প্লাটফর্মেও ব্যবসা করতে পারেন। যেমন ফেসবুক, ইউটিউব। এইসব সাইট থেকেও কাস্টমার পাবেন। ফেসবুক, ইউটিউবে আপনার পন্যের রিভিউ নিয়মিত আপলোড করে মনিটাইজ করে সেখান থেকেও অতিরিক্ত আয় করতে পারেন। আবার এসব রিভিউ দেখে অনেকেই অর্ডার করবে। তাই অফলাইনে ব্যবসার পাশাপাশি আপনাকে অনলাইনেও ব্যবসা করা উচিত।

আজকের আলোচনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

ধন্যবাদ।

 


বিস্তারিত
ইলন মাস্কের উঠে আসার গল্প

 

ইলন মাস্কের নাম শুনেননি এমন মানুষের সংখা খুবই কম। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে সফল মানুষদের মধ্যে তিনি একজন। ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী ইলন মাস্ক ধনীদের তালিকায় বিশ্বে ২য়। আজ আমরা ইলন মাস্ক এবং ইলন মাস্কের উঠে আসার গল্প নিয়ে আলোচনা করব।

 

ইলন মাস্ক জন্ম গ্রহন করেছিলেন ১৯৭১ সালের ২৮শে জুন দক্ষিন আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায়। ইলন মাস্কের পূর্ণ নাম ইলন রিভ মাস্ক। ইলন মাস্কের মা ‘মেই মাস্ক’ কানাডায় জন্মগ্রহন করেছিলেন। কিন্তু তার বেড়ে উঠা হয় দক্ষিন আফ্রিকায়। এবং ইলন মাস্কের বাবা একজন দক্ষিন আফ্রিকান প্রকৌশলী। ১৯৮০ সালে ইলন মাস্কের বাবা ও মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এর ২ বছর পর ইলন মাস্ক তার বাবার সাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও পরে এই সিদ্ধান্তকে সে একটি ভুল সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যায়িত করে। ইলন মাস্ক তার বেশিরভাগ সময় তার বাবার সাথে দক্ষিন আফ্রিকার পিটোরিয়ায় থাকতেন। তবে ইলন মাস্কের সাথে তার বাবার খুব একটা ভালো সম্পর্ক ছিল না। ইলন মাস্কের একটি ভাই ও একটি বোন আছে।

 

১২ বছর বয়সে ইলন মাস্ক একটি ভিডিও গেম তৈরি করে এবং পিসি এন্ড অফিস টেকনোলজি ম্যাগাজিনের কাছে ৫০০ ডলারের বিনিময়ে বিক্রি করেছিলেন। সেই থেকে শুরু। তার শিক্ষাজীবনের শুরুটা হয় প্রিটোরিয়া বয়েজ স্কুলে। তারপর তিনি কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন কিন্তু সেখানে বেশিদিন থাকেননি। কানাডা হয়ে আমেরিকায় চলে যান। তার কানাডায় আসার মূল উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকায় আসা। কারন তখনকার সময়ে কানাডা দিয়ে আমেরিকায় ঢুকা সহজ ছিল। তারপর তিনি ১৯৯২ সালে পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। এবং সেখান থেকে পদার্থ বিজ্ঞানের উপর স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর তিনি হেয়ারটন স্কুল থেকে অর্থনিতিতে আবার স্নাতক ডিগ্রি নেন। তারপর জ্বালানি পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে আমেরিকার বিখ্যাত স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি ডিগ্রির জন্য এডমিট হলেও মাত্র ২ দিন ক্লাস করে কাজে চলে আসেন।

 

তারপর ১৯৯৫ সালে ইলন মাস্ক তার ছোট ভাই কিম্বল এবং গ্রেগ কৌরি ইনভেস্টরদের সাথে zip2 নামক একটি অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। অবশ্য zip2 প্রতিষ্ঠার আগে কয়েক জায়গায় চাকুরির জন্য আবেদন করেছিলেন এবং প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। ১৯৯৯ সালে ৩০৭ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে zip2 বিক্রি করে দেন। তারপর এই মুলধনকে পুজি করে প্রতিষ্ঠা করেন x.com। এই x.com পরে paypal এর সাথে মিলে যায়। তাই অনেকেই ইলন মাস্ককে পেপাল এর সহ প্রতিষ্ঠাতা বলে থাকেন।

x.com মূলত অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম। এদিকে paypal ও একই ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। কিন্তু বাজারে x.com এর চেয়ে paypal বেশ এগিয়ে ছিল। এক হওয়ার আগে বাজারে এদের মধ্যে বেশ প্রতিদ্ধন্দিতা ছিল। পরে ebay এর কাছে ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরে বিনিময়ে paypal বিক্রিত হয়ে যায়।

ইলন মাস্ক ২০০২ সালের মে মাসে প্রতিষ্ঠা করেন spacex। ইলন মাস্কের এই প্রতিষ্ঠান এখনও সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি মূলত মহাকাশে কোনো স্যাটেলাইট প্রেরনে কাজ করে। এমনকি বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান spacex প্রেরন করেছিল। মহাকাশে কোনো কিছু পাঠাতে যে খরচ লাগে তা অনেকটা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয় spacex। বর্তমানে তারা একই রকেট কিভাবে বারবার ব্যবহার করা যায় সেটার ট্রায়াল পর্যায়ে আছে।

 

বর্তমানে ইলন মাস্ক বিখ্যাত গাড়ি নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে আছেন। টেসলার যাত্রা শুরু হয় ২০০৩ সালে। ২০০৪ সালে ইলন মাস্ক টেসলায় বিনিয়োগ করেন এবং পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন। টেসলার বিখ্যাত হওয়ার পিছনে ইলেকট্রিক কারের ভুমিকা সবচেয়ে বেশি। মাস্কের দূরদর্শিতাই মূলত টেসলাকে সফলতার পর্যায়ে নিয়ে যায়।

তারপর তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন সোলারসিটি। এটা মূলত সৌর পদ্ধতিতে পরিবেশবান্ধব উপায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে থাকে। বিদ্যুতের চাহিদার বড় একটি অংশ সোলারসিটি পূরন করে থাকে।

তার আরেকটি সম্ভাবনাময় প্রজেক্টের নাম হল হাইপারলুপ। হাইপারলুপ পদ্ধতিতে মানুষের যাতায়াত আরও সহজ হবে। হাইপারলুপ পদ্ধতিতে মূলত একটি বায়ুশুন্য নলের মধ্য দিয়ে একটি যানবাহন চলবে। যার গতি অনেক বেশি থাকবে। কোনো পৃষ্ট এবং বায়ুর সংস্পর্শে থাকবেনা ফলে ঘর্ষন কম থাকবে এবং কম জালানির প্রয়োজন হবে। তাই এটি পরিবেশবান্ধব। এটি পরিপূর্ন ভাবে এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। 

ইলন মাস্কের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের কথা না বললেই নয়। সেটা হল নিউরোলিঙ্ক। নিউরোটেকনোলজি নিয়ে কাজ করার লক্ষে ২০১৬ সালে ইলন মাস্ক নিউরোলিঙ্কের সহ-প্রতিষ্ঠা করেন। এটি মূলত মানব মস্তিষ্কের সাথে মেশিনের সম্পর্ককে আরও উন্নত করবে। যা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন প্রযুক্তিতে বড় পরিবর্তন আনবে।

 

একটা বিষয় খেয়াল করবেন যে ইলন মাস্কের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান পরিবেশ বান্ধব। টেসলা, স্পেসএক্স, সোলারসিটি, হাইপারলুপ এসবই পরিবেশ বান্ধব প্রতিষ্ঠান। উল্লেখিত প্রতিষ্ঠান ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সাথে তিনি জড়িয়ে আছেন। তিনি বর্তমানে মঙ্গলগ্রহে মানব বসতি স্থাপনের লক্ষেও কাজ করে যাচ্ছেন।

এভাবে তিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ধনীর খেতাব অর্জন করেন। ২০২১ সালের শুরুর দিকটায় ইলন মাস্ক কয়েকদিনের জন্য শীর্ষে থাকা জেফ বেজোসকে পিছনে ফেলে শীর্ষস্থান অর্জন করেন। পরে অবশ্য আবার ২য় স্থানে চলে আসেন।

 

আজকের আলোচনা নিয়ে কোন মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।

ধন্যবাদ।

বিস্তারিত
একুরিয়ামের ব্যবসা শুরু করবেন যেভাবে

শখের বসে বাসায় একুরিয়ামে মাছ পালন স্বাভাবিক একটি বিষয়। একুরিয়াম বাসার সৌন্দর্যও বাড়ায়। যার কারনে বর্তমান সময়টাতে বাসায় একুরিয়াম রাখার প্রবনতাও দিন দিন বাড়ছে। সেই সাথে একুরিয়ামের ব্যবসার প্রসারতাও বাড়ছে। আজ আমরা একুরিয়ামের ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করব। আজকের আলোচনার শিরোনামগুলো তুলে ধরছি…

১. একুরিয়ামের ব্যবসা কেন করবেন?

২. কিভাবে একুরিয়ামের ব্যবসা শুরু করবেন?

৩. একুরিয়ামের জন্য মাছের তালিকা

৪. মাছ বা অন্যান্য উপাদান পাইকারি কিনবেন কোথা থেকে?

৫. একুরিয়ামের ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা পুঁজি লাগে?

৬. একুরিয়ামের ব্যবসাটিকে বড় পর্যায়ে নিয়ে যেতে করনীয় কি?

৭. এই ব্যবসার পাশাপাশি অন্য কি কি ব্যবসা করা যাবে?

 

এবার মূল আলোচনায় আসি…

১. একুরিয়ামের ব্যবসা কেন করবেন?

একুরিয়ামের ব্যবসা করার সবচেয়ে বড় কারন হল এর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়া। এখন মানুষ পোষা কুকুর, বিড়াল বা পোষা পাখি পালনের জন্য বেশি আগ্রহী। বাসার সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য বা বাসায় সামুদ্রিক একটা ছোয়া পেতে অনেকেই নিয়ে আসছেন একুরিয়াম। শহরের বাসাগুলোতে প্রায়ই পোষা কুকুর, বিড়াল বা বারান্দায় পাখি বা একুরিয়াম দেখা যায়। এখন হাজারখানিক টাকা হলেই বাসায় একটা একুরিয়াম আনা যায়। তাই মধ্যবিত্তদের মাঝেও এর ভাল চাহিদা রয়েছে। সাধারনত ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা দামের একুরিয়াম বাংলাদেশের বাজারে বেচাকেনা হয়। আবার একুরিয়ামের কাস্টমার দোকানে শুধু একুরিয়াম কিনতেই আসে না। মাছ, মাছের খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসও কিনতে আসে। সাধারনত একুরিয়ামে যেসব মাছ পালন করা হয় সেগুলো বিদেশি জাতের মাছ। একটা সময়ে এসব মাছের অনেক দাম থাকলেও এখন এখন সাধ্যের মধ্যে।  অনেকে আবার এত দাম দিয়ে একুরিয়াম না কিনে ছোট জার কিনেন এবং সেগুলোতে ছোট আকারের মাছ পালন করে থাকেন। শহর ছড়িয়ে গ্রামেও বিভিন্ন বাড়িতে এখন একুরিয়ামের দেখা মিলে।

অর্থাৎ বর্তমানে একুরিয়ামের বাজার সম্ভাবনাময় একটি বাজার। তাই আপনার একুরিয়ামের ব্যবসা করা উচিত।

 

২. কিভাবে একুরিয়ামের ব্যবসা শুরু করবেন?

একুরিয়ামের ব্যবসা শুরু করার আগে সর্বপ্রথম দেখে নিবেন যেখানে ব্যবসাটি করবেন সেখানে একুরিয়ামের চাহিদা আছে কিনা। যদি আপনি প্রত্যন্ত গ্রামে এই ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনার জন্য পরামর্শ থাকবে আপনি অন্যান্য ব্যবসার আইডিয়াগুলো দেখতে পারেন। আপনার এলাকায় যদি একুরিয়ামের চাহিদা থাকে তাহলে দোকানের জন্য স্থান নির্বাচন করবেন। লোকসমাগম বেশি এমন স্থানে একুরিয়ামের দোকান দেওয়ার চেষ্টা করবেন। মেইন রোডের পাশে হলে ভালো হয়। দোকান ঠিক করার পর দোকানে ফার্নিচার সেট করবেন। ফার্নিচারগুলোর মধ্যে নিজের জন্য বড় দুটি একুরিয়াম রাখবেন যেখানে আপনার মাছগুলো রাখবেন। তারপর বিক্রির জন্য কয়েকটি একুরিয়াম বানিয়ে নিবেন। ১ থকে ৫ হাজার টাকা দামের একুরিয়াম দিয়ে শুরু করবেন। পাশাপাশি ছোট জার গুলোও আনবেন। মাছও নিয়ে আসবেন সাথে একুরিয়ামের জন্য পাথর, এয়ার মটর, ফিল্টার, রাবারের ফ্লেক্সিবল পাইপ ইত্যাদিও নিয়ে আসবেন। একুরিয়াম আপনি নিজে তৈরি করতে পারেন। একুরিয়ামের নিচে যে কাঠের ফার্নিচার থাকে সেটা তৈরির জন্য কোনো কাঠমিস্ত্রি বা ফার্নিচার ব্যবসায়িদের সাথে কথা বলে নিতে পারেন। তাদের সাথে একটা চুক্তি করে নিবেন। আর উপরের কাচের অংশ আপনি নিজেই বানিয়ে নিতে পারবেন। তারপর প্রচার শুরু করে দিবেন।

৩. একুরিয়ামের জন্য মাছের তালিকা

একটু আগেই বলেছি একুরিয়ামের মাছগুলো মূলত বিদেশি জাতের। বাংলাদেশে একুরিয়ামের জন্য যেসকল মাছের চাহিদা বেশি সেগুলোর তালিকা তুলে ধরছি…

·        গোল্ডফিশ

·        গাপ্পি

·        এঞ্জেল

·        মলি

·        ক্যাট ফিস

·        টেট্রা জেব্রা

·        টাইগার শার্ক

·        সিল্ভার শার্ক

·        রোজি বার্ব

·        টাইগার বার্ব

·        গ্লাস ফিশ

·        অ্যালিফেন্ট নোজ

·        সাকিং ক্যাট

·        ফ্লাওয়ার হর্ন

·        ব্লু আকড়া

·        ফাইটিং ফিশ

·        সোর্ড টেইল


উপরে উল্লেখিত মাছগুলো ছাড়াও দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ একুরিয়ামগুলোতে শোভা পায়। সেগুলোর তালিকাও তুলে ধরলাম…

·        টেংরা

·        খলিশা

·        পুটি

·        চান্দা

·        বায়িং

·        মলা

·        চিংড়ি জাতীয় ছোট মাছ।

দেশীয় মাছগুলো একুরিয়ামের জন্য দেশীয় মানুষের চেয়ে বেশি কদর করে ইউরোপের মানুষেরা। বাংলাদেশ থেকে অনেকেই একুরিয়ামের মাছ হিসেবে উল্লেখিত মাছগুলো রপ্তানি করে থাকে।

৪. মাছ বা অন্যান্য উপাদান পাইকারি কিনবেন কোথা থেকে?

একুরিয়াম, একুরিয়ামের মাছ বা অন্যান্য উপাদানের জন্য ঢাকায় মুলত ২টি পাইকারি বাজার রয়েছে। একটি হল কাটাবন। আরেকটি হল মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট। গুলশানেও একুরিয়ামের পাইকারি মার্কেট আছে। পাইকারি মার্কেট থেকে এসব মাছ কিনতে গেলে নানা ধরনের সমস্যা হয়। তারা ভাল মাছ আপনাকে নাও দিতে পারে। যদি বুঝে কিনতে পারেন তাহলে কিনতে পারেন। তাছাড়া বিভিন্ন এলাকায় অনেকেই এ ধরনের মাছের চাষ করে থাকেন, তাদের থেকে কিনতে পারেন। তাছাড়া আমাদের এই ওয়েবসাইটেও অনেকে পাইকারি একুরিয়ামের মাছ সরবরাহ করেন। তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

৫. একুরিয়ামের ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা পুঁজি লাগে?

কোন ব্যবসায় কত টাকা পুঁজি লাগে সেটা মূলত নির্ভর করে কোথায় এবং কেমন পরিসরে ব্যবসাটি শুরু করবেন তার উপর। তাই দোকানের ভাড়া এবং অ্যাডভান্স ছাড়াই আমরা হিসাব করব। আর দোকানের জন্য প্রথম তিন চার মাসের ভাড়া আগেই রেখে দিবেন। ওই টাকাটাও আমরা হিসাবের বাইরে রাখব। কারন এভাবে দোকান দিয়ে ব্যবসা করতে গেলে প্রথম লাভ উঠতে কয়েক মাস পর্যন্ত লেগে যায়।

একুরিয়ামের ব্যবসা করতে প্রথমে ফার্নিচার বাবদ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হবে। আর মাছসহ অন্যান্য জিনিস কিনতে ধরুন আরও ১৫ হাজার টাকা। সরকারি বিভিন্ন বৈধ কাগজপত্রের জন্য আপনাকে আরও ২ থাকে ৫ হাজার টাকা খরচ করা লাগতে পারে। সবমিলিয়ে দোকানের এডভান্স আর প্রথম ৩ থেকে ৪ মাসের ভাড়া ছাড়া ৪০ হাজার টাকা হলেই আপনি একুরিয়ামের ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

৬. একুরিয়ামের ব্যবসাটিকে বড় পর্যায়ে নিয়ে যেতে করনীয় কি?

আপনাকে শুধু একুরিয়াম আর একুরিয়ামের মাছ, যন্ত্রপাতি বিক্রি করলেই হবে না। এর পাশাপাশি আপনাকে এই সংক্রান্ত আরও অন্যান্য ব্যবসায় জড়াতে হবে। যেমন আপনি নিজে একুরিয়ামের মাছ চাষ করতে পারেন। তারপর এই মাছগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করবেন। বাংলাদেশের অনেক ব্যবসায়ীরাই এভাবে মাছ চাষ করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে থাকে। আপনিও করতে পারেন। তবে প্রথমেই মাছ চাষের পর্যায়ে না যাওয়াটাই ভালো। অফলাইনে ব্যবসার পাশাপাশি অনলাইনেও ব্যবসা করবেন। ফেসবুকে পেজ খুলে সেখানে নিয়মিত আপডেট দিবেন। কাস্টমারদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করবেন। আপনি আপনার পন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটেও বিক্রি করতে পারেন। এখানে যে কোনো ধরনের পন্য পাইকারি বা খুচরা বেচা কেনা করা যায়। সেলার একাউন্ট খুলতে বা পন্য বিক্রি করতে কোনো প্রকার চার্জ বা ফি প্রদান করতে হয় না।

 

৭. এই ব্যবসার পাশাপাশি অন্য কি কি ব্যবসা করা যাবে?

এই ব্যবসার পাশাপাশি আরও নানা ধরনের ব্যবসা করা যায়। যেমন পাখির ব্যবসা। কবুতরের ব্যবসা। পাখির ব্যবসা করলে একপর্যায়ে আপনি পাখির খামারও দিতে পারবেন। পাখি আর মাছ যদি একই দোকানে বিক্রি করেন তাহলে আপনি অতিরিক্ত কিছু কাস্টমার পাবেন। অনেকেই তাদের বাসার বারান্দায় পাখি পালন করে থাকে। যেসব পাখি এভাবে পালন করা হয় সেগুলো মূলত বিদেশি জাতের পাখি। এসব পাখির মধ্যে লাভ বার্ড, ককাটেইল, ফিঞ্চ, বাজরিগার, রেড লরি উল্যেখযোগ্য। আর পাখির ব্যবসা কিভাবে করবেন তা নিয়ে আমাদের আরেকটি আর্টিকেল আছে। পড়ার অনুরোধ থাকবে।

 

আবার আপনি চাইলে দোকান দেওয়া ছাড়াই বাসায় একুরিয়াম থেকে ব্যবসা করতে পারেন। বাংলাদেশে অনেকেই বিশেষ করে ছাত্ররা শুধু বাসায় একুরিয়ামে মাছ পালন করে প্রতি মাসে ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করছে। তারা সাধারনভাবেই বাসায় মাছ পালন করে। আর একুরিয়ামের এসব মাছ ঘন ঘন বাচ্চা দেয়। অতিরিক্ত মাছ বিক্রি করে বাসা থেকেই টাকা আয় করা যায়। এভাবে বাসায় পাখি পালন করেও ব্যবসা করা যায়। পাখি ও একুরিয়ামে মাছ দুটি একসাথেও পালন করে টাকা আয় করা যায়।

 

আজকের আলোচনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।

ধন্যবাদ।

বিস্তারিত
রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করবেন যেভাবে

বর্তমানে বাংলাদেশে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আগে রেস্টুরেন্টের চাহিদা সীমিত থাকলেও, এখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ভিন্নধর্মী খাবারের প্রতি আকর্ষণের কারণে ব্যবসার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। মানুষ রেস্টুরেন্টে শুধুমাত্র খেতে নয়, পরিবার বা বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা দিতে, ব্যবসায়িক মিটিং করতে এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একত্রিত হতে আসে। এই প্রবণতা বাংলাদেশের রেস্টুরেন্ট শিল্পকে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

 

কেন রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করবেন?

রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করার প্রধান কারণ হচ্ছে এর বিশাল চাহিদা এবং ক্রমবর্ধমান বাজার। বর্তমানে শহরের রাস্তায় বা বাজারের আশেপাশে প্রচুর রেস্টুরেন্ট দেখা গেলেও, অধিকাংশের মান গ্রাহকদের সন্তুষ্ট করতে পারে না। তাই, মানসম্মত খাবার আকর্ষণীয় পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারলে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

 

তবে, ব্যবসা ঝুঁকিপূর্ণও হতে পারে। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা না থাকলে এবং পর্যাপ্ত পুঁজির অভাব থাকলে, রেস্টুরেন্ট ব্যবসা ক্ষতির দিকে যেতে পারে। তাই, ব্যবসায় নামার আগে সঠিক পরিকল্পনা এবং দীর্ঘমেয়াদী চিন্তাভাবনা জরুরি।

 

রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করার ধাপসমূহ

. পুঁজি নির্ধারণ করুন

প্রথম ধাপে, আপনার পুঁজির পরিমাণ নির্ধারণ করা জরুরি। আপনি কী পরিমাণ পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করবেন, তা নির্ধারণ করে তারপর ব্যবসার পরিকল্পনা তৈরি করুন। রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় কমপক্ষে ১০-১৫ লাখ টাকার প্রয়োজন হতে পারে, তবে এটি আপনার স্থান এবং রেস্টুরেন্টের আকার অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।

 

. স্থান নির্বাচন

রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সফলতার অন্যতম প্রধান শর্ত হলো সঠিক স্থান নির্বাচন। স্থান নির্বাচন করার সময় নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখুন:

 লাইভ বেকারি ব্যবসা করবেন? কিভাবে শুরু করবেন...

  • মানুষের চলাচল বেশি হয় এমন স্থান।
  • পার্কিং সুবিধা।
  • প্রধান সড়কের পাশের অবস্থান।
  • মার্কেটের কাছাকাছি অবস্থান।
  • পুঁজির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাড়া।

যেখানে বেশি মানুষ আসে এবং খাবারের চাহিদা বেশি, সেখানে রেস্টুরেন্ট খোলার সম্ভাবনা সফলতার বেশি। আপনার টার্গেট এলাকায় ইতিমধ্যে কতগুলো রেস্টুরেন্ট আছে এবং সেগুলোর মান ব্যবসা কেমন চলছে তা যাচাই করে দেখুন। এবং আপনার টার্গেট এলাকায় যদি অন্য রেস্টুরেন্ট থাকে, তবে তাদের ব্যবসার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন। যদি তারা লোকসানে থাকে, তবে সেটির কারণ বিশ্লেষণ করুন এবং সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনার রেস্টুরেন্ট পরিচালনার সময় সেসব বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন।

 

. খাবারের ধরন নির্ধারণ করুন

আপনার রেস্টুরেন্টে কোন ধরনের খাবার পরিবেশন করবেন তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখুন। বর্তমানে চাইনিজ, থাই, ইন্ডিয়ান, দেশীয় খাবার ছাড়াও এরাবিক খাবারের চাহিদা বেড়েছে। আপনার এলাকার চাহিদা অনুযায়ী মেনু প্রস্তুত করুন। একাধিক খাবারের অপশন রাখলে গ্রাহক আকর্ষণ করার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

খাবারের মধ্যে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করবেন। আপনার আশেপাশের অন্য রেস্টুরেন্টে নেই এমন আইটেম আনার চেষ্টা করবেন।

 

. রেস্টুরেন্টের সাজসজ্জা

রেস্টুরেন্টের ডেকোরেশন এবং পরিবেশ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার একটি বড় মাধ্যম। আপনার রেস্টুরেন্ট এমনভাবে সাজান যেন এটি ক্যামেরা-বান্ধব হয়। আজকাল বেশিরভাগ গ্রাহক রেস্টুরেন্টে এসে ছবি তোলে এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে। তাই, আধুনিক চোখধাঁধানো ইন্টেরিয়র ডিজাইনের দিকে খেয়াল রাখুন।

 

ডেকোরেশন করার সময় টেবিলের পাশে কিছু বই বা ম্যাগাজিন রাখতে পারেন, যাতে গ্রাহকরা খাবার আসার সময় পড়ার মতো কিছু পায়। এছাড়া, রেস্টুরেন্টের পরিবেশ যেন পরিচ্ছন্ন স্বস্তিদায়ক হয়।

 

. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ

রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করতে হলে কিছু বৈধ কাগজপত্র প্রয়োজন। সেগুলো হলো:

 

ট্রেড লাইসেন্স: সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহ করা যাবে।

টিন সার্টিফিকেট: অনলাইনে আবেদন করতে পারেন।

মূসক/ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন: এটি রাজস্ব বোর্ড থেকে নিতে হবে।

এই কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করতে কিছু ফি লাগতে পারে, যা আপনার বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করে নিবেন।

 

কর্মচারী নিয়োগ

রেস্টুরেন্টের সাফল্যের একটি বড় অংশ নির্ভর করে দক্ষ কর্মচারীর উপর। তাই রাঁধুনি, ম্যানেজার, সার্ভ বয়, এবং পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ করার সময় তাদের দক্ষতা যাচাই করে নিন। রাঁধুনির গুণমান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ রেস্টুরেন্টের খাবার কাস্টমারকে বারবার ফিরে আসতে বাধ্য করে।

 

মার্কেটিং এবং প্রচারণা

আপনার রেস্টুরেন্টের প্রসার ঘটানোর জন্য শুরুতেই সোশ্যাল মিডিয়া, বিশেষ করে ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন। আকর্ষণীয় ছবি ইউনিক অফার দিয়ে প্রচারণা চালান। বিশেষ ছাড় বা ইভেন্ট প্ল্যান করলে তা প্রচার করতে ভুলবেন না।

বিভিন্ন ডিসকাউন্ট অফার দিবেন। এবং এই ডিসকাউন্ট অফার ফেসবুক ইনস্টাগ্রামে ছড়িয়ে দিবেন। এক্ষেত্রে পোস্ট বুস্টিং করতে হবে। অথবা আপনাদের অফারের কথা তার টাইমলাইনে শেয়ার করলে সে পাবে এক্সট্রা ডিসকাউন্ট। এতে আরও বেশি প্রচার হবে।

 বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা যায় এমন পন্য এবং গন্তব্য দেশ..

প্রথম মাস থেকে বছর লোকসানের প্রস্তুতি

প্রথমদিকে আপনার রেস্টুরেন্টে কাস্টমারের অভাব হতে পারে এবং আপনি লোকসানে চলতে পারেন। এই সময়ের জন্য অতিরিক্ত কিছু টাকা হাতে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। মানসম্মত খাবার এবং সেবা নিশ্চিত করে সময়ের সাথে সাথে লোকসান কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করুন।

রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা লাগবে?

এই ব্যবসা শুরু করতে টাকা লাগতে পারে তা নির্ভর করে আপনি কোথায় রেস্টুরেন্ট দিচ্ছেন কত বড় আকারে দিচ্ছেন তার উপর। তারপরও ধারনা দেওয়ার জন্য আনুমানিক খরচ তুলে ধরলাম।

১. ভাড়া ও ডেকোরেশন:

স্থান ভাড়া:

আপনার রেস্টুরেন্টের অবস্থানের ওপর ভাড়ার পরিমাণ নির্ভর করবে। ঢাকার মতো শহরে একটি ভালো জায়গায় রেস্টুরেন্ট স্থাপনের জন্য মাসিক ভাড়া হতে পারে ৫০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া, কিছু ক্ষেত্রে ৩-৬ মাসের অগ্রিম ভাড়া দিতে হতে পারে, যা হতে পারে ৩ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত।

 

ডেকোরেশন ও ইন্টেরিয়র ডিজাইন:

রেস্টুরেন্টের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জার জন্য সাধারণত ৩ থেকে ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন হতে পারে। এটি নির্ভর করবে আপনার রেস্টুরেন্টের আকার এবং আপনি কতটা আকর্ষণীয়ভাবে সাজাতে চান তার উপর।

 

২. ফার্নিচার ও সরঞ্জামাদি:

ফার্নিচার:

টেবিল, চেয়ার, কাউন্টার ইত্যাদি ফার্নিচারের জন্য প্রাথমিকভাবে ২-৫ লাখ টাকা প্রয়োজন হতে পারে।

 

কিচেন সরঞ্জামাদি:

কিচেনের জন্য রান্নার চুলা, ফ্রিজ, ওভেন, ব্লেন্ডার, কিচেন টুলস ইত্যাদি কিনতে প্রায় ২-৪ লাখ টাকা প্রয়োজন হতে পারে।

 

৩. খাবার উপকরণ ও মেনু প্রস্তুতি:

প্রাথমিকভাবে ৫০,০০০ থেকে ১ লাখ টাকার কাঁচামাল লাগতে পারে। এটি আপনার মেনুর খাবারের পরিমাণ এবং কাস্টমারের চাহিদার ওপর নির্ভর করে।

৪. লাইসেন্স ও কাগজপত্র:

ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট এবং ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন সহ বিভিন্ন কাগজপত্রের জন্য প্রায় ১৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা প্রয়োজন হতে পারে।

৫. কর্মচারী বেতন:

প্রতিমাসে কর্মচারীদের বেতন হিসেবে ৫০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা লাগতে পারে। কর্মচারীর সংখ্যা এবং তাদের দক্ষতার উপর ভিত্তি করে এই খরচ বাড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একজন দক্ষ রাঁধুনির বেতন ২০,০০০-৩০,০০০ টাকা হতে পারে, আর ম্যানেজারের বেতন ২৫,০০০-৪০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

৬. বিপণন ও প্রচারণা:

প্রথমদিকে আপনার রেস্টুরেন্টের প্রচারণার জন্য ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা ব্যয় করতে হতে পারে। এই বাজেটের মাধ্যমে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে বিজ্ঞাপন দেওয়া এবং বিশেষ ছাড়ের অফার করতে পারেন।

মোট খরচ:

সব মিলিয়ে একটি ছোট বা মাঝারি মানের রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করতে মোট খরচ হতে পারে প্রায় ১০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। তবে এই খরচ ব্যবসা আকার এবং স্থানভেদে কম বেশি হতে পারে।

সাফল্যের মূল চাবিকাঠি

রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় সফলতা পাওয়া নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ে:

 

  • সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া।
  • পরিশ্রম করা।
  • কর্মচারীদের সঠিকভাবে পরিচালনা করা।
  • সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা থাকা।

এই ব্যবসায় সফল হতে গেলে ধৈর্য, কৌশল এবং সঠিক নেতৃত্ব প্রয়োজন। দীর্ঘমেয়াদে সঠিক পরিকল্পনা পরিশ্রম করতে পারলে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় আপনার সাফল্য নিশ্চিত।

 অটোরিকশা ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে?

আজকের আলোচনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

ধন্যবাদ।

 

বিস্তারিত
Alibaba & Import Export Expert

আমদানি,রপ্তানি,আলিবাবা নিয়ে যেকোনো সমস্যায় আমাকে ফেসবুকে মেসেজ করুন।

এখানে ক্লিক করুন
2017 © 2024 eibbuy. All Rights Reserved.
Developed By Fluttertune react js next js