উদ্যোক্তা অনেকেই হয়ে থাকেন কিন্তু সফল উদ্যোক্তা হতে পারে খুব কম
ব্যাক্তি। কারন সফল উদ্যোক্তা হতে লাগে বিশেষ ধরনের কৌশল। প্রত্যেক সফল
উদ্যোক্তার আছে নিজস্ব কিছু কৌশল জা দিয়ে সে সফল উদ্যোক্তা হতে পেরেছেন।
একজন সফল উদ্যোক্তা হিসাবে আপনি ব্যবসা শুরু করতে চান কিন্তু বুঝতে পারছেন
না যে কিভাবে কোথা থেকে সফল উদ্যোক্তা হিসাবে ব্যবসা শুরু করবেন, চিন্তার
কোনও কারণ নেই। আজকের পোস্টে আমি দেখাবো কিভাবে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া
যাবে।
বর্তমান আমাদের দেশে অর্থনৈতিক বাস্তবতা এমন যে অধিকাংশ
মানুষ তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি খুজে পায়না। আবার অনেকেই চাকরি খুঁজে
পেলেও সেটা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে করতে হয়। ফলে এসব মানুষ চান যে কারও
অধীনে কাজ করার চেয়ে সফল উদ্যোক্তা হয়ে নিজেরাই নিজেদের পছন্দমত ব্যবসা করে
নিজেদের ভাগ্য গড়বেন। কারণ একজন সফল উদ্যোক্তা যখন এ ধরনের ব্যবসা শুরু
করেন তখন সেখানে তার ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা এবং জীবনের লক্ষ্যে প্রতিফলিত হয়।
একজন
ব্যাক্তি সফল উদ্যোক্তা হওয়ার প্রধান শর্ত হচ্ছে নিজের আত্মবিশ্বাস,
মানসিক ভাবে স্থিতিশীল, নিরলস প্রচেষ্টা, একটি নির্দিষ্ট লক্ষ নিয়ে কাজ
শুরু করা। তবে একজন ব্যাক্তি সফল উদ্যোক্তা হওয়ার বিশেষ কোনও মুহূর্ত নেই,
নেই কোন কাল। সে যে কোন সময় শুরু করে সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন। সফল
উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য আছে নানা কৌশল আছে। আজকে সফল উদ্যোক্তা হবার জন্যে
কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল বর্ণনা করবো । জা আপনাদের সফল উদ্যোক্তা হতে
সাহায্য করবে।
১. আপনার বর্তমান অবস্থান নিয়ে আপনি সন্তুষ্ট কিনা যাচাই করুন।
একজন
সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে সবকিছু ত্যাগ করে আপনার কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের
পিছনে ছুটতে হবে। এজন্য আপনাকে আপনার বর্তমান অবস্থা দেখতে হবে । আপনি যদি
আপনার বর্তমান অবস্থা নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকেন, তাহলে নতুন কোন উদ্যোগ শুরু
করার আগে সেটা চিন্তা ভাবনা করে নিবেন । কারন অনেকেই ভালো অবস্থান রেখে সফল
উদ্যোক্তা হবার আসায় নতুন উদ্যোগ শুরু করে । ফলে তার বর্তমান চাহিদা আর
উদ্যোগ থেকে আয়ের সামাঞ্জস্যতা থাকেনা। এজন্য সে পারেনা সফল উদ্যোক্তা
হতে। ফলে সে তার ব্যথতার দায় চাপায় দেশের অর্থনীতি, বন্ধু-বান্ধব বা
পরিবার-পরিজনদের উপর । কিন্তু তাদের উপর দোষ নিয়ে কোনও লাভ হয়না। কারন সফল
উদ্যোক্তা হতে নতুন উদ্যোগের সিদ্ধান্ত নেবার আগেই তাকে তার বর্তমান
অবস্থান নিয়ে চিন্তা করা দরকার ছিলো । সুতরং, আপনি যদি সফল উদ্যোক্তা হতে
চান তবে উদ্যোক্তা হবার আগেই ভাবুন শুরু করবেন কিনা। শুরু করলে চালিয়ে যেতে
পারবেন কিনা ?
২. সঠিক ব্যবসা নির্বাচন করা।
একজন সফল
উদ্যোক্তা হতে হলে অবশ্যই আপনাকে সঠিক ব্যবসা নির্বাচন করতে হবে। আপনাকে
প্রচুর খুজতে হবে । ব্যবসা নিয়ে প্রচুর পড়াশুনা করতে হবে। এবার নিজের
চরিত্রের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানুন। একজন সফল উদ্যোক্তা হবার আগে জানতে
হবে আপনার নিজের আবেগ, অনুভুতি, কর্মদক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং সামাজিক
ব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে। সফল উদ্যোক্তা হবার আগে নিজেকে
জিজ্ঞেস করুন, কোন কাজটা আপনাকে কর্মশক্তি এবং করমস্প্রিহা দান করে যখন
আপনি ক্লান্ত থাকেন। এমন একটা ব্যবসা নির্বাচন করুন যে ব্যবসাটা আপনার ভালো
লাগবে ভালোবাসবেন। একজন সফল উদ্যোক্তা তার কাজকে ভালোবেসে করতে হবে।
বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন বলেন, সফল উদ্যোক্তা ওই কাজটিকেই
বেছে নেন যে কাজটি করলে তার কাছে সেটা খেলা মনে হয় এবং কাজ করতে তার কাছে
সময়ের কোন হিসাব থাকেনা। একজন সফল উদ্যোক্তার জন্য কোন ব্যবসা উপযুক্ত হবে
টা বোঝার কয়েকটি উপায় আছে ।
প্রথমেই আপনি যা জানেন তাই কাজে লাগাতে
হবে। যেমন আপনি মানুষকে রান্না করে খাওয়াতে ভালবাসেন । অতীতে নিজের জন্য
বা অন্য মানুষের আপনি অনেক কিছু রান্না করেছেন, আর তারা খেয়ে বাহবা দিয়েছে।
এবার চিন্তা করুন আপনার এই রান্না করার গুনকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে ব্যবসা
শুরু করা যায় । আপানর কোন কোন রান্না অন্যদের কাছে ভালো লাগে , সেগুলো
সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। অন্য মানুষের চাহিদা সম্পর্কে জানুন। গতানুগতিক
ব্যবসাই নয়, প্রত্যেকটি পণ্যের বাজারেই নতুন কিছু না কিছু যোগ করা সম্ভব।
সেই ফাঁকটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। তাছাড়া চিন্তা করুন কিভাবে নতুন
কোনও আইডিয়া তৈরি করা যায়। অনলাইনে অফলাইনে প্রচুর খুজুন । নিজেকে
শিক্ষার্থী হিসেবে চিন্তা করুন নতুন নতুন কিছু শিখার চেষ্টা করুন।
৩. সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করা ।
সফল
উদ্যোক্তা হবার জন্যে আপানর দরকার সঠিক পরিকল্পনা। অধিকাংশ উদ্যোক্তাদের
ব্যর্থতার কারণ হচ্ছে তার উদ্যোগের পরিপূর্ণ পরিকল্পনার অভাব। একজন সফল
উদ্যোক্তা হিসাবে উদ্যোগ শুরু করার আগে একটি পরিকল্পনা দাড় করাতে হবে । এই
পরিকল্পনা আপনাকে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিবে এবং আপনার
আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। পরিকল্পনাটি একটি খাতায় লিখুন। আপনার ব্যবসার
উদ্দেশ্য, ব্যবসায়িক কৌশল এবং ভবিষ্যৎ পদক্ষেপগুলো এই পরিকল্পনায় লিখে
রাখবেন। আপনার এই ব্যবসায়িক পরিকল্পনাটি ১ পেজের বেশি হওয়ার প্রয়োজন নেই।
এইকজন
সফল উদ্যোক্তা হিসাবে আপনার পরিকল্পনায় নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর থাকবে
। যেমন আপনি কি পণ্য বা সেবা তৈরী করবেন? আপনার পণ্যের ভোক্তা কারা ?
ক্রেতাকে কি ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিশ্রুতি দিচ্চেন ? আপনার ব্যবসার অভীষ্ট
লক্ষ্যে পৌঁছানোর উদ্দেশ্য, কৌশল এবং কর্ম পরিকল্পনা কি?
সফল উদ্যোক্তা হিসাবে আপনাকে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে একটা কর্ম পরিকল্পনা করতে হবে। এর পর শুরু করতে হবে আপনার ব্যবসা।
৪. ক্রেতা নির্ধারণ করা
একজন
সফল উদ্যোক্তা হবার জন্য ব্যবসায়ে টাকা কোন টাকা ইনভেস্ট করার আগে
ক্রেতাদের চাহিদা নির্ণয় করার চেষ্টা করতে হবে। বাজারে অনেকেই আছেন যারা
এসব পণ্য সেল করে থাকেন। আপনার উৎপাদিত পণ্য আদতেও তারা ক্রয় করবে কিনা তা
খুঁতিয়ে দেখতে হবে। আপনার পণ্য বিক্রির বাজারের আয়তন আগে ঠিক করুন। আপনার
পণ্য ক্রেতারা কেন ক্রয় করবে তা ঠিক করুন। কারন বাজারে অনেক সাপ্লায়ের আর
সেলারা আছে। এবার বাজারের উপর প্রয়োজনীয় সমীক্ষা চালাতে হবে। এতে করে আপনি
ক্রেতার মানসিকতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এবার সে অনুযায়ী আপনার পণ্যের
বিজ্ঞাপন চালাতে হবে।
৫. অর্থায়নঃ
একজন সফল উদ্যোক্তা
হতে হলে আপনার উদ্যোগের জন্য অর্থায়নের সঠিক ব্যবস্থা করতে হবে। প্রত্যেকটি
সফল উদ্যোক্তার ব্যক্তিগত জীবন এবং ব্যবসা পরস্পর সংযুক্ত থাকে। ব্যবসা
শুরুর আগে নিজের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার বিস্তারিত বিবরণ তৈরি করুন এবং
প্রত্যেকটি আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখুন। আপনার ব্যবসায় বাইরের ইনভেস্ট জোগাড়
করার আগে নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী। কারন ব্যবসায়
আপনাকে ভালো পরিমাণে ইনভেস্ট না করলে বাহির থেকে ইনভেস্ট পাওয়া খুব কঠিন
হবে। সবাই চাইবে আপনার ইনভেস্ট কি রকম আছে। এর পর তারা ইনভেস্ট করতে আগ্রহী
হবে। এজন্য আপনাকে অনাবশ্যক খরচ কমাতে হবে আর প্রত্যেকটি টাকার উপযুক্ত
ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৬. পণ্য সাপ্লায়ের নেটওয়ার্ক তৈরি করা ।
একজন
সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে সঠিক পণ্য সাপ্লাই নিশ্চিত করতে হবে। কারন
ক্রয় করতে আপনি যদি কম দামে ক্রয় করতে না পারেন তবে বিক্রি করে লাভ করতে
পারবেন না । এছাড়া আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ার অবদানে অনেক গ্রুপে আপনি যুক্ত
থেকেও আপনার ব্যসবা বাড়াতে পারবেন। অনেকেই আছেন যারা সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে
সংযুক্ত থেকে বিশাল ব্যবসা গড়ে তুলেছেন। আপনাকেও এভাবে যুক্ত হতে হবে। এখন
করোনার কারনে অফলাইনের চেয়ে অনলাইনে ব্যবসা বেশী জমজমাট।
৭. সেবার মানোন্নয়ন করতে হবে।
একজন
সফল উদ্যোক্তা হতে চাইলে আপনার সেবার মানোন্নয়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করুন।
আপনি যতো বেশি ভালো সেবা দিতে সক্ষম হবেন ততো বেশি আয় করতে পারবেন। কারন
আজকাল মানুষ চায় পণ্যের সাথে বিক্রেতার ভালো ব্যবহার। এক্ষেত্রে আপনাকে
কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন আপনি ক্রতাকে আরো কি ধরনের উন্নত সেবা
দিতে পারেন? পণ্য ক্রয়ের সাথে সাথে আর কি সেবা দিয়ে ক্রেতাকে খুশী করতে
পারেন? ক্রেতার অভিযোগের উপর ভিত্তি করে আপনার পণ্য বা সেবার আরো বেশী
উন্নয়ন সম্ভব হবে কিনা ? এসব বিষয় নিয়ে কাজ করে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে
পারবেন।
৮. প্রকাশ্যে শেয়ার করুনঃ
সফল উদ্যোক্তা হবার
আরেকটি উপায় হলো আপনার ব্যবসাটি প্রকাশ্যে শেয়ার করতে হবে। সবাইকে জানাতে
হবে যে আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করেছেন। ব্যবসা মানে চুরি করা না । আপনি কি
ধরনের মানুষ এবং আপনার পেশা কি? সবার সাথে সে কথা কোন দ্বিধা ছাড়া প্রকাশ
করুন। মনে রাখতে হবে, সাফল্য ও ব্যর্থতা এই ২টি মিলেই ব্যবসা। প্রথমবার
সফলতা নাও আসতে পারে, তাই বলে এই না যে কখনও সফলতা আসবেনা। বিখ্যাত লেখক ও
প্রভাষক ন্যাপোলিয়ান হিল বলেছিলেন যে ৮০% উদ্যোক্তার ব্যর্থ হওয়ার কারণ
হচ্ছে হার মেনে নেয়া।
সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে আরো কিছু গুনের অধিকারী হতে হবে।
একটি
শিশু বার বার পরে যাওয়ার পরেই হাটতে শিখে। ব্যর্থতা থেকেই উপযুক্ত শিক্ষা
পাওয়া যায়। তাই ব্যর্থতাকে সহজভাবে নিন। মনে রাখবেন, এই ব্যর্থতা অস্থায়ী।
ধারাবাহিকভাবে আত্মনিয়োগের মাধ্যমে এই ব্যর্থতা অতিক্রম করা সম্ভব। এজন্য
চাই মানসিক শক্তি ও ধৈর্য। পৃথিবীতে যারা উন্নতির চরম শিখরে অবস্থান করছেন,
তাদের ওই অবস্থানের পিছনে রয়েছে হাজারো ব্যর্থতা এবং সেই ব্যর্থতা থেকে
শিক্ষা নিয়ে নতুন করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা।
ব্যবসার মালিকানা
আপনাকে স্বাধীনতা ও ক্ষমতায়ন প্রদান করতে পারে। একটি ব্যবসার মালিকানা
উদ্যোক্তাদেরকে নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গি
উপলব্দি ও অন্যান্য উদ্যোক্তাদের সাথে ভাল সম্পর্ক গঠনের সুযোগ প্রদান করে
থাকে। তাছাড়া এক্ষেত্রে উদ্যোক্তারা গ্রাহক ও বিক্রেতাদের সাথে দীর্ঘস্থায়ী
সম্পর্ক বিকাশেরও সুযোগ পেয়ে থাকেন। আর উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হওয়ার জন্য
কিছু বিশেষ গুণাবলী অর্জন করতে হয়। তাই আমরা আপনার জন্য কয়েকটি পরামর্শ
নিয়ে এসেছি যাতে আপনি উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হতে পারেন। নিচে তার বিবরণ
দেওয়া হল।
দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী হওয়া
অধ্যবসায়ই
চরিত্রের দৃঢ়তা। আপনি যদি একজন সফল উদ্যেক্তা হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই
অনুকরনীয়, অধ্যাবসায়ী আর পরিশ্রমী ব্যক্তি হতে হবে। বিশে^ এমন কোন
উদ্যোক্তা নেই যে তারা বিনা পরিশ্রমে সফল হয়েছেন। তাই আপনাকে অবশ্যই এই সব
গুনাবলী গুলো অর্জন করতে হবে।
নিজেকে চ্যালেঞ্জ করুন
সফল
উদ্যোক্তা হতে হলে আপনার নিজেকে নিজেই চ্যালেঞ্জ করতে হবে। আপনাকে এমন সব
উপায় খোজঁ করতে হবে যেন আপনি আপনার প্রতিদ্বন্ধী উদ্যোক্তাদের থেকে নিজেকে
সবার থেকে এগিয়ে রাখতে পারেন। নতুন এবং কঠিন কাজ করার জন্য নিজেকে সব সময়
প্রস্তুত রাখতে হবে এবং ক্রমাগত নতুন চ্যালেঞ্জ সমূহ গ্রহন করতে হবে।
আবেগ প্রবণ হওয়া
সাধারণ
ভাবে বলা যায় যে উৎসাহই আবেগ। যে কাজের প্রতি আপনার উৎসাহ থাকবে স্বাভাবিক
ভাবে সে কাজের প্রতি আপনার আবেগও থাকবে। আপনি যে কাজটি করতে পছন্দ করেন না
সে কাজটি করার কখনই চেষ্টা করবেন না। আপনি যে কাজটি করতে বেশি উৎসাহী হন
সেটিকেই আপনাকে বেছে নিতে হবে। উদ্যোক্তা হিসেবে আপনাকে দীর্ঘ ঘন্টা কাজ
করতে হবে।
তাই আপনাকে যে কাজের প্রতি আপনি সবচেয়ে বেশি উৎসাহী এমন
কাজটিই বেছে নিতে হবে। পৃথিবীর বেশির ভাগ সফল উদ্যোক্তাই এমন সব কাজ বিছি
নিয়েছেন যার প্রতি তাদের সবচেয়ে বেশি উৎসাহ রয়েছে।
ঝুঁকি নিন
প্রত্যেক
ব্যবসায়ের সাখে ঝুঁকি কথাটি জড়িত, যা ব্যবসার একটি অংশও বটে। আর প্রত্যেক
সফল উদ্যোক্তারাই জানেন যে ঝুঁকি ব্যতিত ব্যবসায় সফল হওয়া সম্ভব নয়। তাই
আপনাকে অবশ্যই ঝুঁকি নিয়েই কাজ করার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কিভাবে ঝুঁকি
নিয়ে কাজ করে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া যায় সেই বিষয়েও আপনার ধারণা থাকতে
হবে।
ভয় কমানো
ভয় কর্মের স্পৃহা ধ্বংস করে। যেহেতু
উদ্যোক্তাদের তাদের ব্যবসার সফলতার জন্য নতুন নতুন কাজের সাথে ঝুঁকি নিয়ে
কাজ করতে হয় সেহেতু তাদেরকে ভয় পেলে হবে না। আর আপনি যদি সফল হতে চান তাহলে
আপনাকে আত্মনির্ভরশীল হতে হবে এবং আপনাকে অবশ্যই ভয়কে জয় করে কাজে এগিয়ে
যেতে হবে। আপনাকে ভয়কে হ্রাস করার উপায় গুলো জানতে হবে। কখনো আপনি ভয়ের
জন্য পুরো কাজ থেকে পিছিয়ে যাবেন না। আপনাকে নিজের উপর বিশ্বাস রেখে কাজ
করতে হবে। আরো পরুনঃ তরুণ উদ্যোক্তা হিসাবে সফল হওয়ার ৯টি কার্যকারী উপায়
লক্ষ্যকে দৃষ্টিগোচর করুন
প্রত্যেক
ব্যবসার প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে সফলতা অর্জন। তাই আপনি যদি সফল উদ্যোক্তা
হতে চান তাহলে আপনাকেও একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। বিশ্বের
সব সফল উদ্যোক্তাদের দিকে নজর দিলে দেখা যায় যে তারা তাদের নির্দেষ্ট
পরিকল্পনা বা লক্ষ্যকে স্থির করেই কাজে সফল হয়েছেন। কিভাবে আপনি আপনার
লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন তার জন্য আপনাকে উপায় খুঁজতে হবে। আপনি আপনার বন্ধু
বা ব্যবসায়িক অংশিদারদের সাথে কথা বলতে পারেন যারা কিনা আপনাকে আপনার
লক্ষ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিবে।
সময় ব্যয়
আপনি কি
ভাবছেন যারা সফল উদ্যোক্তা তারা রাতারাতি সফল হয়েছেন, মোটেও না। তারা তাদের
কাজে সফলতার জন্য অধিক সময় ব্যয় করার পর এই সফলতা অর্জন করতে সক্ষম
হয়েছেন। তাই আপনি যদি সফল হতে চান তাহলে আপনাকেও অনেক সময় ব্যয় করতে হবে।
আপনি তাদেরকে অনুসরণ করতে পারেন যারা বার বার বিফল হয়েও পিছিয়ে যাননি।
আর
আপনার এই কাজটি করতে কয়েক দিন, কয়েক মাস বা কয়েক বছর লাগতে পারে। তাই
আপনাকে ধৈর্য্য সহকারে অতিরিক্ত সময় ব্যয়ের মাধ্যমে আপনার ব্যবসায়িক
কর্মকান্ডে সফল হতে হবে।
একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আগে আপনাকে
জানতে হবে উদ্যোক্তা কে অথবা উদ্যোক্তা কী জিনিস? উদ্যোক্তাকে সাধারণভাবে
ব্যবসায়ীও বলা যায়। কিন্তু একজন উদ্যোক্তা আর ব্যবসায়ীর মধ্যে খানিকটা
পার্থক্য আছে। যেমন- একজন মুদি দোকানদার ব্যবসায়ী হলেও উদ্যোক্তা নন। তিনি
একজন উদ্যোক্তা তখনই হবেন যখন তিনি মানুষের কোনো একটি সমস্যা গৎবাঁধা নিয়মে
সমাধান না করে একটু ইনোভেটিভ উপায়ে সমাধান করবেন। আরও বিস্তারিতভাবে বলতে
গেলে,আপনি একজন উদ্যোক্তা হতে পারবেন নীচের উপায়গুলোর মাধ্যমে।
উদ্যোক্তা
হতে গেলে আপনাকে প্রথমেই যেকোন একটা সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। হতে পারে
আপনি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে কোনো সমস্যায় পড়েছেন নাকি আপনার আশেপাশের কেউ
সেই সমস্যার সম্মুখীন? অথবা সেটা কোনো সামাজিক সমস্যাও হতে পারে। মোটকথা
একটি সমস্যা চিহ্নিত করা এবং সেটির একটি উদ্ভাবনী সমাধান বের করা। এরপরের
কাজ হলো সেই সমস্যা এবং তার উদ্ভাবনী সমাধানের একটি ব্যবসায়িক মডেল দাঁড়
করা।
মোটামুটি এতটুকু হয়ে গেলেই কাজ অনেকটা শেষ হয়ে যায়। এরপর কাজটি
এগিয়ে নেওয়া এবং এর একটি সফল পরিণাম দেওয়ার জন্য আপনাকে একটা টিম গঠন করতে
হবে। আপনার টিমের কয়েকজন কো-ফাউন্ডার অথবা সহ-প্রতিষ্ঠাতা থাকবেন।
কো-ফাউন্ডার হচ্ছেন তারা,যারা আপনার মতোই একটি সমস্যা নিয়ে ভাবেন অথবা
চিন্তা করেন এবং আপনার টিমে অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন সেক্টরের মানুষ থাকতে হবে।
যেমন: কেউ ইঞ্জিনিয়ার,কেউ মার্কেটিংয়ের আবার কেউবা সামাজিক বিজ্ঞানের। এতে
করে টিমে বৈচিত্র্য আসবে।
টিম গঠন করার পর আপনাকে সমস্যা এবং তার
উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। সমস্যার সমাধান হতে পারে কোনো
পণ্য হতে পারে অথবা সেবা। যা-ই হোক না কেন, তার জন্য আপনাকে একটা প্রটোটাইপ
বানাতে হবে প্রথমে। প্রটোটাইপ হলো আপনার সমাধানের একটা বাস্তবিক মডেল যা
আপনার সমাধানকে চিত্রিত বা বর্ণনা করবে। যেমন: আপনি খাদ্যের মান নির্ণয়ের
জন্য যদি একটি পণ্য বানাতে চান যা একইসঙ্গে আর্দ্রতা এবং pH নির্ণয় করবে
তাহলে আগে আপনাকে তেমন একটা পণ্য তৈরি করতে হবে যা এই সমস্যাকে বর্ণনা করতে
পারে। এটাই হচ্ছে প্রটোটাইপ।
প্রটোটাইপিংয়ের পর পণ্যটি বাজারে
ছাড়তে হবে। তার আগে তা অন্তত ৫ জন ভোক্তার কাছ থেকে এর সম্পর্কে মতামতো
জেনে নিতে হবে। এর মাধ্যমে বোঝা যাবে আপনার পণ্য বা সেবাটির মার্কেট
ভ্যালু। ভোক্তাদের মতামত পজিটিভ হলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার প্রোডাক্ট
বাজারে আসার জন্য প্রস্তুত।
মার্কেটে প্রোডাক্ট আনা এবং মার্কেটে
আসার আগে প্রোডাক্টের লঞ্চ আসলে অনেক টাকার ব্যাপার। যা হয়ত একজন সাধারণ
মানুষের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়।এক্ষেত্রে আমাদের সাহায্য করেন Angel
Investor বা দেবদূত বিনিয়োগকারী। তিনিই মূলত টাকা বিনিয়োগ করে থাকেন একটা
নির্দিষ্ট মালিকানার বিনিময়ে। সেজন্য আপনাকে জানতে হবে এরকম বিনিয়োগকারীরা
আসলে কী চান, কীভাবে চান, কোন পর্যায়ে এসে তারা বিনিয়োগ করবেন, কী দেখে
বিনিয়োগ করবেন?
আপনার প্রোডাক্ট লঞ্চ হয়ে যাওয়ার পর তা যখন মার্কেটে
আসবে তখন আপনার টার্গেট থাকবে প্রাথমিকভাবে মার্কেটে বেশ বড় একটা পরিমাণ
প্রোডাক্ট আনা। এজন্য আপনার কর্মী, পরিবেশক ইত্যাদি লাগবে,খরচ বাড়বে। ধরে
নেওয়া যাক, আপনি মার্কেটে ১ লাখ প্রোডাক্ট আনবেন। সেজন্য আপনার বেশ ভাল
পরিমাণ টাকার দরকার। যে বা যারা এই টাকা বিনিয়োগ করবেন, তাদের বলা হয়
ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট। এই ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে
টাকা এনে বিনিয়োগ করবে এবং ৫-৭ বছর পর “রিটার্ন জেনেরেট” করে টাকা ফেরত
দেবে।
এগুলো ছিল উদ্যোক্তা হওয়ার প্রাথমিক কিছু ধাপ। তবে উদ্যোক্তা
হতে হলে আপনার দরকার আত্ম- উৎসর্গিত মনোভাব। যে কোনো খারাপ পরিস্থিতি সামলে
ওঠা ও ব্যর্থতা গ্রহণের সামর্থ্য আপনার থাকতে হবে। যে কোনো ব্যবসা
পরিচালনার জন্য অভিজ্ঞতা না থাকলে আপনার উচিত কোথাও কাজ করে বা কোনো
পার্টটাইম জব করে ব্যবসার খুঁটিনাটি হাতে-কলমে শেখা। এতে করে আপনার
নেটওয়ার্কিং বাড়বে, যা পরবর্তীতে ক্লায়েন্ট ডেভেলপমেন্ট ও প্রোডাক্ট
ডেভেলপমেন্টে সাহায্য করবে।
একজন উদ্যোক্তা হতে গেলে শুরুতেই
আপনার দরকার একটা সমস্যা এবং এই সমস্যাটা আসে আমাদের আশপাশ থেকে। সাধারণত
মানুষ যেটা করে,সে প্রথমে একটা সমাধান বের করে এবং সেটা কোন সমস্যার
ক্ষেত্রে প্রযোজন্য তা বের করে। অর্থাৎ সে কাজটা আসলে উল্টোভাবে করে।
আমাদের প্রথমেই উচিত সমস্যা বের করে তার একটা উদ্ভাবনী সমাধান বের করা।
কখনোই প্রথমে সমাধান দেওয়া যাবে না। একজন উদ্যোক্তা হতে গেলে এই জিনিসটা
অবশ্যই মনে রাখতে হবে।
আপনার সমস্যার সমাধান বা আইডিয়ার বাস্তবায়ন
করার জন্য আপনাকে প্রথমেই ২টি প্রশ্নের উত্তর পেতে হবে। প্রথমটি হলো, মানুষ
আসলেই চায় কি না যে সমস্যাটার সমাধান হোক এবং দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, অনেক
বেশি পরিমাণে মানুষ চায় কী না যে সমস্যাটার সমাধান হোক। যদি দুটো প্রশ্নের
উত্তরই পজিটিভ হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনার সমাধান বা আইডিয়াটা বাস্তবে রূপ
দেওয়া যাবে ।
অ্যামাজন বিশ্বের শীর্ষ একটি ই-কমার্স সাইটের নাম। অ্যামাজনের নাম শুনেননি এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। অ্যামাজন মূলত একটি ই-কমার্স সাইট যেখানে বই থেকে শুরু করে আসবাবপত্র অর্থাৎ প্রায় সকল পন্য বিক্রি করা হয়। বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসার অভিজ্ঞতা তেমন একটা ভালো নয়। তবে অ্যামাজনে আপনি কোনো ধরনের প্রতারণার শিকার হবেন না। তারা কাস্টমারদের সুবিধা-অসুবিধার কথা সবার আগে চিন্তা করে। তবে এখন পর্যন্ত (২০২১) অ্যামাজন বাংলাদেশের বাজারে আসেনি। অ্যামাজন একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি। অ্যামাজনে যে এ টু জেড সব কিছু পাওয়া যায় সেটার চিহ্ন অ্যামাজনের লোগোতেই রয়েছে। ১৯৯৪ সালের ৫ই জুলাই জেফ বেজোস অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে অবশ্য নাম অ্যামাজন ছিল না। শুরুতে এটার নাম ছিল ক্যাডবরা। পরে জেফ বেজোস নাম পরিবর্তন করে অ্যামাজন রাখেন।
অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস ১৯৬৪ সালের ১২ই জানুয়ারি আমেরিকার নিউ মেক্সিকোতে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে একটা উদ্যোক্তা ভাব ছিল। হাইস্কুলে পড়াকালীন সময়ে বেজোস ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্রদের জন্য ড্রিম ইনস্টিটিউট নামে একটি এডুকেশনাল ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করেন। আর ছোট বেলা থেকেই কোনো মেশিন বা যন্ত্র কিভাবে কাজ করে তা জানার আগ্রহ তার খুব বেশি ছিল। এইসব বিষয় নিয়ে অনেক ঘাটাঘাটিও করতেন। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময়ে তার বাসাকে তিনি একটি ছোটোখাটো ম্যাকানিক্যাল ওয়ার্কশপ বানিয়ে ফেলছিলেন। তিনি গ্রাজুয়েশন শেষ করেন প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে। সেখানে তিনি কম্পিউটার সাইন্স ও ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন।
পড়াশোনা শেষে বেশ কয়েক জায়গায় তিনি সাফল্যের সাথে চাকরি করেন। চাকুরীজীবনে তিনি খুব অল্প বয়সেই ডি-ই-শ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়ে গিয়েছিলেন।
১৯৯৪ সালে বেজোস চাকুরীকালীন অবস্থায় কোনো একটি প্রজেক্টের কাজে একটি পরিসংখ্যান তার নজরে আসে। সেটি হল তখন ইন্টারনেট ব্যবহাকারীর সংখ্যা খুব বেশি হারে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তখন তার মাথায় ই-কমার্স সাইটে ব্যবসার চিন্তা চলে আসে। কারণ মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করতে নানারকম ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়। এই ধরুন একজন লোকের একটি চেয়ার, একটি সানগ্লাস আর একটি বই দরকার। এখন সে চেয়ারের দোকানে গিয়ে চেয়ার কিনবে তারপর সানগ্লাস কিনে বইয়ের দোকানে গিয়ে দেখল তার কাঙ্ক্ষিত বইটি নেই। ই-কমার্স ব্যবসায় কিন্তু এ ধরনের ঝামেলা নেই। যার কারণে মানুষ অনলাইনে বেচাকেনার দিকে ঝুঁকছে। এই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন বেজোস।
বেজোস তার চাকুরী ছেড়ে দিয়ে ব্যবসায় নেমে পড়েন। তখন এই ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসার তেমন একটা প্রচলন ছিল না। সুতরাং এই ব্যবসাটা শুরু করার ব্যাপারটা পুরোপুরি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তিনি অ্যামাজনে প্রথমে পুরাতন বই বিক্রি দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। জেফ বেজোস তার এই ব্যবসায় খুব অল্প সময়েই ব্যাপক সাড়া পেয়ে যায়। অ্যামাজন প্রতিষ্ঠার প্রথম ৩০ দিনেই তারা কোনো ধরনের প্রচার প্রচারণা ছাড়াই বিশ্বের অনেকগুলো দেশে পন্য বিক্রি করে। যা ছিল তাদের কল্পনার বাইরে। ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তারা তাদের ব্যবসাকে পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়ে যাচ্ছিল। তারা ই-কমার্স ব্যবসায় প্রচুর সম্ভাবনা দেখে পাকাপোক্তভাবে ব্যবসায় নামে ১৯৯৭ সালের পর। পরে অ্যামাজনে সিডি ডিভিডি, ভিডিও গেম, সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিক পন্য, আসবাবপত্র, গহনাগাঁটি তারপর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি শুরু করে দেন।
তিনি এখানেও ব্যাপক সাড়া পেয়ে যান। সেখান থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অ্যামাজনের শুরুতে জেফ বেজোসের কাছে পুঁজি হিসেবে খুব বেশি টাকা ছিল না। তার পুঁজির টাকা জোগাড় করতে বড় ভুমিকা রেখেছিল বেজোসের বাবা মাইক বেজোস এবং তার মা জ্যাকলিন বেজোস। তারা তাদের অবসর ভাতা হিসেবে পাওয়া অর্থ বেজোসকে দেন ব্যবসা শুরু করতে। তারা প্রায় ৩ লক্ষ ডলার দিয়েছিল বেজোসকে। পরে বেজোস তার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে আরও ৭ লক্ষ ডলার নিয়ে মোট ১ মিলিয়ন ডলার নিয়ে এ ব্যবসা শুরু করেন।
এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, কানাডা, ফ্রান্স, ভারত, জার্মানি, ইটালি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপানসহ আরও কয়েকটি দেশে তারা পন্য সামগ্রি বিক্রি করে আসছে। তাছাড়া অন্যান্য দেশে তাদের কিছু পন্যের শিপিং ব্যবস্থা রয়েছে। অ্যামাজনের সদর দপ্তর আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াশিংটনের সিয়াটেলে। এবং ২০১৯ এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী অ্যামাজনের মোট সম্পদের পরিমাণ ২২৫.২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে অ্যামাজনে বর্তমানে প্রায় ৭ লক্ষ লোক কাজ করছে।
বর্তমানে অ্যামাজনের কয়েকটি পরিসেবা নিচে তুলে ধরলাম..
১.অ্যামাজন ড্রাইভ
২.অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস
৩.অ্যামাজম প্রাইম
৪.অ্যামাজন ফ্রেশ
৫.অ্যামাজন এনেক্সা ইত্যাদি।
এগুলো ছাড়াও অ্যামাজনের অধীনস্থ অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান আছে অনেকগুলো। যেমম....
১.অ্যামাজন বুকস
২.অ্যামাজন গেইম স্টুডিও
৩.অ্যামাজন এয়ার
৪.অ্যামাজন ল্যাব
৫.বডি ল্যাবস
৬.অ্যামাজন লজিস্টিক
৭.অ্যামাজন পাবলিশিং
৮.আইএমডিবি
৯.হোল ফুড মার্কেট ইত্যাদি।
সব কিছুর পরেও অ্যামাজন তাদের পরিধি প্রতি বছর বড় করেই চলছে। প্রতি বছর তারা নতুন নতুন প্রতিষ্ঠানকে কিনে নিচ্ছে। বিশেষ করে উদীয়মান প্রতিষ্ঠানগুলোকেই কিনে নিচ্ছে। অবশ্য এ কাজটি শুধু অ্যামাজনই না, বিশ্বের অন্যান্য জায়ান্টরা যেমন ফেসবুক, অ্যাপল, গুগল, আলিবাবাও এ কাজটি করে যাচ্ছে।এখন পর্যন্ত অ্যামাজনের নেট আয় তাদের সমকক্ষ প্রতিষ্ঠান অ্যাপল, গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফটের অনেক কম হলেও রেভিনিউ এর দিক দিয়ে অনেকটা এগিয়ে আছে। এই অ্যামাজনের হাত ধরেই জেফ বেজোস বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন।
অ্যামাজন থেকে সকল পন্য কিনতে না পারলেও কিছু পন্য আপনি বাংলাদেশে আনতে পারবেন। তবে এখনো পর্যন্ত অ্যামাজন তাদের বেশিরভাগ পন্য বাংলাদেশে শিপিং করে না। যে প্রোডাক্ট কিনবেন সেগুলো কিনতে আপনার ডুয়াল কারেন্সির কার্ড প্রয়োজন হবে। যেহেতু অ্যামাজন থেকে তাদের বেশিরভাগ পন্য আপনি বাংলাদেশে আনতে পারবেন না (২০২১ সাল অনুযায়ী), তাই আপনি অ্যামাজনের বিকল্প হিসেবে আলি এক্সপ্রেস থেকে পন্য কিনতে পারবেন। বাংলাদেশে আলি এক্সপ্রেস থেকে পন্য ক্রয় করা অনেকটা সহজ। আলি এক্সপ্রেস থেকে কিভাবে পন্য ক্রয় করবেন সেটা আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যে দিয়েছি। দেখে আসতে পারেন।
আজকের আলোচনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। ধন্যবাদ।
মাছ চাষ সবসময় একটা লাভজনক ব্যবসা । মাছ চাষের অনেক পদ্ধতি চালু থাকলেও নদীতে মাছ চাষ একটা নতুন পদ্ধতি । বর্তমান সময়ে মাছ চাষের একটি উত্তম পদ্ধতি হল খাঁচায় নদীতে মাছ চাষ করা। নদীতে মাছ চাষ খুবই লাভজনক। সাধারণ পুকুরের চেয়ে অনেক বেশি ফলন পাওয়া যায় নদীতে মাছ চাষ পদ্ধতিতে। বর্তমানে অনেকেই নদীতে মাছ চাষ করে খুব লাভজনক ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসতেছেন । আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব কিভাবে নদীতে মাছ চাষ শুরু করবেন? নদীতে মাছ চাষ করার স্থান কিভাবে সুবিধামতো ভাবে বেছে নিবেন? নদীতে মাছ চাষ করতে কত টাকা লাগবে এবং কিভাবে বিনিয়োগ করবেন? নদীতে মাছ চাষ করতে মাছের দেখাশোনা কিভাবে করবেন? নদীতে মাছ চাষ করে উতাপদিত মাছ কোথায় কিভাবে বিক্রি করবেন? নদীতে মাছ চাষ করলে কি ধরনের রিস্ক থাকে ?
এই সকল প্রশ্ন নিয়েই আজ আমরা আলোচনা করব। চলুন শুরু করা যাক ।
২০১৫ সালের কথা। টেলিভিশনে নদীতে খাঁচায় মাছ চাষের একটি প্রতিবেদন দেখেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার চর ঘাটিনার ফজলুল হক। বিষয়টি তাঁকে বেশ আকৃষ্ট করে। উপজেলা মত্স্য অফিসে যোগাযোগ করেন। জানতে পারেন এ বিষয়ে তাঁকে সহযোগিতা করতে পারবেন রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার সিনিয়র মত্স্য কর্মকর্তা ড. আমিমুল এহসান। ফজলুল হকের তখন কাজ ছিল না, বলতে গেলে বেকার। আগে ছোটখাটো একটি ব্যবসা করলেও সেটা বন্ধ। চলে গেলেন রাজশাহী। আমিমুল এহসানের কাছ থেকে নদীতে ভাসমান খাঁচায় তেলাপিয়া চাষের প্রশিক্ষণ নিলেন। এরপর গত বছরের জানুয়ারিতে তিনি নিজের বাড়ির পাশে করতোয়া নদীতে ৫০টি প্লাস্টিক ড্রাম ফেলে প্রয়োজনীয় বাঁশ, কাঠ ও নাইলন নেট দিয়ে ২০টি খাঁচা বানান। প্রতিটি খাঁচা ১৫ ফুট চওড়া ও ২০ ফুট লম্বা। এতে ব্যয় হয় প্রায় আড়াই লাখ টাকা।
প্রথমবার এই খাঁচায় দেড় লাখ টাকায় ১০ হাজার তেলাপিয়া মাছের পোনা ছাড়েন। চার মাসে এসব পোনা পূর্ণাঙ্গ মাছে রূপ নেয়। প্রতিটির ওজন হয় ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম। চার মাসে মাছের খাবার ও আনুষঙ্গিক পরিচর্যার জন্য ব্যয় হয় আরো তিন লাখ টাকা। এতে উৎপাদিত হয় প্রায় ১২ লাখ টাকার মাছ। ফজলুল হক জানান, প্রথম দফায় তাঁর এই নতুন মত্স্য প্রকল্পে বিনিয়োগ হিসাব করলে লাভের পরিমাণ কম। এ প্রকল্পে গ্রামের ছয় যুবককে কাজ দিয়েছেন। ভবিষ্যতে ভাসমান খাঁচার সংখ্যা দ্বিগুণ করলে এলাকার আরো ১০ যুবককে কাজ দিতে পারবেন।
এখন সিরাজগঞ্জের বেশ কয়েকটি জায়গায় নদীতে খাঁচায় মাছের চাষ হচ্ছে। জেলার অন্তত ৫০ যুবক মাছ চাষ শুরু করেছেন এবং স্বাবলম্বী হয়েছেন। খাঁচায় মাছ চাষ হচ্ছে জেলার রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া উপজেলায় ফুলজোড় ও করতোয়া নদীতে।
আমিমুল এহসান জানান, ২০১২ সালে তাঁর কর্মস্থল ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জে। সেখানে বিজিবির সহযোগিতায় মহানন্দা নদীতে ভাসমান খাঁচায় তেলাপিয়া মাছ চাষে সফলতা পান। এরপর এই প্রযুক্তি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছেন। উল্লাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মত্স্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘১২ বছর আগে দেশে প্রথম কুমিল্লায় এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু হয়। প্রবহমান নদীর পানিতে ভাসমান খাঁচায় মাছের পোনাগুলো প্রাকৃতিক নিয়মে বেড়ে ওঠে এবং এর প্রাকৃতিক স্বাদও অটুট থাকে। ফলে বাজারে এই মাছের চাহিদাও বেশি।’ জেলা মত্স্য কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় ২৯২টি খাঁচায় প্রায় অর্ধশত মাছচাষি মাছ চাষ করছেন। এ ব্যাপারে বেকার যুবকদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে। তারা পরামর্শের জন্য আসছে। জেলা মত্স্য অফিস থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি খাঁচায় ৮০০ থেকে এক হাজার মাছের পোনা ছাড়া হয়। লাভ হয় এক লাখ থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত।’
মাছচাষিরা জানান, সরকারি ঋণসহ অন্যান্য সুবিধা পাওয়া গেলে আরো অনেক বেকার যুবক এ কাজে আসবে। এতে বেকার সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি দেশে মাছের চাহিদাও অনেকাংশে পূরণ হবে।
কুমিল্লায় মেঘনা নদীতে খাঁচায় মাছ চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। বিশেষ করে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে এ মাছ চাষ করা হচ্ছে। এখানে কম খাবারে দ্রুত বৃদ্ধি পায় বলে তেলাপিয়া মাছ বেশি চাষ করা হচ্ছে। পুকুর ও খামারে চাষ করা তেলাপিয়া থেকে নদীতে চাষ করা মাছের স্বাদ ব্যতিক্রম। তাই এই মাছের চাহিদাও বেশি। এসব প্রকল্পে কর্মসংস্থান হচ্ছে স্থানীয় যুবকদের, এতে এলাকায় বেকারত্বও কমছে। সরেজমিন দেখা যায়, মেঘনা উপজেলার ওমরাকান্দা ব্রিজ এলাকাসহ কয়েকটি পয়েন্টে ব্যক্তি উদ্যোগে খাঁচায় মাছ চাষ করা হচ্ছে। নদীতে চার কোণের বাঁশ বা এঙ্গেলে জাল লাগিয়ে খাঁচা বানানো হয়। সেই খাঁচা ড্রামে ভাসিয়ে রাখা হয়। পানি বাড়লে খাঁচা উপরে ওঠে- কমলে নিচে যায়।
সেই খাঁচায় মাছের পোনা ফেলে ভাসমান খাবার দেওয়া হয়। খাঁচায় মাছ চাষকারী উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন জানান, তিনি দীর্ঘদিন থেকে মাছ চাষ করছেন। আগে জমি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। এই এলাকায় পুকুর কম, পরে জানলেন নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ করা যায়। তিনি আটটি খাঁচায় মাছ চাষ শুরু করেন। তাকে এ কাজে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সিকদার সহযোগিতা করেন। পরে মত্স্য অধিদফতর তাকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করেন। এখন তার খাঁচার সংখ্যা ২০টি। ৪/৫ মাসের মধ্যে মাছ বিক্রি করা যায়। মাছের স্বাদ বেশি হওয়ায় এর চাহিদাও বেশি। তার খাঁচায় এখন ছোট-বড় মিলিয়ে তিন লাখ ২০ হাজার মাছ রয়েছে। মাছগুলো দ্রুত বাড়ায় তিনি ভালো লাভ পাবেন বলেও আশা করেন। মেঘনা উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা সুদীপ ভট্টাচার্য জানান, জসিম উদ্দিন মত্স্য অধিদফতরের খাঁচায় মাছ প্রদর্শনীর আওতায় মাছ চাষ করছেন।
তাকে তারা সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। তার দেখাদেখি অন্য চাষিরাও এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।
মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে একটি। বাংলাদেশে বানিজ্যিক ভাবে যে মাছ চাষ করা হয় তার বেশিরভাগ পুকুর বা ঝিলে। কিন্তু প্রবাহমান নদীতে মাছ চাষ করার ধারণা বাংলাদেশে নতুন হলেও অল্প কয়েকদিনেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নদীতে মাছ চাষ করার পদ্ধতির এত জনপ্রিয়তার মূল কারণ হল এতে উৎপাদন বেশি এবং সময়ও কম লাগে। একটি উদাহরণ দেই, একটি সাধারণ পুকুরে যদি আপনি তেলাপিয়া মাছ চাষ করেন তবে ঐ মাছের সাইজ ৭০০-১০০০ গ্রাম হতে আপনাকে অন্তত ৬ মাস অপেক্ষা করতে হবে।
কিন্তু ঐ মাছ নদীতে ঐ সাইজের হতে সময় লাগবে ৩ থেকে ৪ মাস। আবার পুকুরে মাছ চাষের জন্য পুকুর তৈরি করতে হয় কিন্ত নদীতে এটা করার প্রয়োজন হয় না। অর্থাৎ পুকুরে মাছ চাষ করলে যেখানে আপনি বছরে ২বার মাছ বিক্রি করতে পারবেন সেখানে নদীতে অনায়াসে ৩ বার মাছ বিক্রি করতে পারবেন। তার উপর নদীতে অল্প জায়গায় পুকুরের তুলনায় বেশি মাছ ছাড়তে পারবেন। কারন নদীর পানি প্রবাহমান। তারপর নদীতে মাছের রোগবালাই খুব কম। অর্থাৎ আপনি যদি নদীতে মাছ চাষ করেন তাহলে বেশি লাভবান হবেন।
নদীতে মাছ চাষ শুরু করার পূর্বে আপনাকে স্থান বাছাই করতে হবে। এ পদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য বড় নদী নয় ছোট নদীই উপযুক্ত হবে । কারন বড় নদী হলে স্রোত অত্যন্ত বেশি থাকে যার কারনে আপনার নেট, ড্রাম সব ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। তারপর নদীতে যে পানি থাকে তা হতে হবে দূষণমুক্ত।
এবার আসি এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করতে কি কি প্রয়োজন হবে.....
১.ড্রাম
২. বাঁশ অথবা পিভিসি পাইপ তবে অনেকে এক্ষেত্রে জি আই পাইপ ব্যবহার করে।
৩. নেট (কয়েক ধরনের নেট প্রয়োজন হবে)
৪.রাতের জন্য ইলেকট্রিক সংযোগ
মোটামুটিভাবে এগুলো হলেই চলবে।নদীতে ড্রাম, বাঁশ ও নেট দিয়ে মাছ চাষের উপযোগী খাচা তৈরি করতে হবে। প্রতিটি খাচার আকার হবে ২০ ফুট বাই ১০ ফুট। নেট বা যে জাল ব্যবহার করবেন সেটা যেনো ২ স্তরের হয়। একটির পর একটি করে ৫ টি খাঁচা তৈরি করতে পারেন। প্রথমে এই ৫ টিই থাকুক। পরে সুবিধামত বাড়িয়ে নিতে পারবেন। আর এ খাঁচাগুলো যেনো নদীর পাড়ের সাথে বাঁধা থাকে। নতুবা স্রোতের সাথে ভেসে চলে যাবে। আর নদীর যে স্থানটির তীর ঘেঁষে আপনি মাছ চাষ করবেন সে স্থানটি ভাড়া অথবা লিজ নিয়ে ফেলুন। এতে খরচটা একটু বাড়লেও অনেক ঝামেলা থেকে আপনি বেচে যাবেন।
এবার আসি এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করতে কি পরিমাণ পুঁজি প্রয়োজন হবে.... প্রথমেই স্ট্রাকচারাল খরচটা বলি।
১. সকল খরচ সহ প্রতিটি খাঁচা তৈরি করতে প্রয়োজন হবে ১৫০০০৳।
২.জমি লিজ নিতে প্রয়োজন হবে ১০০০০৳।
৩.মাছের পোনা ক্রয় বাবদ ২০০০০৳।
৪. মাছের খাদ্য ও অন্যান্য ২০০০০০৳।
অর্থাৎ প্রথমে আপনাকে প্রায় ২৫০০০০৳ বিনিয়োগ করতে হবে।
পরে যখন আবার মাছ ছাড়বেন তখন কিন্তু এত খরচ লাগবেনা। কারণ পরেরবার আপনাকে আবার নতুন করে খাঁচা তৈরি ও জমি লিজ নিতে হবে না। আর প্রথমবার মাছ বিক্রি করে যে টাকা উঠবে তা থেকেই পরের মাছ বাবদ প্রয়োজনীয় খরচ রেখে দিবেন। বাকী টাকা লাভ হিসেবে রেখে দিবেন।
যেসব মাছ নদীতে খাচা পদ্ধতিতে চাষ করতে পারবেন...
১.তেলাপিয়া
২.পাঙ্গাশ
৩.কৈ
৪.শিং
৫.মাগুর
৬.কার্প
৭.শোল
৯.সরপুঁটি ইত্যাদি।
মাছভেদে কি পরিমাণ মাছ ছাড়বেন তা ভিন্ন হয়। যেমন উল্লেখিত আকারের খাঁচায় যদি মনোসেক্স জাতের তেলাপিয়া ছাড়েন তবে ১০০০ থেকে ১২০০ পিস ছাড়তে পারবেন। পাঙ্গাশ ছাড়তে পারবেন ৭০০ থেকে ৮০০ পিস।
আপনার ব্যবসা আপনি নিজেই দেখাশোনা করতে পারেন অথবা আপনি চাইলে দেখাশোনার জন্য একজন লোক নিয়োগ দিতে পারেন। নিয়োগকৃত লোককে অবশ্যই পরিশ্রমী হতে হবে। ঠিক সময়মত মাছের খাদ্য দিতে হবে।
মাছের পোনা ত্রয় করতে প্রায় সবাইকে একটা ঝামেলায় পড়তে হয়। সেটা হল ভালো মানের পোনা পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে আপনি যদি নতুন হন অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ নিবেন যে কোথা থেকে আপনি মাছের পোনা ক্রয় করবেন। আর এমন মানুষ থেকে পরামর্শ নিবেন যারা এখনও মাছ চাষের সাথে জড়িত আছে। আর অবশ্যই কয়েকটি মাছের খামার পরিদর্শন করে আসবেন। এতে অনেক সুবিধা পাবেন। মাছ বিক্রির সময় দালালদের খপ্পরে পড়বেন না। আপনি নিজে সরাসরি আড়তে কথা বলে সেখানে বিক্রি করবেন।
এবার আসি এই ব্যবসায় লোকসানের কারণগুলো কি? প্রথম সমস্যা হল নদীর পানি দূষিত হওয়া। যেমন চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে পানি দূষিত। যার কারণে মাছ মরে যাচ্ছে। তাদের জন্য পরামর্শ হল পানি দূষণের মাত্রা যদি কম হয় তাহলে পাঙ্গাশ চাষ করতে পারেন। আর যারা নতুন তারা নিশ্চিত হয়ে নিবেন নদীর পানি দূষণমুক্ত কিনা। আর লোকসানের আরেকটি কারন হল মাছের সঠিক পরিচর্যার অভাব। যেমন সময় অনুযায়ী পরিমানমতো খাবার দেওয়া। মৃত মাছ অপসারণ করা। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে আপনি খুব সহজেই একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারবেন।
আজকের আলোচনা নিয়ে যদি কারও কোন পরামর্শ অথবা প্রশ্ন থাকে, অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। ধন্যবাদ।
গার্মেন্টস শিল্পে বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় একটি দেশ। বাংলাদেশের
রপ্তানি পন্যের প্রায় পুরো অংশই গার্মেন্টস পন্য। গার্মেন্টস শিল্পের সাথে
জড়িয়ে আছে স্টক লট ব্যবসা। আজ আমাদের আলোচনা এই স্টক লট ব্যবসা নিয়েই। স্টক
লট ব্যবসা কি? কিভাবে স্টক লট ব্যবসা করবেন? স্টক লট ব্যবসার
সুবিধা-অসুবিধা কি? কত টাকা পুঁজি প্রয়োজন হবে স্টক লট ব্যবসা করতে? কোন
ধরনের পন্য ক্রয় করবেন? পন্য কোথায় বিক্রি করবেন? কিভাবে পন্য বিক্রি
করবেন? এই সকল বিষয় নিয়েই আজ আমরা আলোচনা করব।
গার্মেন্টস স্টক লক ব্যবসা কি?
আমরা জানি যে বাংলাদেশ প্রচুর পরিমান গার্মেন্টস পন্য রপ্তানি করে থাকে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস কোম্পানিগুলো বিদেশের বায়ারদের থেকে ৫০০০ পিস থেকে শুরু করে ৫ লাখ - ১০ লাখ পিস পন্যের অর্ডার নেয়। এগুলো যেকোনো ধরনের গার্মেন্টস পন্য হতে পারে। যেমন- টি শার্ট পলো শার্ট, প্যান্ট, সুয়েটার ইত্যাদি পন্য। মাঝে মাঝে এই অর্ডার বাতিল হয়ে যায়। অর্ডার বাতিল হওয়ার কারণে তৈরি পন্যগুলো গার্মেন্টস মালিকরা কম দামে বিক্রি করে দেয়। সেই পন্য স্টক লট ব্যবসায়ীরা কিনে এনে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে। আবার কখনও গার্মেন্টস কোম্পানিগুলো যে পরিমান পন্যের অর্ডার পায় তার থেকে বেশি তৈরি করে। যেমন ধরুন একটি গার্মেন্টস কোম্পানি ৫০ হাজার টি শার্টের অর্ডার পেয়েছে। এখন গার্মেন্টস কোম্পানি কিন্তু একেবারে ৫০ হাজার পিস টি শার্ট তৈরি করবে না। তারা অতিরিক্ত আরও ৫ হাজার অথবা ১০ হাজার পিস বেশি তৈরি করবে। কারন কিছু টি শার্টে স্পট থাকতে পারে। এই ঝুঁকি এড়াতে অতিরিক্ত কিছু টি শার্ট তৈরি করে। এই অতিরিক্ত পন্য প্রায় সময় প্রয়োজন হয় না। তাই তারা এগুলো কম দামে বিক্রি করে দেয়। এটাই হল গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা।
গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা শুরু করবেন কিভাবে?
এই ব্যবসা সম্পর্কে অনেকে আগ্রহ রাখলেও বুঝতে পারেননা যে কিভাবে স্টক লট ব্যবসা করবেন। কিভাবে এই ব্যবসার শুরুটা করবেন।
প্রথমে আপনি ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে স্টক লট ব্যবসা শুরু
করাটাই ভালো হবে। প্রথমেই বেশি টাকা ইনভেস্ট করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে
না। আর এমন পন্য দিয়ে শুরু করবেন যেগুলো ভালো চলবে। প্রথমে চেষ্টা করবেন
ব্রান্ডের পন্য ক্রয় করতে। এতে দ্রুত বিক্রি করতে পারবেন।
১ থেকে ২
হাজার পিস টি শার্ট দিয়ে শুরু করতে পারেন। প্রথমে ১ থেকে ২ হাজার পিস টি
শার্ট বা পলো শার্ট কিনে এগুলো বিভিন্ন দোকান এবং নিজে অনলাইনে বিক্রি করতে
পারেন। ধরুন আপনি ১০০০ পিস প্রিন্টেড টি শার্ট কিনলেন। একটি টি শার্টের
দাম যদি হয় ৭০ টাকা তাহলে খরচ পড়বে...
১০০০×৭০=৭০০০০৳
আরও অন্যান্য
খরচ ধরেন ৫০০০ টাকা। তাহলে আপনার প্রতি টি শার্টের মূল্য দাড়ায় ৭৫ টাকা। আর
এগুলো আপনি ১০০/১১০ টাকা দরে বিক্রি করবেন দোকানগুলোতে এবং নিজে খুচরা
বিক্রি করলে ১৫০-১৮০৳ দরে বিক্রি করতে পারবেন। এটাতো হল আপনার স্টক লট
ব্যবসার শুরু। শুরুতে লাভের পরিমান কম হবে এটাই স্বাভাবিক। ধীরে ধীরে নতুন
মানুষের সাথে পরিচয় হবে নতুন কাস্টমার পাবেন। তারপর আপনি বড় লটের পন্য
কিনতে পারবেন। বিদেশে পন্য পাঠাবেন।
গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসার সুবিধা অসুবিধা
স্টক লট ব্যবসার সুবিধা হচ্ছে
এতে ঝুঁকি কম এবং লাভও বেশি। কিন্তু এ ব্যবসার কিছু অসুবিধাও আছে। যেমন
ধরুন অনেকগুলো লট এমন থাকে যেখানে ভালো পন্যের হার ৪০-৬০/৭০%। বাকি পন্যের
একটা অংশ রিপেয়ার করা যায়। কিন্তু একটা অংশ পন্য ব্যবহার যোগ্য থাকেনা।
সুতরাং কিনার সময় বুঝে শুনে কিনবেন। স্পট থাকবেই, কিন্তু আপনাকে হিসাব করে
কিনতে হবে যাতে রিপেয়ার করার খরচ এবং বাতিল পন্যের মুল্য উঠে লাভ কিরকম
হবে। তারপর স্টক লট ব্যবসার আরেকটি অসুবিধা হল সবসময় আপনি এক ধরনের পন্য
পাবেন না। তারপর মিক্সড সাইজের পন্যও স্টক লট ব্যবসার অন্যতম একটি অসুবিধা।
এসকল বিষয় আপনি যখন নতুন থাকবেন, হিসাব করতে কঠিন হবে। অভিজ্ঞতার সাথে সাথে এসব বিষয় সহজ
হয়ে যাবে। আবার কখনও পুরো লটের পন্যই ক্রয় করতে হয়। অর্থাৎ একটি লটে যদি
৩০৫৬০ টি পন্য থাকে তাহলে সবগুলি কিনতে হয়। তাই পন্য ক্রয় করার আগে
মার্কেটে চাহিদা কেমন তা যাচাই করে নিবেন।
এবার আসি পন্য কোথায় কিভাবে বিক্রি করবেন?
স্টক
লটের ব্যবসা করতে গেলে আপনার একটি গুদামঘর বা দোকানের প্রয়োজন হবে। যেসব
স্থানে গার্মেন্টস স্টক লটের ব্যবসা চলে সেসব স্থানে দোকান নেওয়ার চেষ্টা
করবেন। অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সাথে ভাল সম্পর্ক করে বায়ারদের সাথে যোগাযোগ
করবেন। বায়ারদেরকে পন্যের স্যাম্পল দেখাবেন। এভাবে আপনার কাস্টমার তৈরি হতে
থাকবে। ধীরে ধীরে বিদেশের বায়ারদের সাথে যোগাযোগ করবেন। মনে রাখবেন আপনি
যে পন্য দেশে ১২০ টাকায় বিক্রি করেন সেটা বিদেশে ২০০ টাকায় বিক্রি করতে
পারবেন। সেখানে দাম একটু বেশি পাওয়া যায়। তাই বিদেশি বায়ারদের সাথে ভাল
সম্পর্ক তৈরি করবেন। বর্তমানে অনেকেই স্টক লটের পন্য বিদেশে বিশেষ করে সৌদি
আরব, আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েতসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছেন।
আর পন্য ক্রয় বিক্রয় করতে লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ব্যাংক ব্যবহার করবেন। এতে প্রতারণার শিকার থেকে রক্ষা পাবেন।
সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। তাদের জানার আগ্রহের কারণ হচ্ছে তারা শুধু শুনেই থাকেন যে গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা। এই ব্যবসা করে অনেকেই প্রচুর আয় করছে। কিন্তু এই ব্যবসা কি এবং কিভাবে এই ব্যবসা শুরু করতে হয় সেই ধারণা না থাকার কারণে স্টক লট ব্যবসায় তারা নামতে পারছেন না।
স্টক লট ব্যবসাটি যথেষ্ট লাভজনক ব্যবসা তা ঠিক আছে কিন্তু এই ব্যবসা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং কারণ এসব কাপড় যেহেতু গার্মেন্টস রিজেক্ট মাল বা কিছুটা কম মানসম্পন্ন তাই অনেক সময় কিছু খুঁত থাকে। এই খুঁত থাকার কারণে স্টক লট বায়াররা মাঝে মাঝে তাদের পণ্য বিক্রি করতে সমস্যায় পড়েন। তবে আপনি যদি আপনার এলাকার মার্কেট খুব ভালভাবে জেনে বুঝে সেই অনুযায়ী দেখে স্টক লট ক্রয় করতে পারেন তাহলে আপনি সফল হবেন।
গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা কি
আমরা সবাই জানি আমাদের দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য হচ্ছে তৈরি পোশাক। আমাদের মোট রপ্তানির ৯০ ভাগের বেশি রপ্তানি আয় হয় পোশাক রপ্তানি থেকে। এই পোশাক রপ্তানি করতে গিয়ে অনেক সময় পোশাক আমদানিকারকরা বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তাদের অর্ডার বাতিল করে দেয় তখন যেসব কাপড় গার্মেন্টসে স্টক হয়ে থাকে তখন গার্মেন্টস সেগুলোকে লট আকারে বিক্রি করে বলে একে গার্মেন্টস স্টক লট বলে। বিভিন্ন কারণে এসব পোশাকের অর্ডার বাতিল হতে পারে। যেমন –
গার্মেন্টস বায়ারের অর্ডার অনুযায়ী কাপড়ের কোয়ালিটি কম হয়েছে
সঠিক সময়ে পণ্য জাহাজিকরণ করতে না পারা
এলসি সমস্যা ইত্যাদি
এসব কারণে যখন গার্মেন্টস লটের সৃষ্টি হয় তখন গার্মেন্টসগুলো সেসব লট বিভিন্ন স্টক লট বায়ারদের কাছে বিক্রি করে দেয়। স্টক লট বায়াররা অনেক কম দামে এসব স্টক লট কিনে নিয়ে যায়।
স্টক লটের ধরণ
যারা গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা শুরু করতে চান তারা সাধারণ এই বিষয়ে জানতে চান কারণ এখানে তাদের মনে অনেক শঙ্কা কাজ করে। অনেকেই কোয়ালিটির কথা চিন্তা করেন। এসব চিন্তার কারণ হচ্ছে তারা মনে করেন গার্মেন্টস লট কাপড় মানেই মানহীন কাপড়। কিন্তু ব্যাপারটা এমন নয়। এখানে অনেক মানসম্পন্ন কাপড় পাওয়া যায়। গার্মেন্টস স্টক লট বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে, যেমন –
অতিরিক্ত পোশাক
কোয়ালিটি নিয়ন্ত্রক কর্তৃক বাতিলকৃত পোশাক
অসম্পূর্ণ পোশাক
গার্মেন্টস বায়ার কর্তৃক বাতিলকৃত পোশাক
অতিরিক্ত পোশাক যখন একটি গার্মেন্টস কারখানা ক্রেতার কাছ থেকে ফরমায়েশ
পায় তখন যে পরিমাণ ফরমায়েশ পায় তার চেয়ে কিছু বেশি পোশাক তৈরি করে। এর কারণ
হচ্ছে যদি কোন কারণে কিছু কাপড় নষ্ট হয়ে যায় তখন যাতে অতিরিক্ত কাপড়গুলো
দিয়ে সেই সমস্যা সমাধান করা যায়। সেসব পণ্য যখন আর দরকার হয় না তখন স্টক লট
হিসেবে তারা বিক্রি করে দেয়। এসব স্টকের মূল্য একটু বেশি হয়। কারণ এগুলোতে
খুঁত থাকে না। আপনি ভাল ভাল শোরুমে এসব কাপড় বিক্রি করতে পারবেন।
কোয়ালিটি নিয়ন্ত্রক কর্তৃক বাতিলকৃত পোশাক কিছু পণ্য আছে যেগুলো তৈরি করার
পর কোয়ালিটি নিয়ন্ত্রক সেগুলো মানসম্পন্ন হয় নাই বলে বাতিল করে দেয়। সেসব
পণ্য পরবর্তীতে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ স্টক লট হিসেবে স্টক লট বায়ারের কাছে
বিক্রি করে দেয়।
অসম্পূর্ণ পোশাক কিছু পোশাক আছে যেগুলো ফেব্রিক্স সমস্যাসহ বিভিন্ন অসঙ্গতি থাকে। কোন পোশাকে বোতামে সমস্যা কোন পোশাকে পকেট বা কলারে সমস্যা। এসব কারণে সেসব পোশাক আর বিদেশি বায়ারদের কাছে বিক্রি করা হয় না। সেগুলো স্টক লট হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়। যারা একেবারে প্রান্তিক মানুষ কম দামে কাপড় কিনতে চায় তাদের কাছে এসব পোশাক বিক্রি করতে পারবেন।।
গার্মেন্টস বায়ার কর্তৃক বাতিলকৃত পোশাক উপরেই কারণগুলো বললাম কেন গার্মেন্টস বায়ার অর্ডার বাতিল করে দেয়। এসব বাতিল হয়ে যাওয়া পোশাক যখন বেশি পরিমাণে জমে যায় তখন স্টক লট ক্রেতাদের কাছে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ বিক্রি করে দেয়।
গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা কেন করবেন
গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা শুরু করার আগে আপনার মনে এই প্রশ্ন আসতেই পারে। একটি ব্যবসা আপনি শুরু করবেন কিন্তু সেই ব্যবসাটি কেন শুরু করবেন তার কিছু যোক্তিক কারণ থাকতে হবে। সেই ব্যবসার বাজার সম্ভাবনা থাকতে হবে।
আসলে গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা যদি আপনি করতে চান তাহলে আমি বলব আপনি নিশ্চিন্তে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কারণ বর্তমানে দামী কাপড়ের চেয়ে কম দামী কাপড় বেশি বিক্রি হয়। কারণ কম দামী কাপড়ের ক্রেতার সংখ্যা অনেক অনেক বেশি। আপনি যদি ঢাকার নিউমার্কেট, গুলিস্তান, মিরপুর ১০ নাম্বার গোলচক্কর যান তাহলেই আমার কথার প্রমাণ পেয়ে যাবেন। দেখবেন সুন্দর সুন্দর কাপড়ের শোরুমগুলোর ভেতর যে পরিমাণ ভিড় তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভিড় থাকে ফুতপাতে থাকা কাপড়ের ছোট ছোট দোকানগুলোতে
আপনি যদি চট্টগ্রাম যান তাহলে দেখতে পাবেন সেখানকার শপিং সেন্টারের তুলনায় হকার্স মার্কেটে গ্রাহকের সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি।
আর মফস্বল এলাকার ক্রেতাদের একটা বড় অংশই কম মূল্যে পোশাক ক্রয় করতে পছন্দ করে। কারণ মানুষের আয়ের সাথে সংগতি রেখেই তাদেরকে খরচ করতে হয়।
এসব কমদামি কাপড়ের একটা বড় অংশই হচ্ছে স্টক লটের কাপড়। স্টক লট বায়াররা এসব কাপড় গার্মেন্টস থেকে কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে থাকে।
স্টক লট কোথায় পাবেন
বিভিন্ন যায়গায় আপনি স্টক লট পাবেন। যেমন-
গার্মেন্টস
বায়িং হাউজ
পাইকারি মার্কেট
গার্মেন্টস লটের জন্য সবচেয়ে জমজমাট যায়গা হচ্ছে আশুলিয়ার বাঘাবাড়ি এবং গাজীপুরের কোনাবাড়ি। এসব এলাকায় প্রচুর গার্মেন্টস আছে তাই স্টক লটের জন্য এসব এলাকা প্রসিদ্ধ। এছাড়া এসব এলাকায় আপনি অনেক দোকান পাবেন যেগুলোতে স্টক লটের কাপড় বিক্রি করা হয়।
গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা শুরু করতে কেমন পুঁজি লাগবে
গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা শুরু করার জন্য কেমন পুঁজি লাগবে তা আপনার
ব্যবসার পরিধির উপর নির্ভর করবে। আপনি যদি এমন ব্যবসা করেন যেখানে কারখানা
থেকে পোশাক কিনে সরাসরি থার্ড পার্টির কাছে বিক্রি করে দেন তাহলে আপনার ১
থেকে ২ লাখ টাকা হলেই যথেষ্ট। আপনার পোশাক কেনা এবং তার পরিবহণ খরচ বহন
করতে পারলেই হলো।
আপনি যদি একটি দোকান নিয়ে স্টক লটের পাইকারি ব্যবসা করেন তাহলে আপনাকে একটি
দোকান নিতে হবে। যদি গাজীপুর বা আশুলিয়াতে দোকান নিতে চান তাহলে আপনাকে
কয়েক লাখ টাকা অগ্রিম দিতে হবে। কারণ এসব এলাকায় দোকানের চাহিদা অনেক বেশি।
আপনি যদি আপনার এলাকায় স্টক লটের ব্যবসা করতে চান তাহলে ৩ থেকে ৫ লাখ
টাকা লাগবে। কিছু এলাকায় আরও বেশি কিছু লাগতে পারে। কারণ কিছু এলাকায় দোকান
ভাড়া অনেক বেশি। কর্মচারীর বেতন এবং দোকান সাজসজ্জার খরচও অনেক বেশি।
তবে আপনি যদি অনলাইনে স্টক লটের ব্যবসা করতে চান তাহলে অনেক কম খরচে একটি
গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি
করতে হবে। সেখানে আপনি সকল পণ্য ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রদর্শন করবেন। তারপর
ক্রেতারা আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে পণ্যের অর্ডার করবে আর আপনি বিক্রি
করবেন। এটা তখন একটা ই-কমার্স ব্যবসা হয়ে যাবে।
স্টক লট ব্যবসায় আপনাকে যেসব সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে
গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা করতে গেলে আপনাকে কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। এসব সমস্যা আপনাকে দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করতে হবে। এসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে –
১. পোশাকের কোয়ালিটি নিয়ে সমস্যা থাকবে। অনেক পোশাকেই কিছু ছেঁড়া বা সেলাইয়ের সমস্যা থাকতে পারে।
২. অনেক সময় দেখা যায় দোকানে আনার কিছুদিন পর কিছু কাপড়ের সেলাই খুলে যায়। তখন আপনাকে সেলাইয়ের পেছনে কিছু ব্যয় করতে হতে পারে।
৩. কিছু কাপড় আছে যেগুলোর কিছুদিন পর রঙ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর ফলে সেই পোশাক হয় আপনাকে কম দামে বিক্রি করতে হবে নাহলে সেগুলো বিক্রি করাই আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে।
৪. অনেক দোকান মালিক আপনার কাছ থেকে এসব কাপড় বাকিতে নিতে চাইবে। কিন্তু বেশিরভাগ সময় দেখা যায় দোকানিরা বিক্রি না হওয়ার অজুহাতে পোশাকের দাম দিতে গড়িমসি করে থাকে।
গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা কেমন লাভজনক
গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা অনেক লাভভজনক একটি ব্যবসা।আপনি গোল গলার একটি টিশার্ট ৩০-৫০ টাকা দিয়ে কিনতে পারবেন সেই টিশার্ট আপনি ১০০ থেকে ১২০ টাকা অনায়াসে বিক্রি করতে পারবেন। কলারসহ টিশার্ট ১০০ থেকে ১২০ টাকায় কিনতে পারবেন যা মার্কেটে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করা যায়।
একটি জিন্স প্যান্ট আপনি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় কিনতে পারবেন সেটা আপনি ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।
একটি শার্ট ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় কিনতে পারবেন যা আপনি মার্কেটে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।
আপনি যত বেশি পোশাক বিক্রি করতে পারবেন তত বেশি আপনার লাভ। তবে কিছু পোশাক বিক্রি করতে সমস্যা হলে একটু কম দামে বিক্রি করে দিবেন তারপর অন্য পোশাক বিক্রি করে তার ক্ষতি পুষিয়ে নিবেন।
স্টক লট ব্যবসা করতে হলে যেসব বিষয়ে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে
গার্মেন্টস স্টক লট ব্যবসা শুরু করতে চাইলে আপনাকে অনেক বিষয়েই সতর্ক থাকতে হবে। যেমন –
মার্কেটের চাহিদা এই ব্যবসা শুরু করার আগেই আপনাকে স্থানীয় মার্কেটের চাহিদা সম্পর্কে জানতে হবে। আপনি যে এলাকায় স্টক লটের পোশাক বিক্রি করবেন সেখানকার ক্রেতারা কোন ধরণের পোশাক ক্রয় করে থাকে সেসব বিষয় সম্পর্কে আপনার অবশ্যই জানতে হবে। আপনাকে বিভিন্ন দোকান মালিক এবং ক্রেতাদের সাথে কথা বলতে হবে।মার্কেটে ভাল চলে এমন পোশাক কিনতে হবে।
পোশাকের কোয়ালিটি পোশাকের কোয়ালিটি একটা বড় ফ্যাক্টর। আপনি এমন পোশাক আনলেন দেখা গেল বেশিরভাগেরই বিভিন্ন সমস্যা আছে তাহলে আপনি লসে পড়তে পারেন। তাই একজন স্টক লট বায়ার হিসেবে আপনি যখন স্টক লট কিনতে যাবেন তখন আপনাকে ভালভাবে চেক করে লট কিনতে হবে। যদি সম্ভব হয় এসব পণ্য কেনার ব্যাপারে অভিজ্ঞতা আছে এমন কাউকে সাথে নিয়ে যাবেন।
বাকিতে বিক্রি স্টক লট ব্যবসায় এটা একটা বড় ধরণের সমস্যা। অনেক ব্যবসায়ী আপনার কাছ থেকে বাকিতে পোশাক নিয়ে পোশাকের দাম দিতে অনেক দেরি করবে। এর ফলে আপনার নতুন পোশাকের অর্ডার করতে সমস্যা হবে। তাই সহজে বাকিতে পোশাক দিবেন না আর দিলেও এমন ব্যবসায়ীকে দিবেন যারা টাকা দিতে গড়িমসি করবে না।
পোশাকের দাম স্টক লট ক্রয় করার সময় অবশ্যই আপনাকে পোশাকের দামের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এমন দাম দিয়ে অবশ্যই কিনবেন না যে দামে আপনি কিনে যাতায়াত খরচ দিয়ে নিজের এলাকায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে পোষাতে পারবেন না। এজন্য আগেই এসব পোশাকের দামের ব্যাপারে একটা ভাল ধারণা নিয়ে তারপর স্টক লট কিনতে যাবেন।
প্রতারক থেকে সাবধান অনেক সময় দেখা যায় পোশাকের স্যাম্পল একটা দেখিয়ে প্যাকেটের ভেতর অন্য পোশাক দিয়ে দেয়। এটা বেশি হয় যখন আপনি গার্মেন্টসে না গিয়ে অন্য কোন মাধ্যম ব্যবহার করে কিনবেন তখন। তাই আপনি যখন স্টক লট কিনতে যাবেন তখন আপনাকে ভাল করে চেক করে তারপর পোশাক কিনতে হবে। স্যাম্পলের সাথে প্যাকেটের ভেতরের কাপড় ঠিক আছে কিনা তা ভাল করে দেখে নিবেন।
প্রথম দিকে কম পরিমাণে কিনুন প্রথম দিকে অবশ্যই বেশি পরিমাণে ক্রয় করবেন না। কারণ আপনি যদি বেশি পরিমাণে কিনে ফেলেন আর যদি সেভাবে বিক্রি করতে না পারেন তাহলে আপনি বড় ধরণের ক্ষতির শিকার হবেন। সবচেয়ে ভাল হয় আপনি যদি কিছু বায়ার মেনেজ করতে পারেন। তাহলে তাদের কাছ থেকে চাহিদা জেনে সে অনুযায়ী লট কিনতে পারবেন। আর নিজের দোকানে বিক্রি করলে আপনার দোকানের বিক্রির পরিমান হিসাব করে লট কিনুন।
বর্তমান বাংলাদেশে খেজুরের ব্যবসা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। নির্দিষ্ট কয়েকটি
জাতের খেজুরের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশে যে
খেজুরের বাজার রয়েছে তার সিংহভাগ বেচাকেনা রমজানকে ঘিরেই হয়। বাংলাদেশে
প্রতি বছর খেজুরের চাহিদা প্রায় ৫০ হাজার টন, এবং শুধু রমজান মাসেই খেজুরের
চাহিদা প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টন। অনেক ব্যবসায়ীরা শুধু রমজান মাসের আগেই
এ ব্যবসা করে থাকেন। তাই বলে এর চাহিদা যে শুধু রমজান মাসেই থাকে এমনটি
নয়। বছরের অন্যান্য সময়েও এর চাহিদা প্রচুর এবং চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি
পাচ্ছে। অনেকের মাথায় হয়ত খেজুর নিয়ে একটু ভিন্নরকম ব্যবসা করার আইডিয়া
উঁকি মেরেছে কিন্তু সঠিক গাইডলাইনের অভাবে শুরু করতে পারেন নি। আবার অনেকে
শুরু করে ছেড়ে দিয়েছেন। আজ আমরা আলোচনা করব কিভাবে শুরু করবেন খেজুরের
ব্যবসা। কিভাবে এই ব্যবসাকে বড় করবেন? এই ব্যবসা করতে কত টাকা পুঁজি
প্রয়োজন হবে এবং আর কি কি দরকার হবে? কোন জাতের খেজুরের ব্যবসা করলে বেশি
লাভবান হবেন? কিভাবে অন্যদের থেকে ভিন্ন ভাবে এই ব্যবসা পরিচালনা
করবেন?.....
খেজুরের উপকারিতা যেমন অতুলনীয় তেমনি স্বাদও। খেজুর
পছন্দ করেনা এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। আর পবিত্র রমজান মাস খেজুর ছাড়া
কল্পনাই করা যায় না। বর্তমানে রমজানের আগে পরে ফেসবুক ইন্সটাগ্রামে খেজুরের
বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখা যায়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই তারা ব্যবসা
ছেড়ে দেন। তার মূল কারণ হল তারা ব্যবসাটি ভালভাবে ধরতে পারেনা। আচ্ছা এখন
আপনি কিভাবে এই ব্যবসা শুরু করবেন? তার আগে দেখতে হবে আপনার বর্তমান অবস্থা
কি? যারা খেজুরের ব্যবসায় একেবারে নতুন অর্থাৎ অনলাইন অফলাইনে কোথাও এ
ব্যবসা আগে করেনি তাদের শুরু করার ধরন আর যারা এর আগেও ব্যবসা করেছে অথবা
বর্তমানেও অন্যান্য ফলের ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের খেজুরের ব্যবসা শুরু করার
ধরন ভিন্ন হবে। যারা এর আগে কখনও খেজুরের ব্যবসা করেনি তারা কিভাবে শুরু
করবে সেটা আগে বলি।
ধরুন আপনার অফলাইনে কোনো দোকান বা অফিস অথবা
গুদামঘর এগুলো কিছুই নেই। আপনার হাতে ১৫-২০ হাজার টাকাও আছে। কোনো সমস্যা
নেই এই অল্প টাকা দিয়েই শুরু করতে পারবেন। তার আগে আপনাকে খেজুরের কোনো
পাইকারি ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে নিতে হবে। আপনি তার কাছ থেকে অল্প অল্প করে
খেজুর কিনবেন। ধরুন ১০ থেকে ১৫ কেজি খেজুর একসাথে কিনবেন। তারপর প্যাকেটে
একটু পরিবর্তন আনবেন। আপনার প্রতিষ্ঠানের নামে স্টিকারও লাগাতে পারেন।
তারপর একটু দামি যে খেজুর থাকে সেগুলো ছোট বক্সে রাখবেন। ১/২ কেজি এবং ১
কেজি খেজুর ধরে এধরনের বক্স নিবেন। বক্সগুলো সচ্ছ থাকতে হবে যাতে ভিতরের
খেজুর দেখা যায়। বক্সের উপরে আপনার প্রতিষ্ঠানের নাম যেনো থাকে। বক্সের
গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদের তারিখ তারিখ উল্লেখ করবেন। এ ব্যবসা শুরু করতে
আপনার ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হলেই চলবে। এবার আসি কাস্টমার পাবেন কোথায়।
এটা কিন্তু অনলাইন নির্ভর ব্যবসা হবে কারন আপনার অফলাইনে কোনো দোকান নেই।
আপনি কার্ড এবং লিফলেট ছাপাতে পারেন যেখানে ছবিসহ খেজুরের দাম এবং অন্যান্য
কন্ডিশন উল্লেখিত থাকবে। লিফলেট বেশি প্রচার করবেন পরিচিত জনদের কাছে কারণ
পরিচিতজনদের কাছে আপনি মোটামুটি বিশস্ত। আর মেয়াদোত্তীর্ণ বা খারাপ পন্য
বিক্রির চিন্তাও মাথায় আনবেন না। আপনি যদি আজওয়া খেজুর বিক্রি করেন তাহলে
অরিজিনালটাই দিবেন। এভাবে সকল পন্যই নির্ভেজাল রাখবেন। তারপর আসি, যাদের
ইতিমধ্যে কোনো ফলের দোকান আছে তারা কিভাবে এ ব্যবসা করবে?
যাদের ফলের
দোকান আছে তারা অন্যান্য ফলের পাশাপাশি খেজুর দোকানে উঠাবে। কিন্তু এতে
তারা অতিরিক্ত কাস্টমার পাবেনা। অতিরিক্ত কাস্টমার পাওয়ার জন্য আপনার
ইন্টারনেটকে ব্যবহার করতে হবে। ফেসবুকে আপনার দোকানের নামে পেইজ খুলতে হবে।
সেখানে খেজুরের বিভিন্ন অফার এবং খেজুরের দাম সম্পর্কিত পোস্ট এবং ভিডিও
আপলোড দিবেন। শুধু খেজুর নয় সেখানে অন্যান্য ফলও বিক্রি করতে পারেন। ফেসবুক
অনলাইনে বেচাকেনার জন্য বড় একটি প্ল্যাটফর্ম। সুতরাং এটাকে কাজে লাগাতে
হবে। পেইজে খেজুর সহ অন্যান্য ফলের উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম নিয়েও নিয়মিত
পোস্ট দিবেন। আর কাস্টমার পেতে অবশ্যই পোস্ট বুস্ট করতে হবে।
খেজুরের
কিন্তু অনেকগুলো জাত রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় হল... আজওয়া, আনবারা,
সাগি, সাফাওয়ি, মুসকানি, খালাস, ওয়াসালি,বেরহি, শালাবি, ডেইরি, মাবরুম
ইত্যাদি। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হল আজওয়া খেজুর। বাংলাদেশেও এ খেজুরের
চাহিদা বেশি তবে দামও একটু বেশি।
বাংলাদেশে যে সকল খেজুর পাওয়া যায় তার দাম কেজিপ্রতি ৭০৳ থেকে ৩০০০৳ পর্যন্ত হয়ে থাকে।
কোথায় পাইকারি খেজুর পাবেন?
বাংলাদেশে
খেজুরের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার হল ঢাকার বাদামতলী। আপনি চাইলে সেখান
থেকে পাইকারি খেজুর ক্রয় করে ব্যবসা করতে পারেন। বর্তমানে যেহেতু আজওয়া,
আনবারা, সাফাওয়ি খেজুরের চাহিদা বেশি এবং দামও ভালো পাওয়া যায় তাই এইসব
খেজুরের ব্যবসা করলে বেশি লাভবান হবেন। শুকনো খেজুরের চাহিদাও কম নয়। তাই
শুকনো খেজুরের ব্যবসাও করতে পারেন। আপনি যদি খেজুর পাইকারি বিক্রি করতে চান
তাহলে আপনি আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিনামূল্যে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারেন।
আমাদের এই ওয়েবসাইটে খেজুরের পাইকারি বিক্রেতারা খেজুর বিক্রিও করে থাকেন।
আপনি চাইলে সেখান থেকেও কিনতে পারেন।
আজকের আলেচনা নিয়ে কোনো মতামত বা প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।
ধন্যবাদ।