আজকাল চাকরিজীবীরা পেশার পাশাপাশি বাড়তি আয় করতে কিছু একটা পার্টটাইম ব্যবসা করতে চান ৷ এই পার্টটাইম ব্যবসা দ্বারা সংসারে বাড়তি কিছু আয়ও করা সম্ভব ৷ এছাড়া অনেকে আছেন যারা সোসাল ওয়ার্ক করতে ভালোবাসেন ৷ পার্টটাইম ব্যবসা থেকে করা আয় দ্বারা আপনিও পারবেন সমাজের মানুষের উপকারে নিজেকে বিলিয়ে দিতে ৷ চলুন বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে কিছু পার্টটাইম ব্যবসা সম্পর্কে আলোচনা করি ৷
পার্টটাইম ব্যবসা আসলে কি ?
আসলে পার্টটাইম ব্যবসা মানে আপনি কিছু একটা করেন ৷ অবসর সময়ে কিছু করে বাড়তি আয় করতে চান ৷ অথবা ছোট আকারে কোন ব্যবসা শুরু করে সেটাকে পরবর্তিতে ফুল টাইম ব্যবসা হিসাবে দাড় করাতে চান ৷
কিভাবে শুরু করবেন ??
পার্টটাইম
ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে প্রথমে জানতে হবে কোন সময়টাতে আপনি ব্যবসাটি
করবেন ? যেমন আপনি যদি চাকুরিজীবী হন তবে অবশ্যই সন্ধার পর সময় পাবেন ৷
আবার স্টুডেন্ট হলে সপ্তায় কিছু দিন সময় পাবেন ৷ আপনার সময় অনুসারে
আপনার ব্যবসা ঠিক করতে হবে ৷
কিভাবে পার্টটাইম ব্যবসা নির্বাচন করবেন ?
আসলে ব্যবসা হলো প্রাকটিক্যাল একটি বিষয় ৷ ব্যবসা শিখতে হলে আপনাকে ব্যবসার প্রাকটিক্যাল শিক্ষা নিতে হবে ৷ যারা জব করেন তারা তার জব রিলেটেড ব্যবসা বেছে নিতে পারেন ৷ যেমন কেউ গার্মেন্টে কমার্সিয়ালে জব করেন ৷ তিনি চেষ্টা করবেন কিভাবে ছোট ছোট আইটেম নিজে সাপ্লাই দিতে পারেন ৷ আবার কেউ এ্যাকাউন্ট সেকসনে কাজ করেন, আপনি চাইলে ভ্যাট প্রাকটিসনার হিসাবে কাজ করতে পারেন ৷ ভ্যাট নিয়ে একটা কোর্স করে এটা শুরু করতে পারেন ৷ যারা মার্কেটিং করেন তাদের জন্যতো মহা সুযোগ ৷ আপনি চাইলে কিছু প্রডাক্ট পাইকারী মার্কেট থেকে কিনে খুচরা দোকানে সেল করতে পারেন ৷ সবসময় চোখ কান খোলা রাখতে হবে ৷ চিন্তা করতে হবে কোন ব্যবসাটি সময়ের এবং কাজের সাথে ভালো মানাবে ৷
কি কি পার্টটাইম ব্যবসা সবাই করতে পারবেন ??
ই-কমার্স ব্যাবসা
এটা নিয়ে তেমন কিছু বলার নাই ৷ বাংলাদেশে অনেকেই পার্টটাইম ব্যবসা হিসাবে ই-কমার্স ব্যবসা করে ভালো আয় করে যাচ্ছেন ৷ মোটামুটি ৫০ হাজার টাকা দিয়েই আপনি একটা ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে পারবেন ৷ আপনি চাইলে আপনার সখের যে কোন একটি পন্য নিয়েই শুরু করেত পারেন এ ব্যবসা ৷ যেমন আপনি নতুন নতুন পারফিউম কিনতে ভালোবাসেন ৷ আপনি চাইলে পারফিউম নিয়ে একটা ই-কমার্স সাইট খুলে ব্যবসা শুরু করতে পারেন ৷ ঢাকার চক বাজারে প্রচুর পারফিউম পাইকারী পাওয়া যাবে ৷ এছাড়া অনেকে বিদেশ থেকে পারফিউম বাংলাদেশে আমদানী করে থাকে ৷ আপনি তাদের থেকেও পাইকারী দরে ক্রয় করে সেল করতে পারবেন ৷ বিশাল ওয়েবসাইট খুলে ই-কমার্স ব্যবসা করতে হবে তা কিন্তু নয় ৷ আপনি চাইলে ফেসবুকে একটা পেজ খুলে পরিচিতজনদের কাছে সেল করে পার্টটাইম ব্যবসা শুরু করতে পারেন ৷
আবার আপনি যদি মেয়ে হন তবে ই-কমার্স ব্যবসা আপনার জন্য একটা পারফ্যাক্ট পার্টটাইম ব্যবসা ৷ অনলাইনে মেয়েদের আইটেম গুলি খুবই ভালো বিক্রি হচ্ছে ৷ আপনি চাইলে মেয়েদের থ্রিপিস, হিজাব, ইমিটেশন, আন্ডারগার্মেন্ট ইত্যাদি আইটেমগুলি বিক্রি করতে পারেন ৷ চাকরির ফাকে ফাকে যে কেউ চাইলে ফেসবুকে পেজ খুলে পার্টটাইম ব্যবসা শুরু করতে পারেন ৷
ফ্রীল্যান্সিং
এটা ঠিক ব্যবসা না ৷ পার্টটাইম জব বলতে পারেন ৷ ফ্রিল্যান্সিং এ সময়ের তারণ্যের একটি জনপ্রিয় পছন্দ হলো পার্টটাইম জব। সঠিক হিসেব না থাকলেও দেশের প্রায় ১ থে ২ লাখ তরুণ-তরুণী এই পার্টটাইম জবের সাথে জড়িত থেকে অনেক অর্থ কামিয়ে নিচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিং কাজের মধ্যে রয়েছে সফটওয়্যার তৈরি ও উন্নয়ন, ওয়েবসাইট তৈরি ও ডিজাইন, মোবাইল অ্যাপস, গেমস, অ্যাপ্লিকেশন প্ল্যাটফর্ম, ভিওআইপি অ্যাপ্লিকেশন, ডেটা অ্যান্ট্রি, গ্রাফিক ডিজাইন, প্রি-প্রেস, ডিজিটাল ডিজাইন, সাপোর্ট সেবা, কাস্টমাইজড অ্যাপ্লিকেশন তৈরি, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি এর সাথে আরও যুক্ত হতে পারে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ও সোশ্যাল মার্কেটিংয়ের কাজও।
তবে এসব কাজ রাত জেগে করতে হয় ৷ কারন বিদেশে যখন দিন থাকে আমাদের দেশে তখন গভীর রাত ৷ যারা চাকুরিজীবী তারা রাতের বেলায় পার্টটাইম জব করে টাকা আয় করাটা বেশ কঠিন ৷
কফিশপ
পার্টটাইম ব্যবসা হিসাবে এটা মন্দ না ৷ যে কেউ চাইলে এটা শুরু করতে পারেন ৷ চোট্র একটা দোকান নিয়ে সাথে একজন হেল্পার নিলেই হবে ৷ সাধারনত বিকাল বেলাই এসব কফিশপ জমে উঠি ৷ আপনি অফিস শেষ করে এই পার্টটাইম ব্যবসায় সময় দিতে পারেন ৷
মোটামুটি ২ লাখ টাকা দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন ৷ তবে এই ব্যবসা শুরু করতে আপনাকে কিছু প্রশিক্ষনও নিতে হবে ৷ কারন হুট করে প্রফেশনালি কফি বানানো অনেকটা কঠিন হবে ৷
আজকে আপাদত এতটুকুই আলোচনা করলাম ৷ তবে একটি কথা ভালো করে মনে রাখবেন, যারা চাকরি করেন তারাও কিন্তু মানুষ ৷ ৮-৯ ঘন্টা কাজের পর যদি আবার পার্টটাইম ব্যবসা করেন তবে পারসোনাল লাইফে অনেক সমস্যায় পড়বেন ৷ ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স করে চলতে হবে ৷ না হয় মুল চাকরিতেও উন্নতি করতে পারবেন না ৷