কিভাবে ইন্ডিয়া থেকে পণ্য আমদানি করে ব্যবসা করবেন? ইন্ডিয়া থেকে পন্য আমদানির সকল নিয়ম।
Posted on: 2022-08-12 14:49:45
| Posted by: eibbuy.com
বাংলাদেশ হলো একটি আমদানি নির্ভর দেশ। দেশের খাদ্য
দ্রব্যের প্রয় সব আমদানি করা হয় ইন্ডিয়া থেকে। এ ছাড়া পোশাক এর মধ্যে
শাড়ি, থ্রিপিস, কাপড় উল্লেখযোগ্য হারে ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করা হচ্ছে। বলা
যাচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রচুর পরিমাণ পন্য আমদানি করা হচ্ছে বাংলাদেশে। তাই
আমাদের মধ্য অনেকেই জানতে চেয়েছেন কিভাবে ইন্ডিয়া থেকে পন্য আমদানি করে
ব্যবসা করব। আজকের পর্ব তাদের জন্য।
ইন্ডিয়া
থেকে পন্য আমদানির প্রথম যে মাধ্যম এর নিয়ম নিয়ে আলোচনা তা হলো বাল্ক বা বেশি পরিমান পন্য কিভাবে
ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করবে। এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
অন্যান্য যে মাধ্যমে ইন্ডিয়া থেকে পন্য আমদানি করা যায় সেগুলোর নিয়ম এর পর আলোচনা
করব। আশা করি শেষ পর্যন্ত আমাদের এই পোস্ট পড়বেন।
প্রথমে আমাদের জানতে
হবে বৈধ ভাবে বিশ্বের যে কোন রাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি করতে আপনাকে আমদানি
লাইসেন্স করতে হবে। আমদানি লাইসেন্স কিভাবে করতে হয় আমাদের এই ওয়েব সাইটে দেওয়া আছে দেখে নিতে পারেন । এবারের কাজ হলো ইন্ডিয়ান যে সেলার আছে তার Importer Exporter Code (IEC)আছে কিনা তা নিশ্চিত করা। কারণ Importer Exporter Code (IEC) ছাড়া ইন্ডিয়া থেকে পণ্য রপ্তানি করা যায়না।
কিভাবে ইন্ডিয়া তে Importer Exporter Code (IEC) করতে হয়?
সাপ্লায়ার
যদি না যানে তাহলে আপনি তাকে বলে দিবেন। আমদানি বা রপ্তানি কারক রা প্রথমে
dgft ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে e-IEC এর জন্য একটা ANF2A অনলাইন
ফর্ম পুরন করতে হবে। সাথে ডিজিটাল সাইন ও দিয়ে দিতে হবে। তবে এটা DIPP এর
e-biz portal থেকেও করা যাবে। আপনি প্রথমে এই বিষয়টি জেনে নিবেন।
স্যাম্পল দেখা-
আমাদের
মধ্যে যারা ইন্ডিয়া গিয়ে পন্য আমদানি করতে চান তাদের সেম্পল আনার প্রয়োজন
নেই। আপনি যদি অনলাইনে ইন্ডিয়ান সেলারের সাথে কথা বলেন তবে স্যাম্পল এনে
দেখে নিবেন। তবে ভালো মানের ওয়েব সাইট দেখে নিবেন,
যেমন ইন্ডিয়া মার্ট। তবে আপনি এক বার গিয়ে সরাসরি সাপ্লায়ার এর সাথে দেখা
করে নিবেন। এর পর অনলাইনে অর্ডার দিতে পারেন।
পি আই আনা-
এবারের
কাজ হল সেলারের কাছ থেকে পি আই আনা। পি আই নিয়ে বিশাল পোস্ট আছে দেখে নিতে
পারেন। পি আই তে আপনার কোম্পানির একটি সিল মেরে সাইন দিয়ে আপনি যে
ব্যাংক থেকে এলসি করতে চান সে ব্যাংকে চলে যাবেন। পি আই তে আপনার পণ্যের
দাম, ওজন, পরিমাণ, আমদানিকারকের নাম, রপ্তানি কারকের নাম, রপ্তানি কারকের
ব্যাংক আকাউন্ট নাম্বার ইত্যাদি উল্লেখ থাকবে।
এলসি করা-
এবার
ব্যাংকে আপনি টাকা জমা দিবেন। যত ডলার এল সি করতে চান। তবে এলসিতে আপনি যে
পণ্য আমদানি করবেন মূল ক্রয় দাম উল্লেখ করতে হয়।খুব সাবধানে এলসি ফর্ম
পুরন করতে হবে। এখানে আপনি যে পণ্য আনবেন তার নাম এবং HS কোড এবং ফুল ভ্যলু
উল্লেখ করতে হবে। কোন ভাবেই যেন HS কোড ভুল না হয়।এবার ব্যাংক সকল কাগজ
পত্র সেলারকে পাঠাবে। সেলার সব যাচাই বাছাই করে, ট্রাক চালান, এল সি ফর্ম,
পি আই, কমার্শিয়াল ইনভএস, প্যাকিং লিস্ট পুনরায় বাঙ্কে পাঠাবে। ব্যাংক সকল
কাগজ পত্র সাইন করে আপনাকে দিয়ে দিবে।
পণ্য ছাড় করানো -
এবার
আপনার কাজ হলে পন্য ছাড় করানো। সাপ্লায়ার আপনাকে আমদানি করা পন্যের সকল
ডকুমেন্টস কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে পাঠিয়ে দিবে। পন্য পাওয়ার পর সকল
ডকুমেন্টস একজন সি এন্ড এপ কে দিবেন। তিনি আপনার পন্য ছাড়ানোর ব্যবস্থা
করবে। পন্য ছাড়ানোর পর সি এন্ড এপ থেকে সকল ডকুমেন্টস বুঝে নিবেন। এগুলো
গুরুত্বপূর্ণ। সি এন্ড এপ কে কাজ দেওয়া আগে ভালো ভাবে কথা বলে নিবেন।
https://cnfagentbd.com/
https://cnfagentbd.com/
ইন্ডিয়া থেকে পন্য আমদানির অন্যন্য নিয়ম
এটা
হলো আপনি পন্য কিনে বাংলাদেশ এর যে কোন শিপিং এজেন্ট এর ইন্ডিয়ার ওয়ার
হাউস এ গিয়ে পন্য দিয়ে আসবেন তারা পন্য ইন্ডিয়া থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসবে। এ
ক্ষেত্রে তারা কেজি হিসেবে শিপিং করে এনে দিবে। এটাকে বলে ডোর টু ডোরে
পন্য আমদানি। এভাবে আপনি নিজে গিয়ে তাদের কাছে পন্য দিয়ে আসতে পারেন বা যে
সাপ্লায়ার থেকে পন্য আপনি অনলাইনে কিনবেন তাদের বলবেন তাদের বাংলাদেশের
শিপিং এজেন্ট এর ঠিকানায় পাঠাতে। তবে যে পন্য গুলো খুব দামী সেগুলো এ
সিস্টেমে আপনি আমদানি করবেন না।
লাগেজ এর মাধ্যমে পন্য আমদানি, যেমন আপনি ইন্ডিয়া থেকে কিছু পরিমাণ পন্য আমদানি করতে পারেন। ফ্রি টেক্স দিয়ে।
টেক্স
দিয়ে লাগেজ করে পন্য আমদানি করতে পারেন তবে সেটি বাংলাদেশ লাগেজ আইন
অনুযায়ী হবে। বাংলাদেশ লাগেজ আইন পড়তে এখানে ক্লিক করুন। আপনি যদি লাগেজ
করে বেশি পন্য আমদানি করেন তাহলে লাগেজ আইন অনুযায়ী তা বাজেয়াপ্ত করবে।
এ
ছাড়া অবৈধ অনেক উপায়ে পন্য আমদানি করতে পারেন। সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত
অলোচনা করা হলো না। অবৈধ পথে পন্য আমদানি করতে কিছু কম খরচ হবে। কিন্তু এক
বার যদি পন্য না আসে তাহলে আপনার এত দিনের সকল ব্যবসা শেষ। তাই আমাদের
উপদেশ হলো বৈধ ভাবে পন্য আমদানি করা। যদি আপনি সকল বিষয়ে না জানেন তাহলে
আপনি আমাদের এই ওয়েব সাইটে দেখতে পারেন।
ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করতে কিছু বিষয় খেয়াল রাখবেন -
-পণ্যের
দাম কোন মুদ্রায় ঘোষণা করবেন ? ডলার নাকি রুপিতে ? ওরা সাধারণত রুপিতে সেল
করে। আপনি যে কোন মুদ্রা এল সি তে উল্লেখ করতে পারবেন। সেটা সাপ্লায়ার এর
সাথে কথা বলে নিবেন।
*
ইন্ডিয়া থেকে সাধারণত ট্রাকে করে পন্য আমদানি করা হয় । এয়ারে সাধারণত খুব
দামী পন্য আমদানি করা হয়। ট্রাকে পন্য আমদানিতে শিপিং খরচ কম হয় তাই
কলকাতা বা আসে পাশের এলাকা গুলি থেকে আমদানি করার চেষ্টা করবেন।
-
যেহেতু আমরা উভয়ে সার্ক ভুক্ত দেশ, তাই কিছু পণ্য আমদানিতে ট্যাক্স
মউকুপের বিশেষ সুযোগ রয়েছে। আপনারা আমদানি করার আগে অবশ্যই সেগুলি ভালো করে
যেনে নিবেন।
-- খাদ্য দ্রব্র যেমনঃ চাল, ডাল , পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি আমদানি করতে সরকারের বিশেষ নিয়ম কানুন রয়েছে ।
-- কোন পোর্ট দিয়ে কোন পন্য আমদানি করবেন সেটা নির্ধারণ করবেন শিপিং চার্জ কোন পোর্ট এ কম আসে।