মোজারেলা চিজ বর্তমানে একটি নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার ৷ দিন দিন মানুষের ফাস্ট ফুডের প্রতি আগ্রহ বাড়তেছে আর চাহিদা বাড়তেছে মোজারেলা চিজের প্রতি ৷ বর্গার, পিজ্জা সহ প্রায় অধিকাংশ ফার্স্ট ফুডে লাগে মোজারেলা চিজ ৷ এখন মানুষ বাসা বাড়িতে ও ব্যবহার করতেছে মোজারেলা চিজ ৷
দেশে প্রতিবছর প্রায় 20 শতাংশ হারে মোজারেলা চিজের বাজার বাড়ছে। অথচ, এখানে নতুন উদ্যক্তা, বিনিয়োগ সবই সংকট। অনেকেই জানেন না এই মোজারেলা চিজ কি কাজে লাগে বা এটার বাজার কোথায় ৷ আগে এই মোজারেলা চিজ বিদেশ থেকে আমদানী করা হতো ৷ কিন্তু দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বাড়াতে এখন দেশেই উৎপাদন করা হচ্ছে এই মোজারেলা চিজ ৷ বাংলাদেশের ঠাকুরগায়ে গড়ে উঠছে মোজারেলা চিজ তৈরির কারখানা ৷ তবে বর্তমানে তাদের প্রতিদন্ডি নেই বলে এসব কারখানা গুলোর মনোপলি মনোভাব খুব বেড়েছে ৷ তারা একক ভাবে ব্যবসা করে অনেক ভালো আয় করতেছে ৷
সম্ভাবনার বিজনেস হিসাবে এখানে কেউ আসতে পারেন।বিশেষ করে তরুন উদ্যক্তাগন এসব সেক্টরে এসে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বর্তমান বাজারে যে চাহিদা আছে, তাতে প্রতি মাসে 40 টন চিজের প্রয়োজন। যে কারখানা রয়েছে তাতে প্রয়োজন মেটাতে হিমসিম খাচ্চে ৷ এজন্যে প্রয়োজন আরো 25-30 টা কারখানা ৷ তবে যত্রতত্র এসব কারখানা দেওয়া যাবেনা যেসব যায়গায় জায়গায় গরুর দুধ সহজলভ্য সেসব স্থানে এই কারখানা দিতে পারেন।
10 কেজি দুধে এক কেজি চিজ হয়। লাভাংশ 20-30 টাকা প্রতি কেজি তে থাকে। নিজের জায়গা ও ঘর থাকলে, ৪০-৫০ হাজার টাকা প্রাথমিক বিনিয়োগ করে এই ব্যবসা শুরু করা যায়। খুব বাজে পরিস্হিতি না হলে, দেড় বছরেই রিটার্ন তোলা সম্ভব। পাশাপাশি, হাজার লোকের কর্মসংস্হান হবে,এ খাতে নতুন বিনিয়োগে।
মাত্র তিনটি উপাদানে তৈরি করা হয় মজরেলা চিজ / mozzarella cheese recipe
আমাদের দেশে এখন পিজ্জা , পাস্তা, স্যান্ডউইচ থেকে শুরু করে ফাস্টফুড, বিদেশি খাবার অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেকে এখন ঘরেই বানিয়ে ফেলেন মজাদার এই আইটেমগুলো।
এগুলোতে ব্যবহার হয় প্রচুর পরিমাণ মজেরেলা চিজ। যা খাবারকে করে অনেক সুস্বাদু। কিন্তু, এই মজেরলা চিজ এর দাম অনেক বেশি।
তবে আপনি চাইলে ঘরেই অনেক অল্প সময়ে মাত্র তিনটি উপাদান দিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন পারফেক্ট মজেরলা চিজ।
উপাদান -
১।দুধের ছানা,
২। ঘি
৩। লবণ
চিজ (Cheese)বানানোর প্রক্রিয়া :
১. ছানা, ঘি এবং লবণ সব একসাথে নিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে যেন কোন দানা ভাব না থাকে।
সব একসাথে ব্লেন্ডারে দিতে হবে। ব্লেন্ডার করার পর। কোন দানা ভাব থাকা যাবে না।
২. এবার মিশ্রণটি একটি সিরামিকের বাটিতে চেপে চেপে বসাতে হবে।
৩. উপরে যদি বাড়তি ঘি ভেসে উঠে তবে তা টিস্যু পেপার দিয়ে ভালো ভাবে মুছে নিতে হবে।
৪. এবার প্লাস্টিক রেপিং দিয়ে ভালো ভাবে ঢেকে ফ্রিজে রাখতে হবে ২ ঘণ্টা।
৫. ফ্রিজ থেকে বের করে একটি ছুরি দিয়ে কিনারগুলো সাবধানে খুঁচিয়ে তুলতে হবে।
হয়ে গেল পারফেক্ট মজেরলা চিজ। এবার গ্রেড করে যে কোন খাবারে ব্যবহার করতে পারেন ঘরে তৈরি মজাদার চিজ।
প্রয়োজনীয় টিপস(Important Tips)-
১. সিরামিক বা প্লাস্টিকের বাটিই ব্যবহার করতে হবে। অন্য কোন বাটি হলে চলবে না।
২.খেয়াল রাখতে হবে মিশ্রণে যাতে কোন দানা না থাকে। একটু ধৈর্য ধরে সময় নিয়ে ব্লেন্ড করতে হবে।
৩.প্লাস্টিক রেপিং না থাকলে ভারী কোন ঢাকনা দিয়েও ঢাকা যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন বাতাস ঢুকতে না পারে।
তাই, বেকার বসে না থেকে সামাজিক ব্যাবসার আদলে পুজি গড়ে, একটা বেইজলাইন স্টাডি করে, কারখানা দিন,ও নিজেরা বিপনন করেন। বেকারত্ব ঘুচান, স্বাবলম্বি হউন।
মাখনের চেয়ে চিজ কি বেশি স্বাস্থ্যকর?
আগে মাখন ও চিজের পুষ্টিগুণের একটা তুলনামূলক আলোচনা সেরে নেওয়া যাক।
পুষ্টিগত মূল্য (প্রতি ১০০ গ্রাম পিছু)
এনার্জি
মাখন>> ৭১৭ ক্যালোরি
চিজ >> ৩৪৯ ক্যালোরি
প্রোটিন
মাখন>> ০.৮ গ্রাম
চিজ >> ১৮ গ্রাম
ফ্যাট
মাখন>> ৮১ গ্রাম (যার মধ্যে ৫১ গ্রাম স্যাচুরেটেড ও ৩.৩ গ্রাম ট্র্যান্স ফ্যাট)
চিজ >> ৩২ গ্রাম (যার মধ্যে ১৮ গ্রাম স্যাচুরেটেড ও ১.১ গ্রাম ট্র্যান্স ফ্যাট)
ভিটামিন
মাখন>> ২৪৯৯ ভিটামিন-এ ছাড়াও এতে থাকে ভিটামিন কে এবং ই, নিয়াসিন, রিবোফ্ল্যাভিন, প্যান্টাথেনিক অ্যাসিড ও ফোলেট।
চিজ >> ৯৪৫ আই ইউ ভিটামিন-এ ছাড়াও এতে থাকে সামান্য পরিমানে ভিটামিন কে, ই, বি৬, বি১২ এবং রিবোফ্ল্যাভিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, ফোলেট ও বিটাইন।
মিনারেল
মাখন>> ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফসফরাসের সমৃদ্ধ উৎস। এ ছাড়াও মাখনে সোডিয়াম, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক ও ফ্লোরাইড থাকে।
চিজ >> ১০৪৫ মিগ্রা ক্যালসিয়াম ছাড়াও ফসফরাস, সোডিয়াম, সেলেনিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক ও পটাসিয়াম।
ব্যাখ্যা
দেখা যাচ্ছে, ভিটামিন-এ এবং ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফসফরাসের সমৃদ্ধ উৎস হওয়া সত্ত্বেও মাখনের মধ্যে পুষ্টির বিষয়টি পুরোটাই ফ্যাটকে ঘিরে। আর এতে কিছুটা ময়েশ্চার থাকে।
অন্যদিকে চিজের ব্যাপারটা সামান্য আলাদা। তাতে ফ্যাট অবশ্যই আছে, তবে সঙ্গে বাড়তি পুষ্টি উপাদান হিসেবে আছে অনেকটা প্রোটিন এবং ভিটামিন-এ ও অন্যান্য মিনারেলও।
চূড়ান্ত রায়
ছোটদের দৈনন্দিন প্রোটিন চাহিদা তাদের নিত্যদিনের খাবার থেকে মিলে যায়। তাই ছোটদের চিজ খাওয়ার তেমন প্রয়োজন পড়ে না। তাছাড়া চিজের তুলনায় স্বাদের বিচারে মাখন খেতে ভাল।
সেজন্য ছোটরা চিজের তুলনায় মাখন খেতেই বেশি পছন্দ করে। কিন্তু ৪৫ বছরের পর থেকে স্বাস্থ্যের কারণে ফ্যাট খাওয়ার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
মাখন যেহেতু স্যাচুরেটেড ফ্যাট তাই একটা বয়সের পরে মাখনে রাশ টানা জরুরি। তবে চিজ সেক্ষেত্রে মাখনের ভাল বিকল্প। ভিটামিন, প্রোটিন ও মিনারেলের সমৃদ্ধ উৎস চিজ আমাদের হাড় ও দাঁতকে শক্ত করে।
এর জিঙ্ক ও বায়োটিন টিস্যুর উন্নতি ও মেরামতিতে সাহায্য করে। চিজ ভাল রাখে ত্বক, চুল ও নখকেও। মাখন তাৎক্ষণিক শক্তি উৎপাদনে সক্ষম এবং থাইরয়েড ও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
তবে ওই বাড়তি স্যাচুরেটেড ফ্যাটই মাখনকে স্বাস্থ্যগতভাবে পিছিয়ে রাখবে। তাই মাখনের চেয়ে চিজ অবশ্যই স্বাস্থ্যকর, বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে।
কোথায় থেকে ক্রয় করবেন চিজঃ নিছে আমাদের ওয়েবসাইটের লিঙ্ক দেয়া হলো, এখানে আপনি চিজ ক্রয় বিক্রয় করতে পারেন।