ইন্ডিয়া থেকে পোশাক আমদানি করবেন যেভাবে
Posted on: 2021-06-30 20:33:03
| Posted by: eibbuy.com
বাংলাদেশে ইন্ডিয়ান পোশাকের অনেক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশে ইন্ডিয়ান থ্রি পিসের চাহিদা এবং তারপর ইন্ডিয়ান শাড়ির চাহিদা উল্লেখ না করলেই নয়। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা নিজেরাই ইন্ডিয়া থেকে পোশাক আমদানি করতে চায়। বাংলাদেশে ইন্ডিয়ান থ্রি পিস, শাড়ি বা অন্যান্য পোশাকের পাইকারি বাজার আছে। কিন্তু এগুলোর বেশিরভাগই আসল ইন্ডিয়ান নয়, কপি অর্থাৎ বাংলাদেশিই কিন্তু দেখতে পুরোপুরি ইন্ডিয়ান পন্যের মতো। এর কারনে ব্যবসায়ীরা নিজেরাই ইন্ডিয়া গিয়ে অথবা সেলার থেকে সরাসরি কন্টাক্ট করে থ্রি পিস, শাড়ি বা অন্যান্য পোশাক এপারে নিয়ে আসে। বিভিন্ন উপায়ে ইন্ডিয়া থেকে পোশাক আমদানি করতে পারবেন। আজ আমরা আলোচনা করব কিভাবে আপনি ইন্ডিয়া থেকে পোশাক এনে ব্যবসা করবেন…
যেসব উপায়ে ইন্ডিয়া থেকে পোশাক আনা যায়…
✑ইন্ডিয়া ভ্রমনে গিয়ে আসার সময় ব্যাগেজে করে পন্য নিয়ে আসা যায়। যদিও এভাবে ব্যবসা না করাটাই উত্তম।
✑ডোর টু ডোর সার্ভিসে পন্য আনা যায়। ইন্ডিয়া থেকে পন্য আনার জন্য ডোর টু ডোর সিস্টেমটাই ভাল।
✑এলসি করে বেনাপোল, এয়ারপোর্ট বা সমুদ্র বন্দরে পন্য নিয়ে আসা যায়।
এবার বিস্তারিত বলি। যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তারা ডোর টু ডোর বা নরমাল পদ্ধতিতে পোশাক আনে না। কারন এগুলোর খরচ তুলনামুলক বেশি। তারা আরও কয়েকজন ব্যবসায়ীসহ টুরিস্ট ভিসায় একসাথে ইন্ডিয়া যায়। আর যে কোনো দেশে কেউ গেলে আসার সময় কিছু পন্য কিনে নিয়ে আসা যায় যেগুলোর জন্য কোনো প্রকার ট্যাক্স বা অন্য কোনো ফি দিতে হয় না। এই সুবিধা নিয়ে ব্যবসায়ীরা ইন্ডিয়া থেকে ব্যবসার জন্য পোশাক নিয়ে আসেন। আবার আপনি চাইলে ইচ্ছেমত পন্য আনতে পারবেন না। সকল টুরিস্টদের জন্যই পন্য আনার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানতে হয়। যেমন আপনি ২০ কেজি বা ৩০ কেজির বেশি পন্য আনতে পারবেন না। আবার একই পন্য তিনটির বেশি আনতে পারবেন না। এই যেমন ধরেন আপনি একই ধরনের শাড়ি চারটি কিনলেন। তখন এগুলো আনার সময় কাস্টমের লোকেরা ঝামেলা করবে। তারা একটি রেখেও দিতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা তাদের পন্য ভাগাভাগি করে নেয়। পরে দেশে এসে আবার যার যার পন্য যে যে নিয়ে নেয়। যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তারাই এভাবে পন্য আনে। কিন্তু প্রফেশনাল ভাবে ব্যবসার জন্য এভাবে পন্য আনা উচিত নয়।
এবার আসি ডোর টু ডোর সার্ভিস নিয়ে…
ইন্ডিয়া বা চায়না থেকে পন্য আনার জন্য ডোর টু ডোর সার্ভিস জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। প্রথমে জেনে নেই, ডোর টু ডোর সার্ভিস কি? ডোর টু ডোর সার্ভিস হল, আপনি কোনো পন্য কোনো এজেন্সির কাছে দিবেন। তারা তাদের নিজস্ব লাইসেন্স দিয়ে নিজস্ব ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার দিয়ে পন্য এনে দিবে। আপনি ইন্ডিয়াতে অনেক ডোর টু ডোর সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান পাবেন যারা আপনার পন্য দেশে এনে দিবে। তারা মূলত কেজিপ্রতি চার্জ নেয়। এভাবে ইন্ডিয়া থেকে পোশাক আনার জন্য কোনো প্রকার লাইসেন্স বা আলাদা কোনো ফি দিতে হবে না। এর জন্য কোনো এলসি বা আইআরসি করা লাগেনা। ডোর টু ডোর সার্ভিস মূলত দুই ধরনের হয়। একটি হল এয়ার শিপমেন্ট অপরটি হল সি শিপমেন্ট। এয়ার শিপমেন্ট করলে কেজিপ্রতি ৪৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত লাগে। অপরদিকে সি শিপমেন্টে ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা লাগে। এগুলো অবশ্যই কেজিপ্রতি হিসেবে হয়। এয়ার শিপমেন্ট এর শুবিধা হল ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে পন্য পাওয়া যায়। আর সি শিপমেন্টে ৬০ থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত লাগে।
তবে ডোর টু ডোর সার্ভিসের কিছু সমস্যাও আছে…
মনে করুন আপনি ডোর টু ডোর সার্ভিসে কিছু থ্রি পিস পাঠিয়েছেন। ঐ ডোর টু ডোর এজেন্সি কিন্তু আপনার পন্যের সাথে আরও আন্যান্য পন্য পাঠাবে। সেগুলোতে যদি কোনো অবৈধ পন্য থাকে তাহলে সেগুলো যখন কাস্টমে আটকে যাবে যাথে আপনার পন্যও আটকে যাবে। এতে আপনার পন্য ফেরত নাও পেতে পারেন। তাই ডোর টু ডোর একটু ঝুকিপূর্ণ।
আর আরেকটি উপায় হল নিজে এয়ারে অথবা শিপে করে নিয়ে আসা। তবে এর জন্য আপনাকে অনেক কাগজপত্র করতে হবে। লাইসেন্স করতে হবে। শুধুমাত্র ইমপোর্টার লাইসেন্স করতেই এখন খরচ হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। তারপর আরও অনেক ঝামেলা তো আছেই। যেমন এলসি, আইআরসি করা, ইন্সুরেন্স করা ইত্যাদি। যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তারা এভাবে সাধারনত পোশাক আনে না। তারপরও যদি কেউ এভাবে আনতে চান, এটা নিয়ে আমাদের একটি আর্টিকেলে বিস্তারিত দেওয়া আছে। পড়ে আসতে পারেন।
একটি বিষয় উল্লেখ করতে হয়। বর্তমানে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য ইন্ডিয়া থেকে বৈধ উপায়ে পোশাক এনে ব্যবসা করা যায়না। কারন তারা অবৈধ উপায়ে পোশাক নিয়ে আসে। ফলে তাদের কোনো প্রকার ট্যাক্স দিতে হয় না। শেষে এমন দেখা যায় যে আপনি কোনো থ্রি পিস আনতে যে খরচ হয় তার চেয়ে কমদামে তারা বিক্রিই করছে। আবার কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশি পোশাক ইন্ডিয়ান বলে বিক্রি করে। তার কারনে সত্যিকারের ইন্ডিয়ান পোশাক নিয়ে ব্যবসা করতে গেলে নানা ধরনের প্রতিকুলতার শিকার হতে হয়। তাই ইন্ডিয়া থেকে পোশাক এনে ব্যবসা করতে গেলে ভেবে চিন্তে করবেন।
আপনার যদি ইন্ডিয়া থেকে পোশাক আমদানি করতে C&F এর প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
আজকের আলোচনা নিয়ে যদি কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে অথবা C&F এর দরকার পড়ে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ধন্যবাদ।