এখন প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষতার যুগ চলতেছে৷ মানুষ বাড়ছে সাথে খাদ্য চাহিদাও প্রচুর পরিমানে বেড়েছে ৷ কিন্তু চাষাবাদ যোগ্য জমির পরিমান বাড়েনি ৷
পৃথিবীর
এই ক্রমবর্ধমান খাবারের চাহিদা মেটাতে প্রযুক্তি আমাদের জন্য আবিষ্কার
করেছে হাইব্রিড ফসলের জাত৷ কম জমিতে, কম সময়ে, বৃষ্টি খরা সহ্যকারী ফসল
হলো হাইব্রিড ৷ হাইব্রিডের ফলন অন্য জাতের চেয়ে অনেক ভালো ৷ কৃষকের জন্য
এই ফসল বিনিয়োগবান্ধব ৷ আকারে দেশী ফসলের চাইতে দুই তিন গুন বড় হয়ে থাকে
এই জাত ৷ কম সময়ে এই ফসল উৎপাদন হয় বলে কৃষকরা কয়েকবার জমিতে ফসল বুনতে
পারে ৷
আপনারা
অনেকেই থাই পেপের নাম শুনেছেন অথবা খেয়েও থাকতে পারেন ৷ থাই পেপের ভিতরটা
তরমুজের মতো টকটকে লাল হয়ে থাকে ৷ পাকা পেপে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় কেজি
বিক্রি হয় ৷ ঢাকার সুপারশপ গুলিতে এই পেপে প্রচুর বিক্রি হয় ৷
পেপের চাষ পদ্বতি
এই পেপে দেশী পেপের মতোই চাষ করা যায় ৷ পেপে চাষের জন্য উচু জমি প্রয়জন৷ বর্ষায় পানি জমেনা এমন জমিতে পেপে চাষ করতে হবে ৷ পতিত জমি বা ভিটায় পেপে চাষ করতে পারবেন ৷
চারা উৎপাদন
থাই পেপের চারা করা একটু কঠিন ৷ নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে ৷ প্রথমে বীজ গুলি ১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে ৷ এর পর গামছা বা পাতলা কাপড়ে ছেকে রাখতে হবে ৫-৬ ঘন্টা ৷ যদি পলি প্যাকেট থাকে তাহলে প্রতি প্যাকেটে ১ টি করে বীজ বপন করতে হবে ৷ প্যাকেটের মাটি জৈব সার সহ ভরাট করে রাখতে হবে ৷ বীজ বপন করার পর খড় কুটো দিয়ে বীজ তলা ঢেকে রাখতে হবে ৷ কিছু দিন পর চারা গজাতে শুরু করবে ৷
বীজ কোথায় পাবেন ??
গ্রাম বা মফস্বল শহরগুলিতে অনেকেই হাইব্রিড জাতের বীজ বিক্রি করে ৷ আমাদের দেশে এখনও এই সব হাইব্রিড জাতের বীজ উৎপাদনের যথাযথ প্রযুক্তি না থাকার কারনে ৮০% বীজ বিদেশ থেকে আমদানী করা হয় ৷
অনেক
প্রান্তিক কৃষক অভিযোগ করেন যে তারা হাইব্রিড বীজ বপন করেও সঠিক ফসল
পাচ্ছেননা ৷ এর অন্যতম কারন বীজ ডিলারদের কারসাজি ৷ যেমন এক গ্রাম হাইব্রিড
পেপে বীজের দাম ২০০ টাকা ৷ প্রতি ১০০ গ্রামে যদি ১০-২০ গ্রামও ভেজাল
দেওয়া যায় তাহলে উপরি ২০০০-৩০০০ টাকা লাভ পাওয়া যায় ৷ অর্থাৎ ৫০০০ বীজে
৫০০ বীজ অনায়সে মিশিয়ে দেয় ৷
কিন্তু
একজন প্রান্তিক কৃষকের বুঝার কোন উপায় নেই যে বুঝতে পারবে মিক্স বীজ আছে
কি না ৷ ফলে বছর শেষে আশানুরুপ ফল পাননা এবং অপুরনীয় ক্ষতি তো আছেই ৷ আর
বীজ কোম্পানিরও সুনাম নষ্ট হয়৷
আর
এ জন্যই সরাসরি আমদানীকারক থেকে হাইব্রিড বীজ ক্রয় করতে হয়৷ কিছু
আমদানীকারক তাদের নিজস্ব ফার্মে তিন বছর বীজ গুলি টেষ্ট করেন ৷ এর পর
হাইব্রিড বীজ বিক্রি করেন ৷ তবে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ভেজাল শুরু হয় ডিলার
থেকে গ্রামের খুচরা দোকান গুলি পর্যায়ে ৷ পীরের পানি পড়ার মত ভালো গুলির
প্যাকেটে লোকাল বীজ ভরে বিক্রি করে ৷ উনাদের প্যাকেটের বীজ সারা বছরেও
পুরায়না ৷ কারন মিক্স করে বিক্রি করে ৷
আমাদের
চ্যানেলের পক্ষ থেকে প্রান্তিক কৃষকদের জন্য সকল প্রকার হাইব্রিড বীজের
জন্য সরাসরি আমদানীকারকদের সহযোগীতায় বিক্রি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে
৷
নিচের
লিংকে ক্লিক করে নাম ঠিকানা কমেন্ট করে অথবা ইমেইল করে অথবা ফেসবুকে মেসেজ
করে জানান৷ কুরিয়ারে পাঠালে মিনিমাম ১০০ টাকা চার্জ নেওয়া হবে৷
চারা রোপন
প্যাকেটের চারা আলাদা করে মাটির আইল তৈরি করে রোপন করতে হবে ৷ মাটিতে পরিমান মত জৈব সার ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হবে ৷ এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্ম কর্তার সহযোগীতা নিতে পারেন ৷
মুলধন
হাইব্রীড বীজ খুব দামী ৷ প্রতি গ্রাম প্রায় ২০০ টাকা ৷ কেজি ২০০,০০০ টাকা ৷ প্রতি গ্রামে ৩০-৪০ টা বীজ থাকে ৷ এই বীজ সরাসরি থাইলেন্ড থেকে আমদানী করতে হয় ৷ ৫০ টি গাছ উৎপাদনের জন্য দুই প্যাকেট বীজ যথেষ্ট ৷ দু প্যাকেটের দাম ৪০০ টাকা আর জৈব সার ও রাসয়নিক সার মিলিয়ে আরও ১০০০ টাকা ৷ আপাদত ২০০০ টাকা দিয়ে হাইব্রিড পেপের চাষ শুরু করতে পারবেন ৷
তবে জমি নিজের হওয়াটা বাঞ্চনীয় ৷ ভাড়া জমিতে চাষ করে লাভ করাটা কঠিন ৷
লাভ লোকসান
সঠিক
ভাবে বীজ বপন না করতে পারলে চারা উৎপাদন করা সম্ভব না ৷ তাই খুব যত্ন করে
বীজ তলা তৈরি করতে হবে ৷ এছাড়া পেপের আরেরটি সমস্যা হচ্ছে পুরুষ গাছে ফল
আসেনা ৷ এজন্য পুরা গাছটি মাঝ বরাবর ভেঙ্গে দিলে নতুন কুড়ি গজাবে ৷ সেই
কুড়িতে ফল আসবে ৷