eibbuy.com
মুল পাতা

হিন্দু ধর্মের মনু ও ইহুদি-খ্রিষ্ট-ইসলাম ধর্মের নূহ কি একই ব্যক্তি?


Posted on: 2021-05-15 23:01:16 | Posted by: বিসমিল্লাহ্ ভ্যারাইটিজ স্টোর

মনু কে ? মনু অর্থাৎ 'মানব জাতির পিতা।' সনাতন ধর্মে সময়কাল কে চার যুগে ভাগ করা হয়েছে। সেই চার যুগ হলো - "সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর এবং কলি। ৭১ চতুর্যুগে এক মন্বান্তর হয় (মন্বান্তর কথার অর্থ মনুর অন্তর) এবং ১৪ মন্বান্তরে এক কল্প হয়। এই এক কল্প সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার একদিন।" অর্থাৎ এক কল্পে ১৪ জন মনুর আবির্ভাব ঘটে। বর্তমানে 'শ্বেতবরাহ কল্প' চলছে, আর এই শ্বেতবরাহ কল্পের ১৪ জন মনু হলেন - "স্বয়ম্ভু, স্বারোচিশ, উত্তমী, তামস, ঋভু, চক্ষুস, বৈবস্বত, সাবর্ণি, ব্রহ্মসাবর্ণি, দক্ষসাবর্ণি, ধর্মসাবর্ণি, রুদ্রসাবর্ণি, বরুণসাবর্ণি এবং অগ্নিসাবর্ণি"(বিভিন্ন পুরাণে এদের ভিন্ন নাম)। বর্তমানে আমরা "বৈবস্বত মন্বান্তরের ২৮ তম কলিযুগে" বাস করছি। এই বৈবস্বত মন্বান্তরের আরম্ভের গল্প এখানে লিখছি। ব্রহ্ম পুরাণ মতে সূর্যদেবের দুজন পত্নি ছিল, যাদের নাম 'সংজ্ঞা এবং স্বর্ণা (ছায়া)'। এই দুই পত্নি থেকে সূর্যদেবের সাত পুত্র এবং চার কন্যা হয়, যাদের মধ্যে সবথেকে বড় ছিলেন 'সত্যব্রত।' চক্ষুস মন্বান্তরের একদম শেষদিকে সূর্যপুত্র সত্যব্রতকে পৃথিবীর অধিপতি নিযুক্ত করা হয়। এমন সময়ে সমগ্ৰ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ভয়ানক ভাবে কেঁপে উঠলো। সকল দেবগণ ভয় পেয়ে পরমপিতা ব্রহ্মার কাছে জানতে চাইলেন যে সমগ্ৰ ব্রহ্মান্ড এভাবে কেন কেঁপে উঠলো। ব্রক্ষ্মা তাদেরকে বললেন "এই কম্পন ভগবান বিষ্ণু দ্বারা উৎপন্ন", সেই কারনে ব্রহ্মা সকল কে নিয়ে ভগবান বিষ্ণুর সরণাপন্ন হলেন। ভগবান বিষ্ণু তাদের বললেন "প্রলয়কাল আসন্ন, আমি এই কম্পনের মাধ্যমে তারই সংকেত দিয়েছি। সকল দেবগণ নিজ নিজ লোকে প্রস্থান করে সেই সময়ের অপেক্ষা করো।" ভগবান বিষ্ণুর আদেশে দেবগণ ফিরে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন। তখন 'হয়গ্ৰীব্' নামে এক অসুরও প্রলয়ের সেই সংকেত বুঝতে পারে তাই সে অমরত্ব লাভের আশায় ব্রহ্মার ধ্যানমগ্ন অবস্থায় থাকা কালীন বেদ চুরি করে সমুদ্রে লুকিয়ে পরে। ভগবান বিষ্ণু সবকিছু দেখছিলেন। তিনি ছোট্টো মাছ রূপে নদীতে অবতীর্ণ হলেন। সেই সময় 'রাজা সত্যব্রত' সূর্যদেবকে অর্ঘ দান করেছিলেন, তখন তার হাতে এক ছোট্ট মাছ উঠলো। তিনি সেই মাছটি আবার জলে ছাড়তে যেতেই সেই মাছটি মানুষের ভাষায় প্রার্থনা করলো, " আমাকে জলে ছাড়বেন না, ছাড়লে বড়ো মাছ আমাকে গিলে খাবে। আমি আপনার শরনাপন্ন।" রাজা সত্যব্রত তখন মাছটিকে কমন্ডুলে ভরে নিজের প্রাসাদে নিয়ে একটি ছোট পাত্রে রেখে দিলেন। মাছটিকে রেখে পেছন ঘুরতেই মাছটি রাজাকে ডেকে উঠলো, রাজা ঘুরে দেখলেন মাছটি নিমেষেই বড়ো হয়ে গেছে। তখন রাজা তাকে একটি বড়ো পাত্রে রাখলেন, কিন্তু আবার তার আকার এক নিমেষে বেড়ে গেলো। এইভাবে মাছের আকার বাড়তে থাকে এবং রাজা পাত্র পরিবর্তন করতে থাকেন, কিন্তু শেষে মাছটি এতই বড়ো হয়ে যায় যে রাজা তাকে প্রাসাদের সরোবরে রাখতে বাধ্য হলেন। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই সেই সরোবরও তার জন্য ছোট হয়ে গেলো তখন রাজা বাধ্য হয়ে তাকে সমুদ্রে নিয়ে যান। কিন্তু সমুদ্রে রাখতেই সেই মাছ বিশাল সমুদ্রের আকার ধারণ করে। রাজা তখন হাতজোড় করে বলেন " আপনি কোন সাধারণ মাছ হতে পারেন না, নিঃসন্দেহে আপনি কোন দৈবশক্তি, কৃপা করে বাস্তব রূপে দর্শন দিন।" তখন সেই মাছ "চতুর্ভুজ অর্ধমানব অর্ধমৎস" রূপে অবতীর্ণ হলো, রাজা সত্যব্রত বুঝতে পারলেন এই মৎস স্বয়ং "পরমেশ্বর ভগবান বিষ্ণু।" ভগবান বিষ্ণু রাজাকে বললেন "মন দিয়ে শোন, আজ থেকে ঠিক সাতদিন পর প্রলয় আরম্ভ হবে, তার ফলে সম্পুর্ণ পৃথিবী জলমগ্ন হবে। তুমি সপ্তর্ষি, বিভিন্ন প্রকার ঔষধি দ্রব্য এবং প্রত্যেক প্রাণীর এক এক জোড়া নিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু জায়গা হিমালয় শিখরে অপেক্ষা করবে। প্রলয় জল সেই উচ্চতা ছুয়ে গেলে আমার প্রেরনায় এক বিরাট নৌকা তোমার কাছে আসবে, তখন তুমি সকলকে নিয়ে সৈই নৌকা আরোহন করবে। আমি সেই নৌকা সহ তোমাদের নিয়ে প্রলয় জলে বিচরণ করতে থাকবো।" ভগবান বিষ্ণু এতটা বলে অন্তর্ধ্যান করলেন, এবং সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে থাকা হয়গ্ৰীব অসুরকে বধ করে ব্রহ্মাকে বেদ ফিরিয়ে দিলেন। ঠিক সাতদিন পর ভগবান বিষ্ণুর আদেশে প্রলয় আরম্ভ হলো। রাজা সত্যব্রত ভগবানের কথা মতো তৈরি হয়ে নৌকায় আরোহণ করলেন। প্রলয়ের প্রবল জলোচ্ছ্বাসে নৌকা ডুবে যাওয়ার উপক্রম হল ভগবান বিষ্ণু "শৃঙ্গ বিশিষ্ট বিশাল সোনালী মৎস্য" রূপে আবির্ভূত হলেন। তখন 'নাগরাজ বাসুকি' কে নৌকার এবং শিং এর সাথে বেঁধে দেওয়া হলো। প্রলয় থামা পর্যন্ত ভগবান তাদের নিয়ে প্রলয় জলে বিচরণ করতে থাকলেন। সেই সময় ভগবান বিষ্ণু তাদের বিভিন্ন জ্ঞান প্রদান করেছিলেন। প্রলয় থামলে রাজা সত্যব্রত নতুন জগতের প্রথম মানব হলেন। তার নাম হলো 'বৈবস্বত মনু।' বৈবস্বত অর্থাৎ 'বিবস্বানের (সূর্যদেব) পুত্র', আর মনু অর্থাৎ 'মানব জাতির পিতা।' এই বৈবস্বত মন্বান্তরের ২৮ তম কলিযুগে বর্তমানে আমরা বাস করছি। পুরাণ মতে যুগ, মন্বান্তর এবং কল্পের বিবরন। বৈবস্বত মনুর পরিচয় এবং মৎস্য অবতার কথা। According to the Puranas, the details of Yuga, Manvantar and Kalpa. The identity of Vaibaswat Manu and the incarnation of Matsya. নূহ সম্পর্কে আমি বিশেষ কিছু জানি না। যতটা জানতে পারলাম ইন্টারনেট থেকে সেই লিংক টা দিলাম।


Leave a Comment:

Login to comment

2017 © 2024 eibbuy. All Rights Reserved.
Developed By Fluttertune react js next js