চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের নভেম্বর মাসে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে রেকর্ড পরিমাণ কনটেইনার ওঠানামা হয়েছে । সংখ্যায় এই পরিমাণ দুই লাখ ৬৫ হাজার
একক । এই পরিমাণ বন্দরের ইতিহাসে কনটেইনার ওঠানামায় সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়েছে। এর আগে চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে দুই লাখ ৫৯ হাজার একক
কনটেইনার ওঠানামার রেকর্ড করেছিল চট্টগ্রাম বন্দর। আর গত মার্চ মাসে রেকর্ড ছিল দুই লাখ ৫৪ হাজার একক।
কনটেইনার
ওঠানামার বিদ্যমান যন্ত্রপাতি ও টার্মিনাল-জেটি দিয়েই এর আগে রেকর্ড গড়েছিল
বন্দর কর্তৃপক্ষ। আর নভেম্বর মাসে রেকর্ড গড়ার কারণ হচ্ছে কনটেইনার
ওঠানামার আধুনিক নতুন ছয়টি যন্ত্র ‘কি গ্যান্ট্রি ক্রেন’ যুক্ত হওয়া।
চট্টগ্রাম
বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (পরিবহন) গোলাম সারোয়ার কালের কণ্ঠকে বলেন,
‘নতুন ছয়টি কি গ্যান্ট্রি ক্রেন যুক্ত করে বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার
টার্মিনাল
(এনসিটি) সচল হওয়ায় কম সময়ে বেশি কনটেইনার ওঠানামা সম্ভব হয়েছে। এতেই কনটেইনার ওঠানামায় নতুন রেকর্ড গড়েছে। এতে বন্দরের সক্ষমতা বেড়েছে;
আমরা প্রবৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই।’
জানা গেছে,
দীর্ঘদিন ধরে নতুন জেটি ও টার্মিনাল চালু না হওয়া; কনটেইনার ও পণ্য
ওঠানামায় নতুন যন্ত্র যোগ না হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি
সামাল
দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। জেটি খালি না থাকায় জাহাজগুলোকে পণ্য নিয়ে বহির্নোঙরে বাড়তি সময় অলস বসে থাকতে হতো। এতে প্রতিদিন জাহাজের
আকারভেদে আট থেকে ১২ হাজার ইউএস ডলার ক্ষতি গুনতে হতো ব্যবসায়ীদের। এ নিয়ে বন্দর ব্যবহারকারীদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়লেও তা আশ্বাসের
মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
জানা গেছে, চলতি ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে দুই লাখ ৪৩ হাজার একক কনটেইনার ওঠানামা হয়। এরপর ফেব্রুয়ারিতে তা কমে দুই লাখ ২১ হাজার
এককে উন্নীত হয়। সর্বশেষ মার্চ মাসে দুই লাখ ৫৪ হাজার একক ওঠানামা করে আগের সব রেকর্ড ছাড়ায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরপর জুলাই মাসে দুই লাখ
৫৯ হাজার একক কনটেইনার ওঠানামা করে নতুন রেকর্ড গড়ে। নভেম্বর মাসে সেই রেকর্ডও ছাড়ায়।
জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল, চিটাগাংয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট গিয়াস উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন,
‘পণ্য ওঠানামার ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি সামাল দেওয়া ছিল চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
নির্ধারিত সময়ে গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ অন্য যন্ত্রপাতি যুক্ত করা, অচল গ্যান্ট্রি ক্রেন সচল করা,
নতুন টার্মিনাল নির্মাণ দ্রুত করার অনেক উদ্যোগ বর্তমান চেয়ারম্যান নেওয়ায় ব্যবহারকারীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। এখন সেটি ধরে রাখতে হবে।’