পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পার্সেল পাঠানোর নিয়ম
প্রাচীন কাল থেকেই পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পণ্য আমদানি রপ্তানি করা হয়। বিশেষ করে বিদেশ থেকে আগের যুগে প্রচুর পরিমাণে চিঠি আদান-প্রদান করা হতো এই পোস্ট অফিসের মাধ্যমে। বাংলাদেশ সব পোস্ট অফিসের মাধ্যমে অনেক আগে থেকেই পণ্য আমদানি রপ্তানি করা হয়ে থাকে। যেহেতু এটি মানুষের ভিতরে খুবই একটি পপুলার মাধ্যম সেহেতু মানুষের ভিতরে এই পোস্ট অফিসে পণ্য আদান-প্রদানের ব্যাপারে একটি ভালো পজিটিভ ধারণা রয়েছে ৷ সুতরাং মানুষ চায় যে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পণ্য আমদানি রপ্তানি করতে।
কিন্তু কিভাবে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করা যায় বা বিদেশি পণ্য রপ্তানি করা যায় এটি অনেকেই সঠিক ভাবে জানেন না।
আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে দেখানোর চেষ্টা করব যে কিভাবে আপনারা বিদেশে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পণ্য পাঠাবেন এবং বিদেশ থেকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পণ্য আমদানি করবেন।
পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পার্সেল পাঠানোর নিয়ম
পোস্ট অফিস দিয়ে আমরা চিঠিপত্র আদান-প্রদান করলেও পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পার্সেল বিদেশে পাঠানোর সিস্টেম টা একটু ভিন্ন। এটা কিন্তু সব পোস্ট অফিস থেকে করা যায় না। যদিও আমরা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে যে কোন দেশ থেকে পণ্য পাঠালে সেটি যে কোন পোস্ট অফিস দিয়ে গ্রহণ করতে পারি কিন্তু সকল পোস্ট অফিস দিয়ে পণ্য আপনি বিদেশে পাঠাতে পারবেন না।
নির্দিষ্ট কিছু পোস্ট অফিস রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি পণ্য বিদেশে রপ্তানি করতে পারবেন। যেমন জেলা পোস্ট অফিস গুলো থেকে অথবা বিভাগীয় পোস্ট অফিস থেকে অথবা পোস্ট অফিসের সদর দপ্তর ঢাকা জিপিও থেকে আপনি খুব সহজেই পার্সেল বিদেশে পাঠাতে পারবেন।
পোস্ট অফিসে পার্সেল বিদেশে পাঠাতে কি কি কাগজপত্র লাগবে ?
পোস্ট অফিসের মাধ্যমে যদি আপনি পার্সেল বিদেশে পাঠাতে চান সে ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো কাগজপত্র লাগবেনা। আপনি যে সমস্ত প্রোডাক্টগুলো বিদেশে পাঠাবেন সেগুলোর একটি ইনভয়েস তৈরি করে পোস্ট অফিসে অগ্রিম নিয়ে যেতে হবে। সেই ইনভয়েসের মধ্যে আপনি কাকে এই প্রোডাক্টটা পাঠাচ্ছেন এবং আপনার নিজের ঠিকানা সেখানে লিখে দিবেন এবং কি কি পণ্য সেই প্যাকের মধ্যে রয়েছে সেটা আপনি ইনভয়েসে উল্লেখ করে দিবেন।
এরপরে সেই প্যাকেজটা আপনি ভালো করে বাঁধাই করে নিয়ে যাবেন পোস্ট অফিসে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি কপি তারা চাইতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি পোস্ট অফিসে জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি দিতে পারেন।
পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে কত কেজি সর্বোচ্চ পার্সেল পাঠানো সম্ভব ?
সাধারণত পোস্ট অফিস ইএমএস সার্ভিস ব্যবহার করে বিদেশে পণ্য পাঠিয়ে থাকে। ইএমএস সার্ভিস এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২০ কেজি প্রোডাক্ট বিদেশে পাঠানো যায়। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের নিয়ম-কানুন রয়েছে বিধায় বাংলাদেশ থেকে আপনি ১ থেকে ২০ কেজি প্রোডাক্ট পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পাঠাতে পারবেন।
পোস্ট অফিসের মাধ্যমে কি কি ধরনের পণ্য পার্সেল হিসেবে পাঠানো যায় ?
আপনি পোস্ট অফিস এর মাধ্যমে বৈধ যে কোন ধরনের পণ্য বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাঠানো পাঠাতে পারবেন। তবে লিকুইড জাতীয় পদার্থ বা দাহ্য পদার্থ অথবা যেগুলা পচে যায় গলে যায় এই ধরনের প্রোডাক্ট আপনারা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাঠাতে পারবেন না। এছাড়া তামাক জাতীয় পদার্থ মাদকদ্রব্য এগুলো পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাঠানো যাবে না।
পোস্ট অফিসে পার্সেল পাঠালে বিদেশে পার্সেল পাঠালে কতদিন সময় লাগে ?
আপনি যদি পোস্ট অফিসের সার্ভিস কখনো ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনি জানবেন যে। পোস্ট অফিসের মাধ্যমে যেকোনো পার্সেল বিদেশে পাঠালে সেটি যেতে দেশ অনুযায়ী ৩০ থেকে ৪০ দিন সময় লেগে যেতে পারে। তবে মিনিমাম ২৫ দিন সময় লাগে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে একটি পার্সেল যে কোন দেশে যেতে। সুতরাং বুঝতে পারতেছেন যদি আপনারা এই ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে এমন কোন প্রোডাক্ট দেন যেই প্রোডাক্টটা পচে যাবে বা গলে যাবে সেটা পার্সেল করা যাবে না।
পোস্ট অফিসে পার্সেল পাঠাতে কত টাকা লাগবে ?