এই ব্যবসার উদ্দেশ্য হলো দেশের লক্ষ বেকারের চাকরিতে নিয়োগের জন্য একটি নিয়োগ সংস্থা চালু করা।
বাংলাদেশের
শ্রমবাজার দিন দিন আরও পরিপক্ক হয়ে উঠছে এবং ফলস্বরূপ নিয়োগ সেবা দিন
দিন আরো জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এখন অনেক সংস্থাই যারা কর্মীদের সন্ধান করছে
তারা এই নিয়োগ সংস্থাগুলির সেবা নিয়ে থাকেন। এই Recruitment Agency বা
নিয়োগ সংস্থা গুলি শ্রমবাজারে নিয়োগ কারী প্রতিষ্ঠান এবং চাকরিপ্রার্থীদের
মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করে ।
সুতরাং
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থা খোলার ব্যবসায়ের একটি সম্ভাবনাময়
ব্যবসা হিসাবে বিবেচিত । আর Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থা খোলার
সুবিধার মধ্যে রয়েছে অপেক্ষাকৃত কম প্রাথমিক বিনিয়োগ, স্বল্প পরিচালনা
ব্যয়, দেশ ভিত্তিক ব্যবসায়ের সম্ভাবনা এবং খুব সহজে ব্যবসাটি শুরু করা
যায়।
ব্যবসাটি
শুরু করার জন্য একটি অফিস ভাড়া নিতে হবে । অফিসটি অঞ্চলটি ১২ স্কয়ার ফিটের
হলেই হবে । ভাড়া মোটামুটি ১০,০০০-১৫,০০০ টাকা হবে। তবে ততটা বাণিজ্যিক
এলাকায় এটা না দিলেও হবে।
প্রাথমিক
বিনিয়োগ ৫ লাখ টাকা দিয়েও আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন । প্রাথমিক
বিনিয়োগগুলির মধ্যে অফিস আসবাবপত্র , সফ্টওয়্যার কেনা , নিয়োগকর্তা এবং
চাকরিপ্রার্থীদের ডাটাবেস তৈরি করা , সেইসাথে ব্যবসাটি থেকে লাভ পাওয়ার আগে
একটি মূলধন তহবিল । ব্যবসাটিতে বিনিয়োগের বেশিরভাগ অংশ অফিসের আসবাবপত্র
অধিগ্রহণে খরচ হবে যা প্রায় খরচের ৫০% চলে যাবে।
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থা ব্যবসা নিয়ে বিস্তারিত
বাংলাদেশের
অর্থনীতির বিকাশের ফলে এদেশে একটি জটিল শ্রম বাজার ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।
ফলে ব্যবসায় এক্সপার্টদের খুজে বের করা অনেক প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি
গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর এই কাজে Recruitment Agency বা
নিয়োগ সংস্থাগুলি সহায়তা করে। বর্তমানে, অনেক প্রতিষ্ঠানই আছে যারা
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার সেবা নিয়ে থাকে।
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার মূল সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি নিচে দেয়া হলো ।
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থা খোলার সুবিধা
কম বিনিয়োগে শুরু করা যায়
কম সময়ে লাভ পাওয়া যায়
ব্যবসার বাজার বিশেষ সিজনের উপর নির্ভর করে না
ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের খুব সহজে পরিচালনা করা যায়
ব্যবসাটির পরিচালনা ব্যয় খুব কম
অনেক বেশী কর্মীদের প্রয়োজন হয়না ।
ব্যবসার জন্য তেমন কোন লাইসেন্স দরকার নাই ।
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থা খোলার অসুবিধা
বাজারে বেশী প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে
অসাধু নিয়োগকর্তা এবং কর্মচারীদের ঝুঁকি
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থা যেসব সেবা দিয়ে থাকে
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থা নিম্নলিখিত ধরণের সেবা সরবরাহ করতে পারেঃ
১) সিভি
স্ক্রিনিং । যেসব সিভি জমা পড়বে সেগুলি স্ক্রিনিং করে একটা ডেটাবেস তৈরি
করতে হবে । আবেদনকারীদের সিভি ফিল্টারিংয়ের মাধ্যমে তাদের শিক্ষা, বয়স,
কাজের অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য বিষয় গুলির ভিত্তিতে আলাদা আলাদা ডেটাবেস তৈরি
করা।
৩)
নির্দিষ্ট পদের জন্য উপযুক্ত আবেদনকারী নির্বাচন। সম্ভব হলে সিভি
জমাদানকারীদের একটি সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করা। এতে করে উপযুক্ত প্রাথি
নির্বাচন করাটা সহজ হবে।
৪) আবেদন কারীদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন কোর্সের ব্যবস্তা করা ।
৫) নিয়মিত
আবেদন কারীদের মূল্যায়ন এবং পরীক্ষা নেয়া। এই পদ্ধতিতে সংস্থাগুলি আগ্রহী
কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানো যায় এবং তাদের এই মূল্যায়ন এবং পরীক্ষা মার্কস
প্রোফাইলে সংযুক্ত করা যেতে পারে। কর্মীদের মূল্যায়ন মানবসম্পদ পরিচালনার
জন্য একটি অপরিহার্য বিষয়, যা আপনাকে চাকরি প্রাথিদের ভবিস্যত সম্ভাবনা,
অনুপ্রেরণা, পেশাদার উপযুক্ততা এবং অন্যান্য বিষয়গুলি মূল্যায়ন করতে
সাহায্য করবে।
৬) প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সাথে স্টাফ লিজিং চুক্তি করা।এই স্টাফ লিজিং দুই ধরনের হয়ে থাকে।
)) আউট
স্ট্যাফিং - এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে এজেন্সি ক্লায়েন্টের জন্য
কর্মচারীদের নির্বাচন করে না, তবে ক্লায়েন্ট বিদ্যমান কর্মীদের থেকে ইচ্চা
মত যে কাউকে বেছে নিতে পারবেন ।
)) আউটসোর্সিং - এই প্রক্রিয়ায় কোম্পানি তাদের কাজ সম্পাদনের জন্য চুক্তি করবে আর নিয়োগ সংস্থা যে কাউকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পারবে।
আপনার ব্যবসায়ের জন্য তৈরি ধারণা
৭) বিভিন্ন
সংস্থা থেকে বরখাস্তকৃত কর্মীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা ।
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার একটি সেবা যা বিভিন্ন সংস্থা থেকে
বিভিন্ন সময় বরখাস্ত কৃত বা চাটাইকৃত কর্মীদের নির্দিষ্ট শর্তে
কর্মসংস্থানের জন্য একটি ব্যবস্থা করা।
এটি
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার প্রধান কাজ হলো সংস্থার
ক্লায়েন্টদের শূন্যপদের জন্য কর্মচারীদের সন্ধান করা এবং গ্রাহকের
প্রয়োজনীয়তা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা এবং শূন্যপদের জন্য দ্রুত উপযুক্ত
প্রার্থীদের নির্বাচন করা । এজেন্সিটির দক্ষতার সাথে কাজ করার জন্য অনেক বড়
কর্মী ডাটাবেজ থাকতে হবে। জখনই কর্মীর জন্য আদেশ প্রাপ্ত হবে সাথে সাথে
সংস্থাটি দ্রুত কর্মী সরবরাহ করতে পারবে। যদি কর্মী বাছাইয়ে দেরি হয় তবে
ক্লায়েন্ট অন্য নিয়োগ সংস্থার সাথে কাজ শুরু করে দিতে পারে।
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার কাজের পরিকল্পনা
১। কোন নিয়োগকর্তার কাছ থেকে আদেশ প্রাপ্ত হওয়া।
২।কি ধরনের কর্মচারী প্রয়োজন তা সনাক্ত করা ।
৩। ডাটাবেস থেকে আবেদনকারীদের মধ্যে উপযুক্ত কর্মী নির্বাচন করা ।
৪। ডাটাবেসে কোন উপযুক্ত কর্মী না থাকলে ইন্টারনেটে বা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া ।
৫। এক
সাথে কয়েকজন যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা। প্রার্থীদের নির্বাচন করার সময়
অবশ্যই এজেন্সিটি তাদের সরবরাহ করা তথ্যের যথার্থতা যাচাই করতে হবে। যেহেতু
প্রার্থীর কাছ থেকে ভুয়া তথ্য পাওয়ার ঝুঁকি রয়েছো ফলে সঠিক কর্মচারী
নির্বাচিত না হবার সম্ভাবনা আছে।
৬। নিয়োগকর্তাদের সাথে নির্বাচিত প্রার্থীদের জন্য সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করা ।
৭। নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীর জন্য শিক্ষানবিশ সময়কালের জন্য অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা করা ।
৮। নিয়োগকর্তা যদি শিক্ষানবিশ কালে নির্বাচিত প্রার্থীকে বরখাস্ত করে তবে এজেন্সি কর্মচারীর জন্য এককালীন কিছু সম্মানি দিবে ।
তবে
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থাগুলি ভবিষ্যতে তাদের এই সেবার পরিসর
আরও বাড়াতে পারবে। যেমন একটি বিজনেস স্কুল প্রতিষ্ঠা করা, চাকরি বিসয়ক
পরামর্শমূলক সেবা সরবরাহ করা এবং দক্ষতা উন্নয়নে কর্মীদের প্রশিক্ষণ
দেওয়া।
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার বিক্রয় ও বিপণন ব্যবস্থা
একটি
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার টার্গেট কাস্টমার হলো সেসব
সংস্থাগুলি যারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানের জন্য যোগ্য কর্মীদের নির্বাচনে
আগ্রহী।
বাস্তবে
দেখা যায় যে কোন Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার প্রচার প্রসারই হলো
একটি ব্যবসা শুরু করার পক্ষে সবচেয়ে কঠিন পর্যায়। কোন Recruitment
Agency বা নিয়োগ সংস্থার প্রচারের কৌশলটি বেশ কঠিন কারণ এক্ষেত্রে সরাসরি
বিজ্ঞাপন অকার্য্যকর। একটি Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থা
প্রতিযোগিতা পূর্ণ বাজারে টিকে থাকার জন্য বিজ্ঞাপনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রয়েছে। সুতরাং, Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার বিজ্ঞাপন প্রচার এবং
বিজ্ঞাপনের পদ্ধতিগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিবেচনা করতে হবে।
Recruitment
Agency বা নিয়োগ সংস্থার বিজ্ঞাপনের জন্য একটি সঠিক আর পূর্ণাঙ্গ
বিজ্ঞাপন ব্যতীত এই ব্যবসা প্রসার অসম্ভব। প্রথম পর্যায়ে, বিজ্ঞাপন
কার্যক্রমের লক্ষ্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জানানো যে আপনারা একটি নিয়োগ
সংস্থা খুলেছেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন ন্যূনতম ব্যয়ে বিজ্ঞাপনের
লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়। আপনার টার্গেট কাস্টমার নির্ধারণ করার জন্য
আশেপাশের ব্যবসায়ের পরিবেশ আনালাইসিস করা উচিত এবং আপনার ব্যবসার জন্য
সর্বাধিক সম্ভাবনাময় শিল্প এবং প্রতিষ্ঠানগুলি সনাক্ত করা। বিভিন্ন মাধ্যমে
আপনাদের সেবার তথ্য সরবরাহ করা যেতে পারে যেমন সম্ভাব্য গ্রাহকদের ইমেলে
বিজ্ঞাপন প্রেরণ করা যেতে পারে, বিভিন্ন ব্যবসায়িক ইভেন্টে অংশ নেওয়া
যেতে পারে, জব মেলা গুলিতে অংশ নেয়া যাতে পারে, ওয়েবসাইটে প্রচার করা যেতে
পারে , ফেসবুকে বিজ্ঞাপন
দেয়া যেতে পারে।
আপনার
প্রতিষ্ঠানের জন্য নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করা খুবই দরকার। অনেকই একমত যে
ইন্টারনেটের মাধ্যমে ওয়েবসাইট তৈরি এবং প্রচার হলও নিয়োগ সংস্থাগুলির
প্রচারের সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম। প্রথমত, এই মাধ্যমটি সম্ভাব্য গ্রাহকদের
সাথে যোগাযোগের প্রক্রিয়াটিকে সহজতর করে। দ্বিতীয়ত, এটি একটি
প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে সাহায্য করবে। তৃতীয়ত,
এটি উভয় পক্ষের সাথে, গ্রাহক সংস্থার সাথে এবং আবেদনকারীদের সাথে সহজেই
যোগাযোগের প্রক্রিয়াটিকে সহজতর করবে। ওয়েবসাইটে প্রদত্ত সেবার তালিকা এবং
সেবার জন্য ফি এবং শর্ত গুলির বিস্তারিত বিবরন থাকতে হবে। এই জাতীয় একটি
ওয়েবসাইটের ব্যয় হবে প্রায় ৫০০০০ টাকা। কোন ওয়েবসাইট গুগলে শীর্ষ
ওয়েবসাইট গুলিতে প্রদর্শন করা প্রয়োজন এসইও করা। এই জাতীয় কাজের জন্য
ব্যয় পারে গড়ে ১৫-২০ হাজার টাকা।
আপনি সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিনেও বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। সংবাদ পত্রে বিজ্ঞাপন দিতে আপনাকে ১০০০ থেকে ১ লাখ টাকা খরচ হতে পারে।
মোবাইল ফোনে কল করা এবং ইমেল করা। আপনি আপনার সম্ভাব্য গ্রাহকদের আপনাদের সেবা সম্পর্কে অবহিত করতে একটি ডেটাবেস তৈরি করতে পারেন।
এছাড়া আপনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লিফলেট বিতরণ করতে পারেন। এই ধরনের বিজ্ঞাপনের লক্ষ্য সম্ভাব্য আবেদনকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।
একটি Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থা তৈরির কর্ম পরিকল্পনা
একটি নিয়োগ সংস্থা কীভাবে খুলবেন?
একটি Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থা খোলার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।
>ব্যবসা হিসাবে নিবন্ধন করুন।
>একটি ডাটাবেস তৈরি করুন ।
>এজেন্সির প্রচার প্রচারনা শুরু করুন
>অফিস নির্ধারণ করুন ।
> অফিসের জন্য প্রয়োজনীয় আসবাব পত্র কিনুন
> কর্মচারীদের নিয়োগ করুন
এবার আমরা প্রত্যেকটি ধাপকে আরও বিশদ ভাবে আলোচনা করবো
১। চাকরি প্রার্থীদের ডাটাবেস গঠন।
এই বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সময় সাপেক্ষ কাজ। আপনার প্রতিষ্ঠানের সেবার গুণমান আপনার ডাটাবেসের বিশালতার উপর নির্ভর করে। কোন নিয়োগ সংস্থার একটি ডাটাবেস গঠনের সময় নিম্নলিখিত দিকগুলি বিবেচনা করা উচিতঃ
আবেদন
কারীদের ডাটাবেস তৈরি করার জন্য সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা যেতে পারে
।বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা এই ধরনের সফটওয়্যার তৈরি করে দিবে।
এছাড়া আপনি
তৈরি ডাটাবেস কিনতে পারেন। বার্ষিক সাবস্ক্রিপশন এবং একটি মাসিক
সাবস্ক্রিপশন উভয় ফর্ম্যাটে চাকরি সাইটের ডেটাবেসগুলিতে অ্যাক্সেস পাওয়া
সম্ভব । যেমন বাংলাদেশে বিডি জবস। আপনি সেখানে একটা একাউন্ট ওপেন করে
চাকরি চাকরি প্রার্থীদের সিভি গুলি দেখতে পারবেন। সেখানে প্রদত্ত
ডাটাবেসগুলি ক্রমাগত আপডেট করা হয়, সুতরাং আপনার ডাটাও সর্বদা আপ-টু-ডেট
তথ্য থাকবে।
তবে একটি ভালো ডাটাবেস গঠনে ২-৩ বছর সময়লেগে যেতে পারে।
একটি Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার কাজের জন্য কিছু ডকুমেন্টেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
নিয়োগ সংস্থার প্রাথমিক দলিলসমূহ
কর্মী নিয়োগ চুক্তি
এই
চুক্তিটি এজেন্সি এবং গ্রাহকের মধ্যকার সম্পর্ককে নিয়ন্ত্রণ করবে । এর
সাথে কর্মীদের বিশ্বাস যোগ্যতার গ্যারান্টি এবং দায়বদ্ধতার বিষয়গুলির
পাশাপাশি কাজের গোপনীয়তা এবং বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়গুলির জন্যও
কিছু ডকুমেন্টেশন বানানো উচিত। এসব কাজ সম্পর্কে যত বিস্তারিত পদ্ধতি
বর্ণনা করা হবে, বিরোধগুলির ঝুঁকি তত কম হবে। দলিলটি সঠিকভাবে হয়েছে কিনা
তা নিশ্চিত করার জন্য দক্ষ আইনজীবীর কাছে চুক্তির স্যাম্পল উপস্থাপন করলে
ভালো হয়।
কর্মী নির্বাচনের জন্য আবেদনপত্র গ্রহন
এই ডকুমেন্টটি একজন চাকরি প্রার্থীর জন্য গ্রাহকের প্রয়োজনীয়তা এবং তার কাজের সাধারণ শর্তগুলি ব্যাখ্যা করা থাকবে। আবেদনপত্রটি হলো একই পূর্ণাঙ্গ নথি যাতে আবেদন কারীর স্বাক্ষর থাকবে।
আবেদনকারীর জন্য প্রশ্নপত্র তৈরি
যদি আবেদনকারী Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থায় নতুন করে চাকরি শুরু করতে চায় তবে তার তথ্য সংগ্রহের জন্য অবশ্যই একটি প্রশ্নপত্র নমুনা থাকতে হবে যা আবেদনকারী পূরণ করে জমা দিবে। আবেদন কারীদের এই সিভি গুলি সংরক্ষণ করা হবে এবং পরে এই আবেদন গুলি ডাটাবেসে প্রবেশ করা হবে।
স্ট্যান্ডার্ড রেজিউম ফর্ম (সিভি ফর্ম)
এজেন্সির অবশ্যই একটি স্ট্যান্ডার্ড রেজিউম ফর্ম (সিভি ফর্ম) থাকতে হবে যা আগ্রহি কর্মীদের কাছে প্রেরণ করা হবে। ফলে উপযুক্ত প্রার্থীদের সমস্ত জীবনবৃত্তান্ত এই ফরম্যাট অনুসারে সংরক্ষণ করা হবে।
অফিস ভাড়া করা
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার ব্যবসা শুরু করার জন্য বড় অফিসের প্রয়োজন নেই । চেষ্টা করবেন অফিসটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র যেমন মতিঝিল বা গুলসানে এর কাছাকাছি অবস্থিত হয়। সাধারণত, বাণিজ্যিক এরিয়াগুলিতে অনেক অফিসে রেডিমেড আসবাবপত্র থাকে, ফলে আপনার প্রাথমিক ব্যয় অনেক কমে আসবে।
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার জন্য আর্থিক পরিকল্পনা
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার জন্য একটি সঠিক আর্থিক পরিকল্পনা করা লাগবে । প্রথম কয়েক মাস পর থেকেই একটি Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার বিনিয়োগ থেকে লাভ শুরু হতে পারে। ২- ৩ বছরের পরে ব্যবসাকে আরো বেশী সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন হবে। তখন মূলধন বাড়ানো লাগতে পারে।
এই
ব্যবসাটি শুরু করতে প্রথমেই আপনার বিনিয়োগর পরিমাণ হিসাব করতে হবে।
প্রাথমিক বিনিয়োগ হিসাবে অফিস আসবাব পত্র, সফ্টওয়্যার, বিজ্ঞাপন এবং
পরিচালনার জন্য কিছু মূলধন লাগবে।
মোটামুটি
এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য প্রাথমিক ভাবে আপনার ৫ লাখ টাকা মূলধন
প্রয়োজন। এই বিনিয়োগের ৫০ হাজার টাকা অফিস ফার্নিচারক্রয় করতে খরচ হবে,
প্রথম মাসের জন্য ভাড়া বাবদ ১৫ হাজার টাকা ব্যয় হবে, বিজ্ঞাপন বাবদ ব্যায়
২৫ হাজার টাকা, এবং অন্যান্য ব্যয় ১০ হাজার টাকা।
ব্যবসায়ের ঝুঁকি এবং সতর্কতা
এই ব্যবসার
ঝুঁকি নির্ধারণের জন্য আপনাকে প্রথমে বাজারে একটু রিসার্চ করা প্রয়োজন
হবে। একটি Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার ঝুঁকিগুলি খুজে বের করে
এগুলি প্রতিরোধের জন্য নির্দিষ্ট ব্যবস্থার গ্রহন করতে হবে। কিছু ঝুকি
নিন্মে দেয়া হলো এবং এর থেকে পরিত্রানের উপায় আলোচনা করা হবে।
প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজার ব্যবস্থা
নিয়োগকারী প্রদান কারী প্রতিষ্ঠান গুলি কর্মী নিয়োগ দেয়ার জন্য নির্ভরযোগ্য Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থা খুজে যাদের Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার বাজারে একটি সুনাম রয়েছে, যেহেতু প্রাথমিকভাবে গ্রাহক এবং এজেন্সি একে অপরের প্রতি বিশ্বাস অবিশ্বাসের ব্যাপার থাকে। ফলে অনেক নাম করা এজেন্সিগুলির জন্য আপনার নতুন সংস্থা অনেক বেশী প্রতিযোগিতার মুখা মুখি হতে হবে। এই প্রতিযোগিতার বাজারে নিজেকে টিকিয়ে রাখ্যতে আপনার নিজস্ব ক্লায়েন্ট ডাটাবেস তৈরি করতে হবে, দক্ষ পরিচালনা পদ্দতি নিতে হবে, গ্রাহকের জন্য সুবিধাজনক সহজ শর্তাবলি রাখতে হবে।
অফিস ভাড়া বৃদ্ধি
বাংলাদেশে এই সমস্যাটা এখন অনেক প্রকট । বাড়িওয়ালা প্রতি বছর ভাড়া বাড়িয়ে দেন। ফলে নির্ধারিত ব্যয় বৃদ্ধি পায় এবং সেটা আপনার আর্থিক অবস্থার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য চেষ্টা করবেন বাড়িওয়ালার সাথে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করার ।
কর্মী নিয়োগ মৌসুম
Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থাগুলির কাজের মৌসুম আছে আমদের দেশে এই মৌসুম হলো জানুয়ারি আর জুলাই মাস। বাকি মাস গুলিতে কর্মী নিয়োগ একটু কম হয়। বাকি মাসগুলিতে মানুষ চাকরি পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম।ফলে এই সময় গুলিতে আপনারা কর্মীদের অতিরিক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারেন।
তথ্যগত ঝুঁকি
আবেদন কারী কর্মীদের দেয়া তথ্য Recruitment Agency বা নিয়োগ সংস্থার কাজে একটি বিশাল প্রভাব ফেলে। যেমন আবেদনকারী নিজের সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করতে পারে । এজন্যএজেন্সি অবশ্যই আবেদনকারী প্রদত্ত সমস্ত তথ্য সঠিক ভাবে চেক করতে হবে। এজেন্সি অবশ্যই লিখিতভাবে সমস্ত লেনদেন সম্পন্ন করতে হবে । সাবধানতার সাথে ক্লায়েন্টের লেনদেনের বিষয়টি নির্ধারণ করতে হবে এবং সম্ভব হলে তাদের সেবার জন্য অগ্রিম অর্থের আবেদন করতে পারে।
কর্মীদের ডাটাবেস চুরি হওয়া
কোন কর্মী চাকুরীচ্যুত হওয়ার পরে নিয়োগকারী এবং চাকরি প্রার্থীদের "ডাটাবেস" চুরির ঝুঁকি তাহকে। ডাটাবেস চুরির ঝুঁকি হ্রাস করতে আপনার ডাটাবেসটিতে ব্যক্তিগতকৃত অ্যাক্সেস অনেক শক্তিশালী করতে হবে । পাশাপাশি ডাটাবেস তৈরি করার সময় নির্ভরযোগ্য খুব ভালো মানের সফ্টওয়্যার ব্যবহার করতে হবে।