আপনার কর্মের টোটাল টাইমের একটা পার্ট-এ এক্সট্রা কর্ম করে এক্সট্রা ইনকাম কেই পার্ট টাইম ওয়ার্ক বলে। নতুন করে পার্ট টাইম ব্যবসা কি বলে বোঝানোর খুব একটা প্রয়োজন নেই। পার্ট টাইম ব্যবসার সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। শুধু জানা দরকার কিভাবে পার্ট টাইম ব্যবসা শুরু করা যায়। লেখাটি যখন লিখছি তখন শবে মাত্র কোরবানির ঈদ সম্পন্ন। স্বাভাবিক ভাবেই কোরবানির চামড়ার ব্যবসার কথা ক্লিক করলো পার্ট টাইম ব্যবসা হিসেবে। যদিও পার্ট টাইম এই ব্যবসায় অনেকেরই মাথায় হাত। শুধু শুধু পার্ট টাইম এ নিজের মাথায় হাত উঠানোর দরকার নেই, দরকার হাত দুটোকে পকেটে রাখা, যেন পার্ট টাইম ব্যবসার টাকা বেহাত হয়ে না যায়।
আমেরিকান
এক স্টাটিস্টিকস-এ ৬৯% বিজনেসম্যান ব্যবসা শুরু করে ঘর থেকে পার্ট টাইমে
টাইম দিলে আমাদেরও একই অবস্থা হবে। সাহস করে পার্ট টাইম-এ একটা ক্ষুদ্র
ব্যবসা, হোক অতি ক্ষুদ্র, শুরু করে দিন, লেগে থাকলে আপনার আজকের পার্ট টাইম
ব্যবসাই ফুল টাইমে চলতে থাকবে দেখবেন।
কি পার্ট টাইম টাইম ব্যবসা করা যায়:
কোচিং বা
ট্রেনিং ব্যবসা - আপনি যে কাজটি ভালো পারেন, যেমন ফ্রীল্যানসিং, ফটোশপ,
ইলাস্ট্রেটর, পেইন্টিং, প্রেসেন্টেশন, ইংলিশ স্পিকিং ইত্যাদি, সেই কাজের
উপর কোচিং বা ট্রেনিং ব্যবসা করতে পারেন পার্ট টাইমে। একটা ঘর ভাড়া নিয়ে,
বা নিজ বাসাতেই দুই তিন জন স্টুডেন্ট নিয়ে শুরু করতে পারেন। সময়োপযোগী
কাজের চাহিদা বুঝে শুরু করে দিন স্বল্প ব্যয়ে এবং আয়ের এই পার্ট টাইম
ব্যবসা।
১-১০০ টাকা আইটেম:
আমাদের যাদের পার্ট টাইম ব্যবসার পুঁজি কম, তারা পার্ট টাইমে পুরান ঢাকা থেকে চাহিদা অনুযায়ী ১ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা মূল্যের কিছু সৌখিন জিনিস কিনে বিক্রি করতে পারেন। এখন যেহেতু অনলাইন শপিংএর যুগ, খুব সহজেই সোশ্যাল মিডিয়ার একটা প্লাটফর্ম খুলে পরিচিত জনের মাঝেই আপনি আপনার পণ্য বিক্রি করতে পারেন। পার্ট টাইমে ব্যবসাও হলো, পরিচিত মানুষের খোঁজ খবরও হলো।
বিজনেস প্রপোজাল ফর ক্রাউড ফান্ডিং:
পার্ট টাইম ব্যবসা শুরুর প্রথম অধ্যায় হতে পারে ক্রাউড ফান্ডিং (Crwoudfunding) প্লাটফর্মে আপনার বিজনেস প্রপোজাল সাবমিট করার মাধ্যমে। সাধারনভাবে বলতে গেলে ক্রাউড ফান্ডিং বলতে, কোন একটি প্রোজেক্ট বাস্তবায়নের জন্যে অল্প অল্প করে অনেকের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহের প্রক্রিয়াকে বোঝায়। ক্রাউডফান্ডিংটি বিভিন্ন ধরণের লাভজনক, সৃজনশীল প্রকল্প, চিকিৎসা বা ভ্রমনের উপর অথবা রেস্টুরেন্ট এর উপর, বা সামাজিক উদ্যোক্তা প্রকল্পগুলির মতো উদ্যোক্তাদের উদ্যোগে অর্থায়ন করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। পার্ট টাইমে সুন্দর করে গুছিয়ে আপনার ব্যবসাটির প্ল্যান তৈরী করে সাবমিট করুন ক্রাউড ফান্ডিং প্ল্যাটফরমগুলোতে। কারও যদি আপনার ব্যবসায়িক ধারণাটি ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই আপনাকে ব্যবসা করার জন্য টাকা প্রদান করবে। ক্রাউডফান্ডিং এর এখনকার সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইট হচ্ছে Kickstarter
ভিডিও ব্লগিং:
মেয়েরাতো পার্ট টাইম ব্যবসা হিসেবে ভিডিও ব্লগিংকেই বেঁচে নিয়েছে রীতিমতো।
বিভিন্ন জায়গা থেকে পোশাক কিনে, নিজ বাসায় লাইভ ভিডিও করে পণ্য গুলোকে
তুলে ধরে, খুব সহজেই সেল হয়ে যায় প্রোডাক্টগুলো। ছেলেদের পোশাক আশাকের এই
ধরণের ভিডিও এখনো খুব একটা হয় নি। চাইলে আপনি পার্ট টাইমে ছেলেদের জিন্স,
সোয়েটার, শার্ট কোথায় সস্তায় ভালো পাওয়া যায় তার ভিডিও করে শুরু করতে
পারেন। অবশ্যই অর্ডার পাবেন, ডেলিভারি চার্জসহ স্বল্প মুনাফায় শুরু করে
দিতে পারেন এই পার্ট টাইম ব্যবসা।
ট্যুর গাইড:
আপনি চাকরিজীবী বা স্টুডেন্ট যাই হন না কেন, ধরলাম আপনার পার্ট টাইম হলো
ছুটির দিন গুলো। একটা ট্যুর কোম্পানির প্রোফাইল খুলে ফেলুন ফেসবুকে। যেই
যেই জায়গা আপনি সহজেই অন্যকে ঘুরিয়ে আনতে পারবেন সেই জায়গার ছবি, খাবার
দাবার, যানবাহন কি হবে এই সব দিয়ে রেগুলার পোস্ট দিতে থাকেন। প্রয়োজনে কিছু
টাকা খরচ করে এড চালান ফেইসবুক এবং অনলাইন প্লাটফর্মে। ট্রাভেল গ্রুপ
গুলোতে পোস্ট করুন, ফোন নাম্বার দিন। একটা দুইটা গ্রূপ পেয়ে গেলে, ওই সকল
ট্যুরের ছবি পোস্ট করতে থাকুন। দেখবেন এক সময় পার্ট টাইম থেকে আপনার
প্রতিষ্ঠান ফুল টাইম ট্রাভেল কোম্পানি হয়ে গেছে।
তাহলে পেয়ে
গেলেন পার্ট টাইম ব্যবসার বুদ্ধি, এইবার শুরু করে দিন পথ চলা। চলার পথে যা
মনে রাখবেন তা হচ্ছে, টাকা দিয়ে ব্যাবসা করেন আর টাকা ছাড়াই ব্যবসা করেন,
ভালো কিছুর জন্য কষ্ট এবং ধর্য্য এই দুইটি বিষয়ই অনিবার্য।